Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার ৫৮ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল ব্যবহার নীতিমালা-২০১৯ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। দেশের বিপুল জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করার চলমান প্রক্রিয়াকে আরো বেগবান করে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার সমস্যা নিরসনে তহবিল ব্যবহারে একটি সমন্বিত নীতিমালার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে মন্ত্রিসভার অনুষ্ঠিত বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি একটি জাতির সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য খুবই অপরিহার্য। এ কারণে দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান চাহিদার লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রশিক্ষণার্থী, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, শিল্প দক্ষতা পরিষদ, অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, চর ও হাওরাঞ্চলের জনগোষ্ঠী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, পথশিশু, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী, বস্তিবাসী, বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া, চাকরিপ্রার্থী, বেকার বিদেশগামী কর্মী, বিদেশ প্রত্যাবর্তন কর্মী আলাদা আলাদা কর্মসূচিতে এই তহবিলের সুবিধা পাবেন।
তিনি বলেন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দক্ষতা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, কার্যক্রম ও গবেষণা সমীক্ষার ক্ষেত্রে আর্থিক অনুদান প্রদান করার ক্ষেত্রে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের আবেদন যাচাই-বাছাই পূর্বক নিষ্পত্তি করবে এবং জাতীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন তহবিল কোম্পানিকে প্রত্যাশী প্রতিষ্ঠানকে অনুদান প্রদানে অনুরোধ জানাবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অর্থ বিভাগ এরই মধ্যে জাতীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন তহবিল কোম্পানি গঠন করেছে। অর্থ বরাদ্দের জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ প্রদানকারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া, অর্থ বরাদ্দ প্রাপ্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগ্যতা নির্ধারণ, প্রশিক্ষণার্থীকে উপবৃত্তি প্রদানের মানদÐ নির্ধারণ, দক্ষতা উন্নয়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম গবেষণা সমীক্ষা ও উদ্ভাবন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং তহবিলের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াকরণ, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের বিষয়ে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের বিপুল জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করার চলমান প্রক্রিয়া আরো বেগবান হবে এবং দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে এবং দক্ষ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও আত্ম-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকার সমস্যার নিরসন হবে। সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় একটি তহবিল অনুমোদন করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই নীতির অনুসরণ করে অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে ২৩টি মন্ত্রণালয় মানব সম্পদ উন্নয়নে তহবিল দিয়ে থাকে। একটি কমন নীতিমালার মাধ্যমে তহবিল বরাদ্দ দিতে এই নীতিমালা করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, চলতি বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার ৫৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর এই সরকারের সময়ে মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০১৯ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারটি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ৫৩টি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে ৩১টি। ২২টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৫৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে পাঁচটি নীতি বা কৌশল, দু’টি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে আইন পাস হয়েছে পাঁচটি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার মোট ১৬টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ১১৬টি সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকগুলোতে গ্রহণ করা ১৬১টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ১২২টি। বাস্তবায়নের হার ৭৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্ত রয়েছে ৩৯টি। বর্তমান সরকারের সময়ের মধ্যে ১৬টি আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরো পাঁচটি আইন সংসদে বিবেচনাধীন এবং তিনটি আইন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতিগত অনুমোদনের পর ১০টি আইন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ও বিভাগের প্রক্রিয়াধীন আছে এবং এই প্রান্তিকে আটটি নীতি বা নীতিমালা বা কর্মকৌশল বা কর্মপরিকল্পনা ও চারটি আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক অনুমোদন বা অনুসমর্থন করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ