Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যাংককে সিএসআর খাত থেকে গবেষণা ব্যয় করার আহবান সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিনের

প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ব্যাংকগুলোকে সিএসআর খাত থেকে গবেষণায় ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেই সাথে গবেষণার অর্থকে শুল্কমুক্ত করা যায় কিনা তা নিয়ে দেশের নীতি নির্ধারকদেরকে চিন্তা ভাবনা করার কথা বলেন। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বেচ্ছাসেবী গবেষণা সংগঠন ‘চিন্তার চাষ’ আয়োজিত ‘শিল্প গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব: বিশ্ববিদ্যালয়-শিল্প প্রতিষ্ঠান যৌথ গবেষণা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ আহবান জানান। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ-এর পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিক উজ জামান।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ভারতে সিএসআর খাত থেকে শতকরা ২ ভাগ গবেষণায় ব্যয় করা বাধ্যতামূলক হলেও আমাদের দেশে মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ২ শতাংশ টাকা গবেষণার খাতে ব্যয় করা হচ্ছে। যা ভালো গবেষণার জন্য অপ্রতুল। শিল্প সংশ্লিষ্টদের গবেষণা খাতে টাকা ব্যয় করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই টাকা থেকে হয়তো আপনারা কোনো মুনাফা পাবেন না। কিন্তু দেশের অনেক উন্নয়ন হবে। যে সুবিধা আপনারাও পাবেন। তিনি বলেন, বাইরে থেকে কিনে আনা টেকনোলজি দিয়ে এগোতে পারবো না, নিজস্ব ভাবধারায় টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে। তিনি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে গবেষণায় আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মূল প্রবন্ধে ড. শফিক উজ জামান মাঠপর্যায়ের জরিপ হতে প্রাপ্ত তথ্যাদি তুলে ধরে বলেন, দেশের প্রতিষ্ঠিত ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিভাগ/ইনস্টিটিউটে যৌথ গবেষণা থাকা সম্ভব এরূপ ১২৭টি বিভাগ/ইনস্টিটিউটে জরিপ চালানো হয়েছে। জরিপকৃত মোট ১২৭টি বিভাগ/ইনস্টিটিউটের মধ্যে মাত্র ২৭টি (২১.২৬%) বিভাগ/ইনস্টিটউটে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ গবেষণা রয়েছে। ১০৭টি বিভাগ/ইনস্টিটিউট (৮৪.২৫%) বলেছে তাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ গবেষণায় সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া জরিপকৃত মোট ১২৭টি বিভাগ/ইনস্টিটিউটে গবেষণা করছেন এরূপ শিক্ষক রয়েছেন ২৫৬৩ জন যাদের মধ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ গবষণায় যুক্ত আছেন মাত্র ১৮৩ জন (৭.১৪%)। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বা গবেষণা থেকে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বা পণ্য থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক সুবিধা পেলে শেষোক্ত প্রতিষ্ঠান শুধু আগ্রহী হবে না স্বেচ্ছায় যৌথ গবেষণায় এগিয়ে আসবে। উদ্ভাবিত পণ্য বা মেধা থেকে ভোক্তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপকৃত হলে উভয় প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি পাবে। দেশ এগিয়ে যাবে।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা বলেন, বাংলাদেশে যোগাযোগের অভাবই বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্প-প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে যৌথ গবেষণা না হওয়ার প্রধান কারণ। বাংলাদেশী ছাত্ররা বিদেশে গবেষণায় অনেক ভালো করছে। তাদেরকে যদি দেশে নিয়ে আসা যায় তবে দেশ অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন যে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিসিএসআইআর ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে গবেষণার মান কমে এসেছে।
ড. এ. আই. মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ উপনিবেশিক শাসনের প্রেক্ষাপটে তৈরি। এগুলো শিল্প যুগের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হয়নি। আমরা এখনও গবেষণাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এর সঞ্চালনায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এর সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. আই. মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. এম. আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসিনা খান ও অধ্যাপক ড. জেবা আই সেরাজ, বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) এর পরিচালক (গবেষণা ও মান নিয়ন্ত্রণ) বাবুল চন্দ্র রায়, আয়োজক সংগঠন ‘চিন্তার চাষ’-এর চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান এবং ভাইস-চেয়ারম্যান এম জাকির হোসেন খান-সহ দেশের বিভিন্ন গবেষক, ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজ প্রতিনিধিবৃন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংককে সিএসআর খাত থেকে গবেষণা ব্যয় করার আহবান সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিনের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ