Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহারাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের শাসন জারি

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ শিবসেনার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৯, ৮:৫০ পিএম

মহারাষ্ট্রে জারি করা হল প্রেসিডেন্টের শাসন। বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি, শিবসেনা, এনসিপি, তিন দলকেই সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানান রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। তবে সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে পারেনি কেউই। কেন্দ্রকে এই রিপোর্ট দেয়ার পরেই সে রাজ্যে প্রেসিডেন্ট শাসন জারি করা হল গতকাল। এদিন সকাল ১১টায় রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলে এনসিপি। তারাও রাজ্যপালের কাছে আরও সময় চায়। শিবসেনাকে সমর্থন নিয়ে এনসিপি ও কংগ্রেসের আলোচনা চলার মধ্যেই প্রেসিডেন্টের শাসনের সুপারিশ করা হয়।
সরকার গঠনের দাবি জানাতে শিবসেনা ব্যর্থ হয়ে তিনদিন অতিরিক্ত সময় চায়, তা দিতে চাননি রাজ্যপাল। তারপরেই সোমবার সন্ধ্যায় সরকার গঠনের জন্য এনসিপিকে আহ্বান করা হয়। আরও সময় দিতে অস্বীকার করায়, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শিবসেনা। কংগ্রেস ও এনসিপিকে নিয়ে সরকার গঠনের শিবসেনার প্রয়াসের সমাপ্তি ঘটে সোমবার, তার আগে ফোনে উদ্ধব ঠাকরে আশার আলো জুগিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
শেষ মুহূর্তে, সর্মথনের চিঠি দিয়ে যখন শিবসেনা যখন রাজ্যপালের দরবার যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, কংগ্রসের তরফে জানানো হয়, কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি এবং এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন। এনসিপি নেতা তথা শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার বলেন, ‘সোমবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত, কংগ্রেসের চিঠির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আমাদের নেতা শরদ পাওয়ার, প্রফুল্ল প্যাটেলরা”।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শিবসেনা। তাদের অভিযোগ, বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য দুদিন সময় দেয়া হলেও তাদের কোনও সময় দেয়া হয়নি। শিবসেনার হয়ে আপিল করছেন আইজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল।
গতকাল সকালে সরকার গঠন নিয়ে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, তারপরেই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের মুম্বাই পাঠান তিনি। এর আগে তাদের সফর বাতিল করেছিলেন কংগ্রেস নেতারা। অজিত পাওয়ার বলেন, দিল্লিতে তার কাকাকে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছিল। শরদ পাওয়ার তা অস্বীকার করেন। মুম্বাইয়ে এনসিপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের কারণ দেখান তিনি।
শিবসেনার সঙ্গে সরকার গঠনের পক্ষে মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতারা, তবে দলীয় নেতৃত্ব বিশেষ করে সোনিয়া গান্ধী আদর্শগত ভিন্ন এবং চিরাচরিত বিরোধী দল, এমনকি নির্বাচনে যারা মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্রে যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই, তাদের সঙ্গে জোট করা নিয়ে উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি কংগ্রসের উদ্বেগ বিজেপির ৩০ বছরের সঙ্গী শিবসেনা, তাদের এই বিচ্ছেদ চিরস্থায়ী হবে না।
এনডিএ থেকে তাদের প্রস্থানের বার্তা দিয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন শিবসেনার একমাত্র মন্ত্রী। বিজেপি থেকে শিবসেনার আলাদা হয়ে যাওয়া ছিল এনসিপির বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার শর্ত।
তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়ে দেয় এনসিপি। অজিত পাওয়ার বলেন, ‘যে সিদ্ধান্তই নেয়া হবে, তা হবে একসঙ্গে, সেইকারণে আমরা গত সোমবার কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছিলান, কিন্তু তারা আসেনি। আমরা এই নিয়ে একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই, আমরা একসঙ্গেই রয়েছি। কংগ্রেস সময় নিচ্ছে, কারণ, আমরা শিবসেনার সঙ্গে লড়াই করিনি”।
কংগ্রেস জানিয়েছে, বেশি সময় চেয়েছেন শরদ পাওয়ার। সূত্রের খবর, গত সোমবার সোনিয়া গান্ধীকে শরদ পাওয়ার জানিয়েছেন, যে, শিবসেনাক সমর্থনের ধরন জানা প্রয়োজন। খবর, শরদ পাওয়ার বলেন, “শিবসেনার থেকে মাত্র দুটি আসন কম রয়েছে এনসিপির”, শিবসেনার পূর্ণ সময়ের মুখ্যমন্ত্রী পদ পাওয়া নিয়ে ইঙ্গিত এনসিপি সুপ্রিমোর।
শনিবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার মেয়াদ শেষ হতেই, কোনও প্রস্তাবনা ছাড়াই, বিজেপিকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানান ভগৎ সিং কোশিয়ারি। তবে শিবসেনার বিরুদ্ধে “জনগণের রায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা”-র অভিযোগ তুলে বেরিয়ে আসে বিজেপি।
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ১৫০ আসনে জেতে বিজেপি, শিবসেনা জয় পায় ৫৬ আসনে, ফলে ২৮৮ আসনের বিধানসভায় আনায়সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছুঁয়ে পেলে শিবসেনা-বিজপি জোট। তবে শিবসেনা নির্দিষ্ট সময় অন্তর মুখ্যমন্ত্রী এবং ৫০-৫০ হারে ক্ষমতা ভাগাভাগির দাবি করে, তারা জানায়, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এনসিপির ঝুলিতে রয়েছে ৫৪টি আসন, এবং কংগ্রসের ৪৪টি আসন। সূত্র : এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাসন

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ