Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আটোয়ারীর লিসা হত্যার প্রধান আসামী সাদের আত্মসমর্পন

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৫:৫০ পিএম

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে স্কুল শিক্ষার্থী সাদিয়া সামাদ লিসা হত্যা মামলার প্রধান আসামী লিসার বন্ধু আইমান নাকিব সাদ (১৪) আদালতে আত্মসমর্পন করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে সাদ। পরে আদালতের বিচারক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে গত সোমবার রাতে আটোয়ারী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে স্কুল ছাত্রী লিসা হত্যার প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে করে স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, আটোয়ারী উপজেলা সদরের ছোটদাপ এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুস সামাদের ছোট মেয়ে সাদিয়া সামাদ লিসা। আটোয়ারী সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সম্প্রতি লিসা আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আকাশের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তা দেখে লিসার প্রাথমিকের সহপাঠী একই এলাকার স্কুল শিক্ষক আকতারুজ্জামানের ছেলে আইমান নাকিব সাদ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। সেও লিসাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। এ নিয়ে সাদ ও আকাশের মধ্যে মারামারিও হয়। লিসা আকাশকে ভালোবাসায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে সাদ লিসাদের বাড়ি গিয়ে লিসা ও তার মাকে হুমকি দিয়ে আসে ‘আজ কিছু একটা ঘটনা ঘটবে’ বলে। সন্ধার পর থেকেই লিসা নিখোঁজ হয়। পরদিন ভোরে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে লিসার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর লিসার বাবা বাদী হয়ে একই এলাকার তিন কিশোর- স্কুল শিক্ষক আকতারুজ্জামানের ছেলে আইমান নাকিব সাদ (১৪), ফারুক হোসেনের ছেলে আকাশ (১৫) ও মজিবর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান মুন্নাকে (১৫) আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। লিসা নিখোঁজ হওয়ার পর পরই স্থানীয়রা ওই তিন কিশোরকে আটক করে রাখে। লিসার মরদেহ পাওয়া পর সাদ পালিয়ে গেলেও বাকি দুজনকে পুলিলের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এ সময় আদালতের কাছে ওই দুই কিশোরের ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আটোয়ারী থানার ওসি (তদন্ত) জয়ন্ত কুমার সাহা। রোববার আটোয়ারী আমলি আদালতের বিচারক এমএম মাহবুব আলম তাদের রিমান্ড নামঞ্জুর করে যশোর কিশোর শোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ। ২০ সেপ্টেম্বর রাতেই ময়নাতদন্ত শেষে লিসার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ওই এলাকার মানুষ। তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ, মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এমনকি ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী প্রধান আসামী সাদকে গ্রেপ্তার করার জন্য ২১ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ৭২ ঘন্টা সময় বেঁধে দেয়। গতকাল মঙ্গলবার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই সাদ আদালতে আত্মসমর্পন করে। সাদ আত্মসমর্পনের পর তার পরিবার থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে নির্দোষ দাবি করা হয়েছে। সাজানো মামলা দিয়ে সাদকে ফাঁসানো হয়েছে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন তার বাবা আকতারুজ্জামান। লিসার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ