Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেশে আর্থিক সঙ্কটের পদধ্বনি

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

হঠাৎ করে বিশ্বে মন্দাভাব সৃষ্টি হয়েছে। এটা হয়েছে মূলত: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কারণেই। তিনি ‘আমেরিকা ফাস্ট’ নীতি গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে চরম রক্ষণশীল ভূমিকা পালন করে একের পর এক দেশের বিভিন্ন পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছেন। উদ্দেশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট পণ্যকে সুবিধা দেওয়া। কিন্তু তার এই পদক্ষেপের কারণে দেশটির জন্য হিতে বিপরীত হয়েছে। কারণ, সংশ্লিষ্ট দেশগুলো পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে আমেরিকার পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছে। তাতে আমেরিকা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে চীনের কারণে। কারণ, ট্রাম্প যতবার চীনের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছেন, চীন ততবারই আমেরিকার পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছে। এতে চীনও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে ক্ষতির পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রেরই বেশি। সর্বোপরি এ নিয়ে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় আমেরিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। অপরদিকে, এই দুই আর্থিক পরাশক্তির বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অন্য দেশগুলোও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যার অন্যতম হচ্ছে- চলতি শতাব্দীতে বিশ্বের সর্বাধিক আর্থিক সম্ভাবনাময় অঞ্চল বলে খ্যাত- এশিয়া। ফলে এশিয়ার কয়েকটি দেশে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। এমনকি সমগ্র বিশ্বেও। উপরন্তু এই মন্দাভাব আরও বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ জানিয়েছে। বিশ্বের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদগণও একই ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। উল্লেখ্য, কয়েকটি দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক অবরোধের কারণেও বিশ্ব বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।

বিশ্ব মন্দার ছোঁয়া বাংলাদেশে এখনো লাগেনি। বরং চীন-আমেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ কিছুটা লাভবান হয়েছে। গার্মেন্ট রফতানি বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, শ্রমিক রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশ্ব মন্দা সৃষ্টি হলে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে বিশ্বব্যাপী। তাতে আমাদের শ্রমিক রফতানি হ্রাস পাবে। এখনই হ্রাস পাওয়া শুরু হয়েছে। গত বছর শ্রমিক রফতানি লক্ষ্যমাত্রার মাত্র অর্ধেক পূরণ হয়েছে। দেশে বিশ্ব আর্থিক মন্দার ঢেউ এখনো না লাগলেও আর্থিক সংকটের পদধ্বনি অনুভূত হচ্ছে। যা সৃষ্টি হয়েছে মূলত: সরকারী নীতির কারণেই। যেমন: দেশের আর্থিক সক্ষমতা অনুসারে ব্যাংকের যে সংখ্যা থাকার কথা, তার চেয়ে অনেক বেশির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাঙের ছাতার মতো ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যাতে নিয়মের তেমন তোয়াক্কা করা হয় না। ফলে ব্যাংকের সংখ্যা হ্রাস করার জন্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন বহুবার। অন্যদিকে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিপুল অংকের ঋণ দেওয়া হয়েছে যাকে-তাকে। এতে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে দেশের সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে । এমনকি এ ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যেও সর্বোচ্চ। কিন্তু সে ঋণ আর আদায় হচ্ছে না। উপরন্তু ঋণের বেশিরভাগ টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার হয়নি। আবার অনেক টাকা পাচার হয়েছে। খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে কিছুদিন আগে। তারপরও তার সুফল পাওয়া যায়নি। বরং খেলাপির পরিমাণ আরও বেড়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো নাজুক হয়ে পড়ছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য বলা হচ্ছে- খারাপ ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সাথে মার্জ করা হবে।

এই অবস্থায় ব্যাংকগুলোতে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে সরকারী ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নেওয়ার সিদ্ধান্তে । কারণ, এটা বাস্তবায়িত হলে ব্যাংকগুলো পুঁজির সংকটে পড়ে যাবে। এ ব্যাপারে ৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকান্তরে প্রকাশ,’গত ২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পরিষদের সভায় স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০১৯-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । এই আইন পাস হলে সংশ্লিষ্ট ৬৮টি সরকারি স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানতের পরিমাণ ২,১২,১০০ কোটি টাকা থেকে তাদের পরিচালনা ব্যয় মিটিয়ে রয়ে যাওয়া উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারকে ফেরত দিতে হবে। সরকার এই অর্থ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করবেন’। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোতে মহা শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে ডিপোজিটের অর্থ সরকার ফেরত নিলে ব্যাংকগুলো চরম অর্থ সংকটে পড়ে যাবে এবং তা থেকে দেশের আর্থিক চাঞ্চল্য থমকে যাবে বলে কতিপয় বিশেষজ্ঞের অভিমত । কারণ, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাÐের প্রাণ ভোমরা হচ্ছে ব্যাংক। সেই ব্যাংক যদি অচল হয়ে পড়ে, তাহলে অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য অব্যাহত থাকবে কিভাবে? দ্বিতীয়ত: এই অর্থ তো ব্যাংকে নগদে নেই, বিভিন্ন বিনিয়োগে আছে। তাই হঠাৎ করে ফেরত দেওয়া কঠিন ।

দেশের ব্যাংকিং খাতের আর একটি খারাপ খবর হচ্ছে- সঞ্চয় পত্র বিক্রয়ের পরিমাণ ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে । দেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এবং ব্যাংকে সুদের হার স্বল্প হওয়ায় মানুষ ব্যাপক হারে ঝুঁকে পড়েছিল সঞ্চয় পত্রের দিকে। এখানে পুঁজির নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং মুনাফার হার বেশি। তাই মানুষ এদিকে ঝুঁকে পড়েছিল। এছাড়া, সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা তাদের পেনশনের টাকা পেনশন স্কিমে রেখে কোন মতে সংসার চালাত। কয়েক লাখ নারীও পারিবারিক ও অন্য সঞ্চয়পত্রে টাকা রেখে সংসার চালাত। সরকার এই খাতের টাকা নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতেন। এভাবে এই স্কিমটি সাফল্য পেয়েছিল। অবশ্য এই স্কিমের মধ্যে কিছু কালো টাকা ঢুকে পড়েছিল। যার অন্যতম হচ্ছে, দুর্নীতি ও বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণের টাকা। এই কালো টাকা রোধ করার জন্য এবং কিছুটা ব্যাংকের চাপে পড়ে সরকার সঞ্চয় পত্রে মানুষকে অনাগ্রহী করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন: সুদের হার বার বার হ্রাস করা এবং সর্বশেষ উৎসে অতিরিক্ত ৫% কর আরোপ, সব লেনদেন ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে করা, টিন নম্বর থাকা ইত্যাদি। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটের আগে বলা হয়েছিল, এবার বাজেটে কোন কর বৃদ্ধি করা হবে না। করের আওতা বাড়ানো হবে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছে উল্টোটি। অর্থাৎ করের আওতা বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এটা পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হবে কি-না সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু কর বৃদ্ধির জ্বালা মানুষ হারে হারে উপলব্ধি করছে। বিশেষ করে সঞ্চয় পত্রের মুনাফা দিয়ে যারা কোনমতে সংসার চালাত তারা। কারণ, উৎসে অতিরিক্ত ৫% কর আরোপের কারণে লাখ লাখ পরিবারের মাসে কয়েক হাজার টাকা করে উপার্জন হ্রাস পেয়েছে। ফলে তারা চরম কষ্টে পড়েছে। দ্বিতীয় ক্ষতি হচ্ছে, সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ অর্ধেক কমে গেছে। এ ব্যাপারে গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক লদনিকের খবর হচ্ছে, ‘কড়াকড়ি আরোপ ও উৎসে কর বৃদ্ধির কারণে কমে গেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে সঞ্চয় পত্রের নিট বিক্রি হয়েছে মাত্র ২,১৬০ কোটি টাকা। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৩৩% কম। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে পাঁচ হাজার ৩৬ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণেই জুলাই মাসে কমে এসেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি’। বিশেষজ্ঞদের অভিমত-এই অবস্থা চলতে থাকলে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মোট পরিমাণ দাড়াতে পারে ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো। অথচ গত অর্থবছরে এর বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪৯,৯৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ হ্রাস পাচ্ছে আর ভোগের প্রবণতা বাড়ছে। যা দেশের ভবিষ্যৎ ক্ষতিকর। দ্বিতীয়ত: সঞ্চয় পত্রের টাকা থেকে সরকার ঋণ নিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করেন। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু এই নির্ধারিত টাকা যদি সঞ্চয় পত্রে জমা না হয়, তাহলে সরকারকে অন্য খাত থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হবে। অথবা বিদেশী ঋণ নিতে হবে। কিংবা এডিপি কাটছাঁট করতে হবে। উল্লেখ্য, দেশে বিদেশী ঋণের পরিমাণ বিশাল। এ ব্যাপারে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক দৈনিকে প্রকাশ, ’গত জুন শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল ৩,৭৯৪ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছর শেষে যা ৪,৪৫৯ কোটি ডলারে ঠেকবে। যা ১ মার্কিন ডলার সমান ৮৫ টাকার অংকে দাড়ায় প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। এই বিশাল অংকের ঋণের সুদ হিসাবে প্রতি বছর পরিশোধ করতে হয় কয়েক হাজার কোটি টাকা করে। স্মরণীয় যে, এই বিশাল অংকের ঋণ নিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হয়। সেই প্রকল্পগুলো যথাসময়ে এবং মানসম্মত ভাবে বাস্তবায়িত হলে তার সুফল পাওয়া যায়। কিন্তু দেশের কোন কাজই নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট অর্থে ও বিশ্ব মানের হয় না। ফলে ব্যয়িত অর্থের সুফল তেমন পাওয়া যায়না। এতে জিডিপির আকার ও মাথাপিছু গড় বেড়ে যায় কিন্তু সাধারণ মানুষের তেমন কোন কল্যাণ হয় না। এই অবস্থা শুধুমাত্র সাধারণ প্রকল্পের ক্ষেত্রেই নয়, অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এ ব্যাপারে গত ৩০ আগস্ট এক দৈনিকে প্রকাশ, ‘বর্তমান সরকার ১০ বছরে ১০টি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে পরিচিত। এই তালিকায় আছে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রো-রেল,মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর, পায়রা সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মা । এর মধ্যে গত জুলাই মাস পর্যন্ত পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ ৭২ শতাংশ শেষ হয়েছে। এলএনজি টার্মিনালের কাজও ইতিমধ্যে শেষ। বাকি ছয়টির কাজে অগ্রগতি ১৫-৬০ শতাংশের মধ্যে। কাজের গতি বিবেচনা করলে এসব প্রকল্প আগামী দু-এক বছরের শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। আর অবশিষ্ট দুটি প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি।’ এই যদি হয় অগ্রাধিকার ভিত্তিক বড় প্রকল্পের অবস্থা, তাহলে সাধারণ প্রকল্পের অবস্থা যে ‘দৈনদশা’ তা সহজেই অনুমেয়।

সরকারের কতিপয় কর্তাব্যক্তিরা প্রায়ই উচ্চস্বরে বলেন, দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে, জিডিপি, প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু গড় আয় ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে ইত্যাদি। এসব বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদগণ বহুবার বলেছেন, ’প্রবৃদ্ধি ও জিডিপি বৃদ্ধি মানেই দেশের উন্নতি নয়’। তবুও সেদিকে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত নেই সরকারের। তাই এ ক্ষেত্রে ভারতের সা¤প্রতিক উদাহরণ স্মরণযোগ্য। ভারত একটি উঠতি আর্থিক শক্তির দেশ। বিশ্বে আর্থিকভাবে ভারতের অবস্থান এখন চতুর্থ। তৃতীয় অবস্থানে যাবে অচিরেই বলে অনেকের অভিমত। কারণ, ভারতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার ৭-৮% চলছে বহুদিন ধরে চলছে। কিন্তু ভারতের সেই অর্থনীতির বেলুন হঠাৎ ফুটো হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৫ ভাগে নেমে এসেছে। আর্থিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকারী ব্যাংকগুলোর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হ্রাস করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। বিদেশি ঋণ বাড়ছে। দেশটির অন্যতম থিংক ট্যাংক এনআইটিআই’র উপপ্রধান রাজীব কুমার স¤প্রতি বার্তা সংস্থা- এএনআইকে বলেছেন, ‘ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা নজিরবিহীন। ৭০ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা সবচেয়ে সংকটে রয়েছে’। অপরদিকে, ‘ভারতের আর্থিক করুণ অবস্থা হঠকারিতার কারণেই হয়েছে’ বলে ভারতের আধুনিক অর্থনীতির জনক ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ স¤প্রতি মন্তব্য করেছেন। সেই হঠকারিতার উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নোট বন্দি ও গরু জবাই নিষিদ্ধ। এসব দিক বিবেচনায় আমাদের আর্থিক খাতে অতি সাবধানী পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। নতুবা ভারতের মতো উন্নতির বেলন ফেটে যেতে পারে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট ।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন