Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জেদ্দায় বাংলাদেশ মিশনের ব্যাপক দুর্নীতি ফাঁস

রাষ্ট্রদূত ও সিজি’র মতামত উপেক্ষিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

সউদী আরবের জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাউন্সেলর শ্রম-এর দুর্নীতি ও ব্যাপক অনিয়ম ফাঁস হয়েছে। অভিযুক্ত কাউন্সেলর শ্রম-এর চরম উদাসিনতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্ব্যবহার ও গাফলতির দরুণ শত শত প্রবাসী কর্মী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কাউন্সেলর শ্রম-এর চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও যথাযথ সহযোগিতার অভাবে মিশনের কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।

সউদী আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ ও জেদ্দাস্থ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দীন দেশের ভাব-মর্যাদা রক্ষা এবং প্রবাসীদের সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিতর্কিত কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলামের দুর্ব্যবহার, অসহযোগিতা, সরকারি তহবিল তছরুপ-এর ফিরিস্তি তুলে ধরে তাকে দ্রুত ঢাকায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণাললের সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জরুরি চিঠি দিয়েছেন। কিন্ত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি সুবিধাবাদি চক্র বিতর্কিত কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলামকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

ভুক্তভোগী প্রবাসী কর্মীদের মতে, কেউ কোনো সমস্যা নিয়ে জেদ্দা কনস্যুলেটে গেলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাঁড়িয়ে দেয়া হয়। বিষয়টি রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহকে অবহিত করা হলে তিনি গত ডিসেম্বর মাসে এক জরুরী বার্তায় প্রবাসী সচিব রৌনক জাহান ও পররাষ্ট্র সচিবকে বিতর্কিত কনস্যুলেটের কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলামকে দ্রুত প্রত্যাহার করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অডিট অধিদপ্তর থেকে ১২ লক্ষাধিক টাকার তহবিল তছরুপের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। জেদ্দাস্থ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দীন সম্প্রতি কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলামের দুর্নীতি, অনিয়ম দুর্ব্যবহারের চিত্র তুলে ধরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রবাসী সচিবকে অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রবাসী সচিব রৌনক জাহান কাউন্সেলর শ্রম-এর অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র দেখে হতবাক হন। সচিব প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর কাছে কাউন্সেলর শ্রমের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন। কিন্ত অজ্ঞাত কারণে এ বিষয়টি ধামা-চাপা দেয়া হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব বিতর্কিত কাউন্সেলর শ্রমকে রক্ষা করতে জোর লবিং চালাচ্ছে বলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়।

বিতর্কিত কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলাম গত ছয় মাস আগে সউদী আরব থেকে দেশের ফেরার পথে বি-বাড়িয়ার গৃহকর্মী নাজমা আক্তারের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিবকে একটি কার্টুন ভর্তি উপঢৌকন পাঠিয়েছে। দেশে ফেরত আসা নাজমার স্বামী প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আনসার সদস্য হিসেবে চাকুরি করে। বিষয়টি তদন্ত করলেই ধরা পড়বে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন ইনকিলাবকে বলেন, জেদ্দাস্থ কাউন্সেলর শ্রম আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তের জন্য শিগগিরই জেদ্দায় সরেজমিনে একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হবে। অভিযুক্ত কাউন্সেলর শ্রমকে শেলটার দেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও অতিরিক্ত সচিব উল্লেখ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ