Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডিসি ইব্রাহিমকে শাস্তি পেতে হবে

একই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ডিএমপি ওয়ারী জোনের ডিসি মো. ইব্রাহিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডিসির সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানানো যাবে। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে শ্রমিক ইউনিয়ন আয়োজিত ১৫ আগস্ট শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে তাকে (ডিসি ইব্রাহিম) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ওয়ারী জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়। ২০১৮ সালের সিভিল সার্ভিস আইন অনুযায়ী, সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশ কর্মকর্তাকে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ওয়ারী জোনের উপকমিশনারের সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। জানা যায়, গত দুই মাস আগে ডিসি ইব্রাহিম ডিএমপির লালবাগ বিভাগ থেকে বদলি হয়ে ওয়ারী বিভাগে যোগদান করেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবী এ কে এম শামসুল হক খানের পরিবারকে নবাবপুরের ২২১ নম্বরে ৪ কাঠার বাড়িটি দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই বাড়িতে থাকতেন শহীদ বুদ্ধিজীবী এ কে এম শামসুল হক খানের ভাই কে এম শহীদুল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যরা। ডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান লালবাগ জোনে থাকাবস্থায় ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তার অফিসের ১০০ গজের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীর পরিবারের ওই বাড়িতে স্থানীয় প্রভাবশালী জাবেদ ও আবেদ গংরা ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে লুটপাট ও তাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালায়। বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে রাতারাতি আগের ভবন ভেঙে সেখানে দেয়াল নির্মাণ করে নতুন করে ভবন গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। অভিযোগ ওঠে, পুরো ঘটনায় পুলিশ নীরব ছিল। আতঙ্কিত পরিবারটি পরে থানায় মামলা করতে গেলে বংশাল থানা পুলিশ চুরির মামলার বাইরে অন্য মামলা রেকর্ড করতে রাজি হয়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিযোগ, তিন কোটি টাকার বিনিময়ে পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে এ কাজ করা হয়েছে। পরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি নিরুপায় হয়ে প্রথমে সংবাদ সম্মেলন ও পরে পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সঙ্গে দেখা করে সব খুলে বললে পুরো ঘটনায় নতুন মোড় নেয়। আইজিপি বিষয়টি তদন্তের জন্য ঢাকা মেেেট্্রাপলিটন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশনা দেন। পরে ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত করে ডিসি ইব্রাহিম খানের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে প্রতিবেদন দেয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ডিসি ইব্রাহিম খানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, তদন্তে অসহযোগিতা ও দায়িত্বে অবহেলার তথ্য উঠে আসে। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের ২৩ মে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-১) আমিনুল ইসলাম তাকে একটি চিঠি দিয়ে এসব অপরাধের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চান।

চিঠিতে বলা হয়, ভুক্তভোগীর এসব অভিযোগ শুনেও ডিসি ইব্রাহিম বংশাল থানার ওসি ব্যবস্থা নিতে কোনো নির্দেশনা দেননি বা নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। পুলিশ সদর দফতরের ডিসি যে তদারকি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, সেটি তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করে জমা দিয়ে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করেছেন। এ ছাড়া তিনি দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য ডিসি ইব্রাহিমকে ১০ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। তার ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে পুলিশ সদর দফতর। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

পুলিশের কয়েকটি সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলে ভূমিদস্যুদের সহযোগিতার অভিযোগে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি ইব্রাহিম খান সাময়িক বরখাস্তের পর বংশাল থানার তৎকালীন ওসি শাহিদুর রহমানও বরখাস্ত হতে পারেন। শাহিদুর রহমান বর্তমানে ডিএমপির কোতোয়ালি থানার ওসির দায়িত্বে রয়েছেন।



 

Show all comments
  • Hanif Akondo ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৩ এএম says : 0
    সম্মান আল্লাহর দেয়া প্রদত্ত নেয়ামত। সেটা কখন, কিভাবে চলে যাবে আল্লাহই ভাল জানেন! আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁহার দ্বীনের সঠিক হেদায়েত দান করুক। আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Rafin Aljabir ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৪ এএম says : 0
    হেডিং শুধু ডিসি নয়। শাস্তি শুধু ডিসির নয়, উভয়ের সমান হওয়া উচিত। নয়তো সরল মনে ক্ষমা করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Noyona Karim ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৪ এএম says : 0
    ওয়ারী জোনের উপকমিশনারের সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাঁকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানানো যাবে।’
    Total Reply(0) Reply
  • Hanif Akondo ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৪ এএম says : 0
    এ জেলাপ্রশাসক কে প্রশাসনিক ভাবে এমন শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে যেন, ভবিষ্যতে দেশের কোন ইউএনও, ডিসি অন্য কোন কর্মকর্তা এ ধরনের অনৈতিক কাজ করতে উৎসাহ না পায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Shanto Hossen ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৫ এএম says : 0
    যে কোন অভিযোগ হলেই বরখাস্ত করা উচিৎ,,,, তদন্ত করে যদি নির্দোষ প্রমানিত হয়,,,,,তখন স্বপদে বহাল থাকবে,,,,,৷
    Total Reply(0) Reply
  • Safat Khan ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৫ এএম says : 0
    সঠিক তদন্তের দাবি যানাচ্ছি, যেন অপরাধি ছাড় না পায়
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam Saifu Chandpur ২৯ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৬ এএম says : 0
    আপনারা কি অপরাধীকে শাস্তি দিতে জানেন, যদি জানতেন তাহলে, শেয়ার বাজার, হলমার্ক,ব্যাংক লুট, সাগর রুনী, রানা প্লাজার ঘটনা, নারী ধর্ষন, খুন লুট এমন ঘটনা অহরহ হতোনা, ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার না করলে কিয়ামতের দিন ধরা খাবেন সেইদিন কেউ সাহায্যকারী হবেনা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডিসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ