Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিদ্যালয় ভবন নদীগর্ভে

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে পদ্মা নদীতে ব্যাপক হারে নদীভাঙ্গন দেখা দেয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর বয়ারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি বিল্ডিং নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বুধবার দিবাগত রাতে পদ্মার পানি কমতে থাকার সাথে সাথে আকস্মিকভাবে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের একটি ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে শিক্ষক, অভিাভাবক, ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিস স‚ত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৮৯ সালে স্থাপিত হয়। ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলীন হওয়া পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মস‚চি পিইডিপি-৩ এর আওতায় উর্দ্ধমুখী তিন তলা স¤প্রসারণ করা হয়। তবে এ ভবনটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যে কোন সময় নদীভাঙ্গনে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

চর বয়ারমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান জানান, এ বিদ্যালয়ে ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া, হবিপাড়া, আমিনপাড়া, চর বয়ারমারী, আদর্শগ্রামের ২৬৯ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। দুই ভবনে মোট ৬ টি শ্রেণী কক্ষের মধ্যে ৩ টি শ্রেণী কক্ষ নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার ক্ষতি হয়ে গেল। যে ভবনটি আছে সেটা টিকে কিনা অপেক্ষা মাত্র। এ বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পেলে চর অন্ঞ্চলের কমলমতি শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। কয়েক গ্রামের শিশুদের যেতে হবে ৩-৪ কি.মি. দ‚রে। তাই যত দ্রæত সম্ভব বিদ্যালয়টি স্থান পরিবর্তন করে স্থাপন করা।

চর আষাড়িয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ জানান, অব্যাহত ভাঙ্গনের কারণে পদ্মা নদীতে এ ইউনিয়নের দুটি গ্রাম, আবাদী জমি, গৃহপালিত পশুসহ অনেক কিছু নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। প্রায় স্কুলের কাছে চলে আসে বন্যার পানি ও ভাঙ্গন। কিন্তু বুধবার দিবাগত গভীর রাতে পদ্মার পানি কমতে থাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। মুহ‚র্তেই পাকা ভবনটি নদীতে নামিয়ে নিয়ে চলে যায়। এর আগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৭৬ টি পরিবারকে ঢেউটিন নগদ অর্থ এবং কয়েকশ’ বন্যাকবলিত পরিবারকে চাউল, শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার মমতাজ মহল জানান, বিদ্যালয়টি রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করার উপায় ছিল না। কারণ বিদ্যালয়টি পদ্মা তীরের নিকটবর্তী। জিওব্যাগ বা অন্য কোন উপায়ে ভাঙ্গনরোধ করার ক্ষমতা আমাদের ছিলনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে একাধিকবার পরিদর্শন করে বিদ্যালয়টি রক্ষার সম্ভাবনা না থাকায় করার কিছুই ছিল না। বিদ্যালয়টি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। অস্থায়ীভাবে ক্লাস করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) মুহাম্মদ ইমরানুল হক এ প্রতিবেদককে জানান, বিদ্যালয় ভবনটি ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এর প‚র্বে চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের ত্রান বিতরণ করেছি। যে গ্রামের মানুষের ঘর বাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে তাদের জন্য একটি আদর্শ গ্রাম তৈরির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ