Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সড়ক নির্মাণ-সংস্কার হাজার কোটি টাকা অপচয়

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধিনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন দেশের ৬৫টি সড়ক বিভাগে প্রযুক্তি দুর্বলতার কারণে বছরে হাজার-হাজার কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে সড়ক-মহাসড়ক নির্মিত ও সংস্কার হওয়ায় বছর শেষ না হতেই ওইসব সড়ক ভেঙ্গে ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

বর্তমানে দেশে সড়ক মজবুতিকরণ, মহাসড়ক প্রশস্তকরণ, কার্পেটিং ও সীলকোট, ডিবিএসটি ও ওভারলে পদ্ধতির মাধ্যমে এসব কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এ কাজে সিডিউল বহির্ভূত নিন্মমানের বিটুমিন ও পাথর ব্যবহারে সড়ক টেকসই হচ্ছেনা, মনে করেন বিশেষজ্ঞমহল ।
আরসিসি ঢালাই হচ্ছে, সড়কের উপরি ভাগে সিডিউল বর্ণিত লোহার রড বসিয়ে ওপরে উন্নতমানের পাথরের খোয়া, সিমেন্ট ও বালু মিশ্রণের মাধ্যমে ঢালাই দিয়ে যে সড়ক নির্মিত হয় তা হচ্ছে আরসিসি ঢালাই। এ সড়ক ২০/২৫ বছরে নষ্ট হয়না, বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে সড়কের ক্ষতি হয় না, স্থায়ীত্বও দীর্ঘদিন টিকে।

সম্প্রতি এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেকের এক বৈঠকে দেশের সড়ক-মহাসড়ক পর্যায়ক্রমে আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে নির্মাণ ও সংস্কারে গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অধিনে দেশে রয়েছে ৬৫৪টি মহাসড়ক। যার পরিধি হচ্ছে ১৩,২৪২,৩৩ কিলোমিটার। এসব সড়ক জেলা মহাসড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় বিদ্যমান রয়েছে। এসব সড়ক প্রতিবছর সংস্কার, মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু নিন্মমানের প্রযুক্তির কারণে সড়কগুলো স্থায়িত্ব পায়না। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার বাধ্যতামুলক থাকলেও মাঠ পর্যায়ে কাজের কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদাররা তা মানছেনা।

অভিযোগ রয়েছে, ৬৫টি সড়ক বিভাগের স্ব স্ব এলাকায় সংশ্লিষ্ট সড়ক বিভাগের কাজের তদারকিতে নিয়োজিত দূর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অর্থপূর্ণ উদারতায় ঠিকাদাররা নিন্মমানের বিটুমিন ও বিভিন্ন সাইজের সস্তা দরের পাথর ব্যবহারে সড়ক দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সড়ক সংস্কারে বিদেশ থেকে আনা নিন্মমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ড্রাম ভর্তি করে এসব নিন্মমানের বিটুমিন দেশে এনে গলিয়ে বিক্রি করা হয়। বিগত সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশে বিটুমিন গলানো হতে দেখা যেত। বর্তমানে যেখানে সেখানে চুল্লি বসিয়ে বিটুমিন গলানো হতে দেখা যায়। যা পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা প্রশাসন দেখেও দেখেনা। ইরানী বিটুমিন দামে সস্তা হওয়ায় বিদেশ থেকে এসব কোম্পানির বিটুমিন ক্রয় করে ঠিকাদাররা অহরহ ব্যবহার করে থাকে। যার ফলে গরম পড়লে এসব বিটুমিন গলে কার্পেটিং এবড়ো-থেবড়ো হয়ে যায়। ইরানী বিটুমিন দেখতে কালো। সেহেতু রাস্তা সংস্কার কাজে কার্পেটিংয়ের পর খুব ভাল দেখায়। এসব বিটুমিন ব্যবহারে শুষ্ক মৌসুমে কয়েক মাস ভাল গেলেও বর্ষাকালে গাড়ির চাকার সাথে বিটুমিন উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পড়ে এ অভিযোগ পর্যবেক্ষক মহলের। তাই তারা ভবিষ্যতে সড়ক-মহাসড়ক ঠেকসই আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। এতে সরকারের হাজার-হাজার কোটি টাকা অপচয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে। সড়কের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে বহু বছর।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ