Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভেজাল ওষুধের সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত

হাইকোর্টের মন্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৭ এএম

মেয়াদোত্তীর্ণ ৩৪ কোটি টাকার ওষুধ ধ্বংস


ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রেতা এবং এর সঙ্গে জড়িতদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড কিংবা মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ‘ ‘মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রয়ে গৃতি কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের গতকাল বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামি ১২ ডিসেম্বর। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত আরো বলেন, ‘একই ফার্মেসিতে একাধিকবার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেলে নিয়মিত মামলা দায়ের করতে হবে। ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ফার্মেসির বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পর্যাপ্ত নয়। ভেজাল ওষুধের সঙ্গে জড়িতদের যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত।’ এসময় বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে চিকিৎসকদের কমিশন খাওয়ারও সমালোচনা করেন হাইকোর্ট।

এর আগে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গত দুই মাসে দেশে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ,নকল ও ভেজার ওষুধ সংরক্ষণের অভিযোগে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ১৩ হাজার ৫৯৩টি ফার্মেসি পরিদর্শন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫৭২টি মামলা দায়ের করে। এতে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একইসঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল ও ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণের দায়ে দুটি ফার্মেসি সিলগালা করা হয়। ওই দুই মাসের মধ্যে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়। পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, আদালত শুনানি শেষে আগামি ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরকে ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধের কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দে দেন। আদালত ওষুধ প্রশাসনসহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে বলেছেন যেন বাংলাদেশের বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি না হয়। ওষুধ শিল্প সমিতিকে বলেছেন ইংরেজির পাশাপাশি যেন বাংলায় মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য লেখা থাকে, সেটা বিবেচনা করতে।’

উল্লেখ্য, দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে গত ১১ জুন ‘ঢাকায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ’ শির্ষক প্রতিবেদন কাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন গত ১৭ জুন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৮ জুন মেয়াদোত্তীর্ণ সব ওষুধের বিক্রি বন্ধ ও তা একমাসের মধ্যে ধ্বংস করে ফেলার পর হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর রেজিস্টার্ড লাইসেন্সপ্রাপ্ত ওষুধ কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়ে বাজার থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রত্যাহার করে ধ্বংসের আদেশ দেয়। সেই আদেশ প্রতিপালন করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন। সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।

 

 

 



 

Show all comments
  • ahammad ২০ নভেম্বর, ২০১৯, ২:১৮ এএম says : 0
    আদালতের মতামতের সঙ্গে ১০০% সহমত পোষন করলাম। যদি এমন আইন কার্য্যকর হয়,তাহলে মানুষের জীবন রখ্খাকরী ঔষধ নিয়ে আর কেউ এমন জগন্য অপরাধ করবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ