Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধরা খেয়েছে বিএনপির এমপিরা

প্রতিবাদ সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেত্রী উপাধি খারিজ করতে গিয়ে বিএনপির এমপিরা ধরা খেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, আমরা অনেকে গুজবের দিকে ছুটছি। আবার অতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের কিছু কিছু নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সাথে হাসপাতালে দেখা করছেন। উনাদেরকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। উনারা যে খুব বেশি আন্তরিক ম্যাডামের মুক্তির জন্য, সেটা আমাদের সামনে এবং জনগণের সামনে আশ্বস্ত করার জন্য একটা জিনিস তারা ভালো করছেন। সেটা হলো- ম্যাডামের যে আপসহীন উপাধিটা আছে, এটা খারিজ করতে গিয়ে ধরা খাইছেন।

গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া শিশুকিশোর মেলা কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আমি মনে করি গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপসহীন। তাকে অনুকম্পা করতে পারে, এমন যোগ্যতা বাংলাদেশে কারও আছে বলে মনে হয় না। খালেদা জিয়া সরকারের সাথে কোনো সমঝোতা ও আপস করবেন না বা প্যারোলে মুক্তি নেবেন না। তিনি বলেন, হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। আমরা আমাদের চেষ্টা করবো। আর গণতন্ত্রের প্রতি যদি শ্রদ্ধাবোধ থাকে তাহলে গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন আমরা করবো। আন্দোলন যতটুকু করছি, আরো যতটুকু যৌক্তিক করার তা আমরা করবো। আর সেই আন্দোনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া মুক্তি লাভ করবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম এই সদস্য বলেন, শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলেও বেগম জিয়া মানসিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী। আর তিনি মাথা নত করার ব্যক্তি নন। কারণ খালেদা জিয়ার একটি নাম আছে মা-বাবার দেয়া ‘পুতুল’। এটি মাটির পুতুল নয় যে আছাড় দিলাম। এই পুতুল প্রতিবাদ করতে জানে, এই পুতুল কথা বলতে জানে। এই পুতুলের কথা বন্ধ করতে পারবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, হয়তো বা আজকে প্রধানমন্ত্রীসহ যারা নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে বেগম জিয়ার মৃত্যু জেলখানায় চিরস্থায়ী করতে চান। আমি জানি না, আল্লাহ ভাগ্যে কী রাখছেন। আল্লাহ যদি তার মৃত্যু জেলখানায় রাখেন তাহলে বেগম জিয়ার সম্মান ও জনপ্রিয়তা শত শত হাসিনার চেয়েও বেশি হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজনের বক্তব্য দেখলাম। সেই কথাতে বোঝা যায়, আদালত কতটা স্বাধীন। প্রতিদিন কত মামলায় রায় হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলায় রায় হয় না! বিব্রত বোধ করেন। তবে আমরা চেষ্টা করব, গণতন্ত্রের নেত্রীর মুক্তি আন্দোলন আমরা করব এবং করছি যতটুকুই করছি। আরও যতটুকু যৌক্তিক করা দরকার, সেটা করব। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম জিয়া মুক্তি লাভ করবেন।

সরকার দুর্নীতি ও ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের নামে বানর নাচাচ্ছে মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, অপকর্ম ঢাকতে সরকার বানর নাচের খেলা দেখাচ্ছে। আগে বায়তুল মোকাররমের আশপাশে বিভিন্ন মোড়ে দেখতাম বানর নাচায়। ওই বানরটা নাচায় লোক সমবেত করতে। তারপরে সব ভেজাল ওষুধ, এটা-সেটা বিক্রি করে। বর্তমান সরকার এমন একটা বানর নাচানোর ব্যবস্থা করেছে, যাতে মানুষ সেদিকে আকৃষ্ট থাকে, আর উনারা যে অপকর্ম করছে সেই অপকর্ম যেন নির্দ্বিধায় করতে পারে। এর বাইরে আমার অন্য কিছু মনে হয় না।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ছোটখাটো দু-একটা টোকাই-গল্প-ইতিহাস-নাটকের মতো সৃষ্টি করে কিছু সময়ের জন্য চমক সৃষ্টি করা যায়, কিন্তু প্রকৃত অর্থে দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা যায় না এবং দেশ মুক্ত করা যায় না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকের পত্রিকায় দেখলাম, ৭৬ হাজার কোটিপতি। ৫ বছর আগে নাকি ১৯ হাজার ছিল, এখন ৭৬ হাজার কোটিপতি। কার কল্যাণে হইছে? এই প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে। আর কত কোটি টাকা যে বিদেশে গেছে, তাদের যদি হিসাব হয়, তাহলে কোটিপতির সংখ্যা কত? এই কোটিপতিদের যদি তালিকা প্রকাশ করা হয়, দেখা যাবে আওয়ামী লীগ করে না এমন কোনো কোটিপতি হয় নাই। দুর্নীতির অনুসন্ধানে অনেককে খুঁজছেন। কিন্তু যারা করছেন, তারা কতটা দুর্নীতির ঊর্ধ্বে তা জনগণের প্রশ্ন। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি লালন করেন ও প্রশ্রয় দেন- সে দেশের ডিপার্টমেন্টে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কতটা সক্রিয় হতে পারবে? দু-একটা টোকাইয়ের গল্প-উপন্যাসের মতো নাটক তৈরি করে কিছু সময়ের জন্য চমক সৃষ্টি করা যায়। প্রকৃত অর্থে দুর্নীতি থেকে দেশকে রক্ষা করা যায় না। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও ব্যাংকিং খাতকে নিঃস্ব করার মধ্য দিয়ে দেশকে দেউলিয়ায় পরিণত করেছে।

এ সময় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ছড়াকার আবু সালেহ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, শিশু-কিশোর মেলার সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ