Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভিবাসী-স্রোতের ভয়ে ভারতে হিন্দুরা

বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা বিষয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন

প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশে সম্প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় মঠ, মন্দির ও উপাসনালয়ের সেবায়েত, পুরোহিতকে খুন করা হয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের ভয়ে আছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক।
আরতি টিক্কো সিংয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে এ দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ছিল শতকরা ১৪ শতাংশ। এখন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট-এর নিচে। সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে এ দেশে আল-কায়েদার ঘাঁটি স্থাপন করাই লক্ষ্য। ভারতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালেও হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নাস্তিক ব্লগার, ধর্মনিরপেক্ষ কর্মী এবং বুদ্ধিজীবীদের ওপর সহিংস আক্রমণ শুরু হয়। এসব ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস কয়েকটির দায় স্বীকার করেছে। আইএস আসছে বলে ফিসফিসানি শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় হিন্দুদের ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা ক্রমশ হ্রাস পাবে না বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রধান কাজল দেবনাথ বলেন, ‘আমি জানি না আইএস বা অন্য কোনো সংগঠন হিন্দুদের শিরñেদ করছে কি না। কিন্তু এটা বেশ স্পষ্ট যে, এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। এটা নতুন একটি ধারণা বা প্রপঞ্চ। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ আরও বলেন, ‘এর আগে, হিন্দু নারীদের ধর্ষণ বা আমাদের মন্দির ও ঘরে হামলা চালানো হতো। জমি ও ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হতো যেন হিন্দুরা ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়। এটা বেশির ভাগই ছিল হিন্দুদের জমি ও সম্পদের দখলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু এখন কোনো সামাজিক বা অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়, সাধারণ ভূমিহীন দরিদ্র হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন।’ কাজলের ভয়, এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের চলে যাওয়া ধীরে ধীরে শুরু হতে পারে।
শেখ হাসিনার সরকার দেশে আল-কায়েদা বা আইএসের ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছে এবং সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার জন্য অনবরত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করছে। কাজল দেবনাথ বলেন, ‘সরকারকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন চুপ করে আছেন? কেন সরকারের পক্ষ থেকে কেউ হতাহতের শিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করছেন না? কাজল দেবনাথ আরও বলেন, শেখ হাসিনার এই নীরবতা জঙ্গি ও চরমপন্থীদের উৎসাহ জোগাবে। কাজল দেবনাথ বলেন, আমি ভারত সরকারের হিন্দু অভিবাসীদের সাহায্যের বিষয়টি সমর্থন করি না। কারণ এতে আমাদের অভিবাসনের জন্য দরজা খোলার পথ তৈরি হবে। কিন্তু যদি এভাবে আক্রমণ চলতে থাকে এবং সরকার কোনো হস্তক্ষেপ না করে হিন্দুদের সংখ্যা এ দেশে কয়েক বছরের মধ্যে মাত্র তিন শতাংশের মধ্যে নেমে যাবে বলেও তিনি মনে করেন।






 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিবাসী-স্রোতের ভয়ে ভারতে হিন্দুরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ