Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক সড়ক গফরগাঁও গ্রামীণ রাস্তার করুণ হাল

মো. আতিকুল্লাহ, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেঁষে বয়ে গেছে (ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক) খান বাহাদুর ইসমাইল সড়ক। ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম পুরনো এই সড়কটি জেলা সদর থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গফরগাঁও উপজেলার ওপর দিয়ে হোসেনপুর পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটার। বর্তমানে প্রায় পুরো সড়কের বেহাল অবস্থা। 

সড়কটির থেকে ওঠে গেছে কার্পেটিং। বেশিরভাগ অংশজুড়েই ছোট বড় গর্ত আর গর্ত। বর্ষায় একটু বৃষ্টিতেই রাস্তার ওপর পানি জমে পরিণত হচ্ছে ডোবায়। কখনো কাদা-পানিতে হচ্ছে একাকার। ওই সব অংশে যানবাহনতো দূরের কথা হাঁটাও কঠিন হয়ে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কের অংশটুকুর অবস্থা আরো নাজুক। এ কারণে এ সড়কে যানবাহন চালানো প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে অনেক চালক। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে বেহাল এ পথে চলাচল করছেন চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও হোসেনপুর এবং গফরগাঁওয়ের পাঁচবাগ, উস্থি, গফরগাঁও ও সালটিয়া ইউনিয়ন ছাড়াও ধলা, বালিপাড়া, কালিরবাজার ও সুতিয়াখালী এলাকার অনেক মানুষের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম পথ এ সড়কটি। গত ১০ বছরে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ঠিকাদারের পাশাপাশি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কমপক্ষে ৮ বার সড়কটি নামে মাত্র সংস্কার করে। কিন্তু এক-দুই মাস না যেতেই আবার আগের অবস্থা । বেহাল এই রাস্তার কারণে গফরগাঁও, পাকুন্দিয়া ও হোসেনপুরের অনেকে জরুরি প্রয়োজনে ভালুকা অথবা ত্রিশাল হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ যাতায়াত করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ময়মনসিংহ-গফরগাঁও সড়কটির ৪০ কিলোমিটারের প্রায় পুরোটাই যান চলাচলের অনুপযোগী। সড়কজুড়ে এত এত ছোট বড় গর্ত যে এগুলো এড়িয়ে যান চালাচল করা প্রায় অসম্ভব। কেউ কেউ ঝুঁকি নিতে গিয়ে রিকশা-ইজিবাইকসহ উল্টে পড়ে ওই সব গর্তে।
এ ব্যাপারে সুতিয়াখালী গ্রামের মৃত মো. আবদুল জলিলের ছেলে মো. ইমরুল কায়েস ইনকিলাবকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি এখন আর চলাচলের উপযোগী নেই। ময়মনসিংহ থেকে এ সড়ক ধরে আগে তিনি আধ ঘণ্টায় বাড়ি পৌঁছাতেন। কিন্তু এখন বিকল্প সড়ক ধরে বাড়ি পৌঁছাতে সময় লাগে কমপক্ষে এক ঘণ্টা। এভাবেই চলছে গত প্রায় দশ বছর। এই সড়কে ভারি যানবাহনতো দূরের কথা রিকশা চালকরাও আসতে চায় না। অতিরিক্ত ভাড়ায় রিকশা কিংবা অটোরিকশা হেলে দূলে যাতায়াত করলেও সড়কের দুরবস্থার কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। এই সড়ক দিয়ে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের যাতায়াত এখন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, গফরগাঁও সদরের চাঁদনী মোড় থেকে পৌর শহরের শেষ সীমানা পর্যন্ত সড়কটির দেড় কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ বিভাগের হওয়ায় পৌর কর্তৃপক্ষ সংস্কার করতে পারছে না। এদিকে সড়কটি সংস্কার কাজের জন্য তিন মাস আগে এমএম বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও রহস্যজনক কারণে কাজ শুরু হচ্ছে না।
গফরগাঁওয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. সুলতান আহমেদ ইনকিলাবকে জানান, হাসপাতালের সামনের অংশটুকু এতই খারাপ যে রোগীরা ভয়ে হাসপাতালে আসতে চান না। রোগীদের নিরাপদে আসা-যাওয়ায় জন্য দ্রুত সড়কটি মেরামত হওয়া দরকার।
জানা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে সওজ মেসার্স এমএম বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ সড়কটি মেরামত করার কার্যাদেশ দেয়। নিয়ম ভঙ্গ করে মেসার্স শামিম এন্টারপ্রাইজ সাব-কন্ট্রাক নিয়ে ২০১২ সালের জুন মাসে মেরামত কাজটি সম্পন্ন করে। নিম্নমানের কাজ এবং হাসপাতাল সড়কের বেহাল অংশের অধিকাংশ জায়গায় সংস্কার না করে চুড়ান্ত বিল উত্তোলন করায় কয়েক মাস পরেই সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। একই রকমভাবে গত ১০ বছরে আটবার নামে মাত্র সংস্কার কাজ হয়েছে যা এক-দুইমাসও টেকেনি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল ইনকিলাবকে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এ সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই কাজ শুরু হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ