Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আরেকটি শিরোপার সামনে খুলনা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

অনেকটা একার লড়াইয়ে দলকে বড় লিড এনে দিলেন নুরুল হাসান। নিয়মিত অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাকের অনুপস্থিতিতে খুলনার নেতৃত্ব পাওয়া এই কিপার-ব্যাটসম্যান খেললেন অপরাজিত ১৫০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। এরপর জিয়াউর রহমানের দারুণ এক স্পেলে টালমাটাল ঢাকার দ্বিতীয় ইনিংস। দুইয়ে মিলে জাতীয় লিগে আবার শিরোপার সুবাস পাচ্ছে খুলনা।

শেষ রাউন্ডের ম্যাচে খুলনায় সোহানের দারুণ ইনিংসে ১০০ রানের লিড পায় খুলনা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকা বিভাগ ১০ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট! পরে তৃতীয় দিন শেষে তারা করেছে ৫ উইকেটে ১০২ রান নিয়ে। খুলনাকে হারাতে হলে শেষ দিনে অভাবনীয় কিছু করতে হবে ঢাকার।

সোহান দিন শুরু করেছিলেন ৫৬ রানে। আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান তুষার ইমরান এ দিন আউট হন আর ৭ রান যোগ করেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশের সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরির মালিক তুষারের ৮২ রানের ইনিংসটি এবারের আসরে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। এরপর অনেকটা একাই দলকে এগিয়ে নেন সোহান। খুলনার শেষ ৫ ব্যাটসম্যান মিলিয়ে করেছেন ৩ রান। কিন্তু ওই ৫ জনের সঙ্গে জুটিতেই সোহান তুলেছেন ৭৩ রান, তার নিজের অবদান তাতে ৬৯! শেষ উইকেটে আব্দুল হালিমকে নিয়ে যোগ করেন মহামূল্যবান ৫১ রান। সেখানে হালিমের রান ছিল শূন্য! তবে ৪২ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে দারুণ সঙ্গ দেন হালিম। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের নিজের অষ্টম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন সোহান ১৮১ বলে। এরপর তুলেছেন ঝড়। একশ থেক দেড়শতে যেতেই ছক্কা মেরেছেন ৬টি। তার ৫টিই মেরেছেন মোহাম্মদ শহিদের ২ ওভারে! শেষ পর্যন্ত ১৩ চার ও ৭ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২২৭ বলে ১৫০ রান করে।

আগের দিন দুই উইকেট নেওয়া শুভাগত হোম এদিন নেন তিনটি। তিন মিডল অর্ডার তুষার, নাহিদুল ইসলাম ও জিয়াউরকে নিয়ে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের সপ্তম ৫ উইকেট।

ঢাকা ম্যাচের শেষ দুই দিন খেলছে ১০ জন নিয়ে। দ্বিতীয় দিনে মাঠে সতীর্থ আরাফাত সানি জুনিয়রের গায়ে হাত তুলে শেষ দুই দিনের জন্য বহিষ্কার হন ঢাকার পেসার শাহাদাত হোসেন।

১০০ রানের লিড পেয়ে উজ্জীবিত খুলনা এরপর বোলিংয়েও শুরুটা করে অসাধারণ। পায়ে ক্র্যাম্প করায় প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া পেসার আব্দুল হালিম এ দিন বোলিং করতে পারেননি। একই কারণে মাত্র ২ বল করে মাঠ ছাড়েন দলের আরেক পেসার রুবেল হোসেন। মাঠে থাকা দলের একমাত্র পেসার জিয়াউর জ্বলে ওঠেন এই সুযোগে। তিন বলের ব্যবধানে তিনি ফেরান আব্দুল মজিদ ও শফিউল হায়াতকে। নিজের পরের ওভারে নেন তাইবুর রহমানের উইকেট। মাঝের ওভারে উত্তম সরকারকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার মইনুল হাসান। ম্যাচ বাঁচাতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ঢাকা। ইনিংস হার এড়াতে তখনও দরকার ৯০ রান!
৭৬ রানের জুটিতে ধাক্কা সামাল দেন রকিবুল হাসান ও অধিনায়ক শুভাগত হোম। ১১৪ বলে ৪২ রান করা শুভাগতকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাহিদুল ইসলাম। এরপর আরাফাতকে নিয়ে দিন পার করে দেন রকিবুল।

এদিকে মিরপুরে সেঞ্চুরি পূরণের পর বেশি দূর এগোতে পারলেন না শামসুর রহমান ও অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব। পরে দারুণ এক ইনিংসে দলকে লিড এনে দিলেন আল আমিন। তবে আট রানের জন্য পেলেন না সেঞ্চুরির দেখা। শেষ বিকেলে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই বরিশালের তিন উইকেট তুলে নিয়ে তাদের চাপে রেখেছে ঢাকা মেট্রো। তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ৩০ রান তুলেছে বরিশাল। ফজলে মাহমুদ ১৯ ও নুরুজ্জামান ১ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম ইনিংসে ৪৬৬ রান করা মেট্রোর চেয়ে ২২ রানে পিছিয়ে আছে তারা।

এছাড়া রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে প্রথম স্তরের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ২২৮ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে রংপুর। চার উইকেট হাতে রেখে তাদের লিড ২৪৮ রানের। আগের দিন বিকেলের বোলিং ধার সকালেও ধরে রাখলেন আরিফুল হক। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে গুটিয়ে দিলেন রাজশাহীকে। পরে ব্যাট হাতেও খেললেন আক্রমণাত্মক এক ইনিংস। সঙ্গে তানবীর হায়দারের অপরাজিত ফিফটিতে রাজশাহীর বিপক্ষে অনেকটা এগিয়ে রংপুর। ৫ উইকেটে ২২৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু রাজশাহীকে এদিন খুব বেশিদূর এগোতে দেননি আরিফুল। আগের দিন বিকেলে তিন উইকেট নিয়ে রংপুরকে লড়াইয়ে ফিরিয়েছিলেন। সকালে তুলে নেন আরও তিন ব্যাটসম্যানকে। সব মিলিয়ে ২৩.২ ওভারে ৪১ রান খরচায় নিয়েছেন ৬ উইকেট, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার আগের সেরা ছিল ৭৫ রানে ৬ উইকেট।
খুলনা-ঢাকা, খুলনা
ঢাকা ১ম ইনিংস : ২৭৯। খুলনা ১ম ইনিংস : ১২৮ ওভারে ৩৭৯ (আগের দিন ২৫২/৩) (রবি ৪৫, এনামুল ৫০, অমিত ২১, তুষার ৮২, নুরুল ১৫০*, নাহিদুল ১৬; শহিদ ১/১১৫, নাজমুল ২/১১৪, তাইবুর ১/৫২, শুভাগত ৫/৪৬)। ঢাকা ২য় ইনিংস : ৪৪ ওভারে ১০২/৫ (রকিবুল ৩৯*, শুভাগত ৪২, সানি জুনি. ৯*; জিয়াউর ৩/২৩, মইনুল ১/১৯, নাহিদুল ১/৩৫)।

বরিশাল-ঢাকা মেট্রা, মিরপুর
বরিশাল ১ম ইনিংস : ১০৮.২ ওভারে ৪১৪। ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস : (আগের দিন ২২৫/২) ১৪০.৩ ওভারে ৪৬৬ (রাকিন ২৩, শামসুর ১০৩, মার্শাল ১০৯, আল আমিন ৯২, জাবিদ ৬২*, আরাফাত ৩১; লিখন ১/৩২, মনির ২/১২৮, সোহাগ ৩/৯৮, ফজলে ২/২৬, সালমান ১/৩৫)।
বরিশাল ২য় ইনিংস : ১৬ ওভারে ৩০/৩ (নাফীস ১, সায়েম ৯, ফজলে ১৯*, শামসুল ০, নুরুজ্জামান ১*; সানি ২/১০, তাসকিন ১/৮)।

রাজশাহী-রংপুর, রাজশাহী
রংপুর ১ম ইনিংস : ২৭৪। রাজশাহী ১ম ইনিংস : (আগের দিন ২২৪/৫) ৮৬.২ ওভারে ২৫৪ (অভিষেক ৬৭, জুনায়েদ ৩৭, ফরহাদ ৭৫, সাব্বির ২২, দেলোয়ার ১৯*; আলাউদ্দিন বাবু ১/৪৫, সাজেদুল ২/৫৯, আরিফুল ৬/৪১)। রংপুর ২য় ইনিংস : ৬১ ওভারে ২২৮/৬ (জাবেদ ৩৩, সোহরাওয়ার্দী ১৭, তানবীর ৭২*, নাসির ১৭, আরিফুল ৪৮, রিশাদ ১৮*; দেলোয়ার ৪/৭৩, মুক্তার ২/৪৪)। *তৃতীয় দিন শেষে

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ