Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উৎপাদনে যাচ্ছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫১ এএম

উৎপাদনে যাচ্ছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ প্রকল্পের কাজ ৮৮ ভাগ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের জুন মাসে প্রকল্পটি পুরোপুরি চালু করা হবে এমন লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই দিন রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন চীনা ও বাংলাদেশী প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শ্রমিক। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে। উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া এলাকায় প্রায় ১০০২ একর ভ‚মির ওপর দুই বিলিয়ন ডলারের অধিক ব্যয় ধরে এই প্রথম পরিবেশ বান্ধব কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে এটি হবে একটি মাইল ফলক এমন অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি), চায়না যৌথভাবে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে। ২০১৯ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও শ্রমিক অসন্তোষের জেরসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার ফলে কিছুটা পিছিয়ে যায়। এসব কাটিয়েও এ বছরের ডিসেম্বরে এ বিদ্যুৎ প্লান্টের প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর বাকি ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ২০২০ সালে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে প্রকল্পের সমস্ত সিভিল কাজ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।
সম্পন্ন করা হয়েছে ইউনিট-১ ও ২ এর টারবাইন-জেনারেটর বসানোর কাজ। বয়লার ইউনিট-১ এর হাইড্রোটেস্ট এবং ইন্সুলাশানের কাজও প্রায় শেষের দিকে। বয়লার ইউনিট-২ এর কাজ চলমান, ইউনিট-১ এর ইন্সুলাশান ও প্রেসিপিটেটরের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের মালামাল লোড আনলোডের জন্য জেটির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে অনেক আগেই। এছাড়া সম্পন্ন করা হয়েছে ওয়াটার ইন্টেকের কাজ। কোল ডোম, কুলিং টাওয়ার, পানি পরিশোধন প্লান্ট, কনভেয়ার বেল্ট, প্লান্টের বিভিন্ন মটরের প্রি-কমিশন, ডিসিএস সিস্টেমের কমিশনিং এবং জি আই এস’র শেষ দিকের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজে বর্তমানে প্রায় ২৬০০ চীনা ও ৫৫০০ বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্প এলাকায় চলছে মহা কর্মযজ্ঞ। আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দিন রাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে এমভি জিংহাইটন নামের একটি কয়লাবাহী জাহাজ পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে কয়লা খালাস করেছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্র জানায়, কয়লা ভিত্তিক পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য কোরিয়ার একটি কোম্পানির মাধ্যমে ৪০০ কেভি এবং চীনের একটি কোম্পানির মাধ্যমে ২৩০ কেভির লাইন নির্মাণ কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। এই প্লান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গোপালগঞ্জের সাবস্টেশনে যুক্ত হবে। সেখান থেকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
প্রকল্পের সহকারী ম্যানেজার মো. শাহ মনি জিকো জানান, এ প্রকল্পের কাজ দ্রæতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ পাওয়ার প্লান্ট বড় ভ‚মিকা রাখবে। ২০২০ সালে এ প্রকল্পটি পুরোপুরি চালু করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শাহ মো. গোলাম মাওলা জানান, ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদনে যাবে। জুনের ভেতরে বাকি ৬৬০ মেগাওয়াট পরিপূর্ণভাবে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে। আর এরই সংলগ্ন আরো একটি ১৩২০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হবে। ইতোমধ্যে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে এটিও শেষ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ