Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাবাকে ছেলের খুনি সাজায় সিআইডি

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ৮:১৮ এএম

ছেলে হত্যার আসামিদের মুক্তি দিতে নিহতের বাবাকে পিটিয়ে হত্যাকারী সাজানোর অভিযোগ উঠেছে শেরপুর সিআইডি পুলিশের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, মামলার স্বাক্ষীদেরও পিটিয়ে উল্টো স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ছেলে হত্যার বিচার এবং ষড়যন্ত্রের শিকার নির্দোষ স্বামীর মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও সিআইডি প্রধানের হস্তক্ষেপ চেয়েছে একটি পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয়। শেরপুর জেলার নকলা থানার বাছুর আলগা উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমার স্বামী লাল মিয়ার জমিজমা নিয়ে বিরোধ। স¤প্রতি একটি বিরোধের জেরে লাল মিয়া আদালতে ১০৭ ধারায় মামলা করেন। এতে ক্ষিপ্ত প্রতিবেশীরা হয়ে ওঠেন। তারা বলে ‘যখন আসামি হয়েছি তখন ওদের একটাকে হত্যা করেই আসামি হবো। এর কিছুদিন পর গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার নাবালক ছেলে নয়ন (১২) কে আসামিরা হত্যা করে পাশের একটি ডুমর গাছের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এসময় তাদের শব্দ শুনে আমার স্বামী টর্চলাইট জালাতেই আসামিরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় নকলা থানায় মুনছর আলী, রুস্তম আলী, জরিপ উদ্দিন, কালা মিয়াসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা একটি হত্যা মামলা করা হয়।

মামলায় চার আসামীকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু হঠাৎ করে আসামী ঘনিষ্ট আত্বীয় শেরপুর জেলা সিআইডির এসআই তরিকুল ইসলাম মামলাটি সিআইডিতে নিয়ে নিজেই তদন্তের নামে চরম অনিয়ম শুরু করেন। এই নিয়ে অভিযোগ দেয়া হলে মামলার তদন্ত নেন সিআইডির এসআই সজিব। তিনি মামলার স্বাক্ষী আনিচ মিয়া, রিপন মিয়াকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে মিথ্যা স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

তিনি স্বাক্ষীদের বলতে বাধ্য করেন যে আসামীরা নয়, বাবাই ছেলেকে হত্যা করেছে। পুলিশের নির্যাতনে আনিচ ও রিপন মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেন। পুলিশ নিহত নয়নের বাবা মামলার বাদী লাল মিয়া ও তার স্ত্রী মনোয়ারাকে একই কথা স্বীকার করাতে গত সোমবার ২৬ তারিখ রাতে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। পরে মনোয়ারাকে ছেড়ে দিলেও লাল মিয়াকে আটক রেখে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মনোয়ারা বলেন, আসামীদের দৃষ্টান্মুলক শাস্তি দেয়ার কথা বলে এসআই সজিব তাদের কাছ থেকে দুই দফায় চার লাখ টাকা নেন। কিন্তু পরে আসামীদের কাছ থেকে আট লাখ টাকা নিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে এমন নিষ্ঠুর নাটক সাজান। যে লোকটা তিনটি মেয়ের পরে হওয়া অনেক আকাঙ্খার ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর। তাকেই ছেলের হত্যাকারী সাজাতে এমন ষড়যন্ত্র করছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দুই স্বাক্ষী আনিচ মিয়া ও রিপন মিয়া বলেন, তাদের শেরপুর সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে এসআই সজিব মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেয়ার জন্য ব্যপক মারধর করেন। মারের যন্ত্রনায় টিকতে না পেরে তার শেখানো মত মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। এরপর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে এসআই সজিব মোবাইলে সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগই মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে নয়নের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাই নিয়ে কাজ করছে সিআইডি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংবাদ সম্মেলন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ