Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিএসএমএমইউ পরিচালক সরকারের শেখানো কথাই বলছেন -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৬:৩৭ পিএম

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক সরকারের শেখানো কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ এর পরিচালকের বক্তব্যে এটি সুষ্পষ্ট যে, ৭৫ বছর বয়সী ভয়ানক অসুস্থ চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাবন্দী রেখে বিনা চিকিৎসায় তিলে তিলে নিঃশেষ করার মহাআয়োজন চলছে। প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে পরিচালকের বক্তব্যে। পরিচালকের বক্তব্যের অনেকাংশই এখতিয়ার বহির্র্ভুত। কারাবন্দী ও ভীষণ অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রভূত ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী শেখ হাসিনার মতোই পরিচালকের বক্তব্যও অযাচিত, অগ্রহণযোগ্য, অসৌজন্যমূলক, পূর্বকল্পিত, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও কুৎসামূলক।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএসএমএমইউ পরিচালক খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে গিয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভাল আছেন, চিকিৎসায় সন্তুষ্ট। গত সাত মাস আগে খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও বাতজ্বরজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখন বেশীরভাগ অসুখের উন্নতি হয়েছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অবস্থা স্থিতিশীল হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও দেখা পাওয়া যায় না। প্রায় সময় ডাক্তার’রা কেবিনে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান না।’

অথচ বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ঝিলন মিয়া সরকার বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসকদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেন এবং অত্যন্ত বিনয়ী ব্যবহার করেন। তিনি হাঁটতে পারেন না, অন্যজনের সহায়তায় তাঁকে হাঁটতে হয়। তাঁর আরও চিকিৎসা প্রয়োজন। একজন অসুস্থ মানুষের লাইফ স্টাইল অনেক রকম হয়, এটা আমি স্বাভাবিক মনে করি। এসব বিষয়গুলো সম্মান করেই আমাদের চিকিৎসা করতে হয়। ম্যাডাম আমাদের সাথে সবসময় হাসিখুশি কথা বলেন। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে নানা অসুবিধার কারণে আমাদেরও প্রতিদিন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করা সম্ভব হয় না।’ রিজভী বলেন, প্রফেসর ঝিলন মিয়া সরকারের বক্তব্যের সাথে পরিচালকের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রাণনাশের দূরভীসন্ধি নিয়েই কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন তার শরীর ভেঙ্গে পড়ছে, স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। উন্নতমানের চিকিৎসার অভাবে তিনি এখন প্রতিনিয়ত চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়ছেন। তাঁকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের অব্যাহত সুতীব্র দাবী ও তাঁর পরিবারের আবেদন-অনুরোধ কানে তুলছে না মধ্যরাতের গহ্বরে জন্ম নেয়া এই ভীত সন্ত্রস্ত দুর্বল সরকার। তারা দেশনেত্রীকে কোনভাবেই মুক্তি না দিয়ে কারাগারে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নে উন্মত্ততা দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ সকলেই জানেন, তাদের প্রাণাধিক প্রিয় দেশনেত্রীর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এখনি সুচিকিৎসা না করাতে পারলে তার সুস্থ অবস্থায় ফিরে না আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না, নিজের খাবার খেতে পারেন না, তিনি একপা হাঁটতেও পারেন না। আগে এক হাত তুলতে পারতেন না, এখন দুই হাতই তুলতে পারেন না। স্বাস্থ্য অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। হাত-পা অবশ হয়ে গেছে। কথা বলতেও কষ্ট হয়। আমাদের দলের এমপিরা এবং তার পরিবারের সদস্যরা তা সচক্ষে দেখে এসেছেন। অথচ এখন শেখ হাসিনা দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে নিয়মিত মিথ্যাচার করে চলেছেন। কখনো কখনো নির্দয় ‘ডার্ক হিউমার’ করছেন। শেখ হাসিনা গত শনিবার সন্ধ্যায় আজারবাইজানে স্থানীয় হিলটন হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বলেছেন, ’বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের ইস্যু বানাতে তাকে অসুস্থ বলছে। খালেদা জিয়া কারাগারে অন্য বন্দীদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন।’ এর আগে শেখ হাসিনা লন্ডনে গিয়ে বলেছিলেন ‘খালেদা জিয়াকে সারাজীবন কারাগারে রাখবেন তিনি ! এসব কথাবার্তাতেই সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণ মেলে বেগম জিয়াকে বন্দী অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় চিরতরে পঙ্গু করে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রীকে রাজনীতি এবং নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে একতরফাভাবে নির্বাচন করার পর এখন তাদের ভয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। এ কারনে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। সুচিকিৎসা না দিয়ে বন্দী রেখে প্রৌঢ় মহিয়সী নারীর ওপর ইতিহাসের বর্বরতম নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। রুহুল কবির রিজভী অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান। অন্যথায় তাঁর যদি কোন ক্ষতি হয় তবে সকল দায় শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকেই বহন করতে হবে বলেও সতর্ক করে দেন।



 

Show all comments
  • Md. Jakir Hossain ২৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৭:১৫ পিএম says : 0
    Mr. Rizbi Bhai Many Many thanks for declare the truth spoken
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ