Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জাপান ও সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে

আফতাব চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বর্জ্য, পরিবেশ বিষয়ক একটি সমস্যা। পৃথিবীর সবক’টি দেশের বড় বড় শহরে প্রতিদিন যে পরিমাণে বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে তা অপসারণে নগর কর্তৃপক্ষকে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে বর্জ্য ডাম্পিংয়ের স্থান নিয়ে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে শহরাঞ্চলে বর্তমানে ডাম্পিংয়ের জন্য মারাত্মক স্থানাভাব দেখা দিয়েছে। উন্নত বিশ্ব তাদের উৎপাদিত বর্জ্য জাহাজে করে উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশে কিংবা সমুদ্র সীমানায় অবৈধভাবে নিক্ষেপ করে থাকে। পরিবেশ বিজ্ঞানীসহ মানুষের চিন্তাধারা চলছে বর্জ্যরে স্বাস্থ্যসম্মত অপসারণের পাশাপাশি কিভাবে এগুলো মানুষের উপকারে লাগানো যায়, তা নিয়ে। বিভিন্ন দেশে তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু কিছু বর্জ্যকে পুনরাবর্তনের দ্বারা নতুন কিছু দ্রব্যসামগ্রী তৈরি করছে, যেমন-বৃটেন তার পরিত্যক্ত টায়ার থেকে এক প্রকার তেল উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। আধুনিক বিশ্বে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি নতুন ধারা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্য থেকে বিভিন্ন উৎপাদনকে পৃথক করে নানা প্রকার ব্যবহার যোগ্য দ্রব্যাদি তৈরি করতে শুরু করেছে।
জাপান, প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপরাষ্ট্র, ছবির মতো সুন্দর দেশটি। পৃথিবীর বাসযোগ্য দেশগুলোর তালিকায় এর অবস্থান নবম। বাসযোগ্য শুধু আর্থ-সামাজিক কারণেই নয়, বাসযোগ্য এর নিটোল ও নিখুঁত ঝকঝকে বাহ্যিক রূপের কারণেও। এ প্রসঙ্গে বলতে হয় দেশের যাবতীয় বস্তুর ডিসপেসাল সিস্টেমও তার প্রয়োগের বিষয়ে। এখানে বর্জ্য ফেলা হয় নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে। একেক ধরনের বর্জ্য ফেলার জন্য একেক ধরনের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। সবাই এ নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য। রোজকার রান্নাঘরের দাহ্য আবর্জনা ফেলা হয় স্বচ্ছ ৪৫ লিটার সাইজের পলিথিনের ব্যাগে। এ ব্যাগের লেখাগুলো লাল। পানীয় পেট বোতল ফেলা হয় একই রঙ্গের নীল রঙ্গের ছবি ছাপা ব্যাগে; কিন্তু এই পেট বোতলগুলোকে চ্যাপ্টা করে ঢোকানো হয় যাতে জায়গা কম লাগে।এভাবে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাগে ঢোকানোর কারণ হল: এসব আবর্জনাই আবার রিসাইক্লিং করা হয় এবং সে সময় যেন এগুলোকে পৃথক করতে পুনরায় লোকবল না লাগে যা জাপানে খুবই ব্যয়বহুল। এই আবর্জনার মধ্যে রান্নাঘরের বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। ব্যবহৃত পেট বোতল থেকে তৈরি করা হয় নতুন পেট বোতল; আর ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে নতুন প্লাস্টিক। টিনের ক্যানগুলো রাখা হয় সবুজ লেখা ছাপা ব্যাগে। এভাবে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাগে জিনিস না ভরা হলে ময়লা যারা সংগ্রহ করেন তারা ঠিকই তা বের করে ফেলতে পারেন যে, কোন ফ্ল্যাট থেকে এরকম নিয়ম ভাঙ্গা হচ্ছে। এ অপরাধে জরিমানা করা হয় মোটা অংকের টাকা
প্রতিটি জায়গায় লোকালয়, অফিস, দোকান বা স্টেশন যেখানে ডাস্টবিন আছে, সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাগগুলো সেখানে রেখে আসতে হয়। অত:পর নির্দিষ্ট সময়ে আবর্জনা নেয়ার জন্য ঝকঝকে ট্রাক আসে এবং সেগুলো থেকে নেমে আসেন ইউনিফর্ম, গ্লাভস ও মুখোশপরা কর্মীরা। তারা ব্যাগগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যান। এছাড়াও প্রায় সবক’টি শপিং মল অথবা কনভেনিয়েন্ট শপেই রয়েছে বড় বড় স্টেনলেস স্টিলের বিভিন্ন ধরনের আবর্জনার জন্য নির্দিষ্ট বিভিন্ন বা বাস্ক যাতে খুচরা আবর্জনা যেমন ক্যান, কন্টেনার, কার্টন,পেট বোতল এসব নিয়ে ফেলে আসা যায়। আপনি যদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনের জন্য অপেক্ষা করতে চান না, তবে এসব বিনে ফেলে আসতে পারেন ময়লা-আবর্জনা। পলিথিনের এই ৪৫ লিটার সাইজৈর নির্দিষ্ট রংয়ের ব্যাগগুলো সব শপিং মলেই বিক্রয় হয়। এই ব্যাগের দাম পুরোটাই ট্যাক্স অর্থাৎ এর মূল্য শপিংমল বা এর প্রস্তুতকারক পাবে না, পুরোটাই পাবে মিউনিসিপ্যালিটি।
জাপানে পার্ক জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত। সব জায়গাতেই আছে আবর্জনা ফেলার বিন, অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ সর্বত্র। তাদের স্কুলের খুদে ছাত্ররাই স্কুল পরিস্কার করে, বাগান করে যেন ছোটোবেলা থেকেই তাদের এ ধারণা মনে গেঁথে যায় যে, আমি যেখানে থাকি, যেখানে পড়ি, যেখানে কাজ করি, সেটা পরিস্কার করার দায়িত্ব শুধুই আমার, অর‌্য কারো না। অফিস, আদালতে ক্লিনিং স্টাপ থাকলেও, তারা শুধু সিঁড়ি, বাথরুম ইত্যাদি পরিস্কার করে। রুম যদি কখনো নোংরা মনে হয়, তবে অফিসারদের যে কেউ রুমে রাখা ভ্যাকিউম ক্লিনার দিয়ে তা পরিস্কার করে ফেলে। যার ফলে তাদের স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত তো অবশ্যই, এমনকি রাস্তাঘাট, পার্ক, পাবলিক প্লেস-কোথাও এক টুকরো কাগজ বা ধুলো কেউ দেখতে পাবে না। দেশটা হয়েছে পটে আঁকা ছবির মতো ঝকঝকে পরিস্কার, নিটোল ছবির মতো যা না দেখলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
অল্প ক’বছরের মধ্যে যুগান্তকারী পরিবর্তন করে পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছে যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সফল সিঙ্গাপুর। যেই সিঙ্গাপুরকে আপনারা চেনেন অনেক বছর আগে ওই শহরটি সে রকম ছিল না মোটেই। একটা নোংরা শহর থেকে তারা যদি সম্পূর্ণ পালটে ফেলতে পারে সিঙ্গাপুরকে, তা হলে আমরা পারব না কেন? অনেকেরই হয়তো মনে হচ্ছে যে, দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই-আবর্জনার কোনো গতি হল না, অথচ সুন্দর সুসজ্জিত হবার স্বপ্ন দেখছি। মানুষের স্বভাবও সহজে বদলায় না। জানালা দিয়ে মাথার চুল থেকে শুরু করে ডাবও কলার খোসা ছুড়ে ফেলতে দেখা যায়। নিজের সমাজ বা পাড়া সম্বন্ধে আপন বোধ নেই বেশির ভাগ মানুষেরই। ময়লা বাড়ির বাইরে কোথাও একটা জায়গায় ফেলে দিলেই যেন দায়িত্ব চুকে গেল। ঠিক এখানেই আসছে নানা স্তুরের আচরণের প্রশিক্ষণ আর জরিমানার ব্যবস্থা। ময়লা কোথায় আর কীভাবে ফেলতে হবে আর কেনই বা সে রকমভাবে ফেলতে হয় তার শিক্ষা আমাদের স্কুল-সিস্টেম থেকে অফিস-কাছারি-সর্বত্র শেখাতে হবে।
মানুষ তার প্রয়োজনীয় দ্রব্য তৈরি এবং উনুন্নত জীবন যাত্রার মান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সম্পদের সমাবেশ ঘটায় এবং এ সম্পদের রূপান্তরের মাধ্যমে তার প্রাপ্তি নিশ্চিত করে। এ কর্ম প্রক্রিয়ায় নানা রকম বর্জ্য পরিবেশ বিযুক্ত হয়। এছাড়া মানুষের দৈনন্দিন কার্যকলাপের ফলে প্রতিনিয়তই বাড়ি-ঘর, হাসপাতাল, হাঁটবাজার, কসাইখানা, শিল্প-কারখানা প্রকৃতি থেকে নানা প্রকার বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে। ছেঁড়া কাগজ, কাপড়, চট, শুকনা ও পঁচা ঘাসপাতা, পরিত্যক্ত টায়ার, তরিতরকারীর, পরিত্যক্ত আবর্জনা, ডাবের খোসা, ফলমূল, পলিথিন ব্যাগ, শিশি-বোতল, কন্টেইনার ইত্যাদি কঠিন বর্জ্য শহরের মানুষের জীবন যাত্রায় প্রভাব ফেলছে। যত্রতত্র এগুলো নিক্ষেপ পরিবেশকে নোংরা করাসহ নানা রকম রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে। এছাড়া বসতবাড়ি, স্কুল-কলেজ, শিল্প কারখানা থেকে টয়লেটজাত হাজার হাজার টন মলমূত্র নির্গত হচ্ছে যার স্বাস্থ্যসম্মত অপসারণ অপরিহার্য। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করে। নদী, খালের উপর ল্যাট্রিন তৈরি করে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে পানিকে দূষিত করে। এতে দেখা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ৪৫ হাজার টন মলমূত্র পানিতে মিশে থাকে। শুধুমাত্র সিলেট শহরে প্রতিদিন ৯০ টন কঠিন বর্জ্য উৎপাদন করে। এ মধ্যে মাত্র ২০ টন পৌর কর্তৃপক্ষ অন্যত্র সরিয়ে থাকে। বাকী বর্জ্য বিভিন্ন পানিধার, নিচু ও খালি জমি, নালা নর্দমা এবং পুকুরে স্তুপীকৃত হয়।
যেখানে সেখানে বর্জ্য নিক্ষেপ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বর্জ্য পরিবেশ নোংরা করে, পঁচে গেলে চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, মশামাছির আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে। সর্বোপরি রোগ জীবাণু ছড়িয়ে মানুষকে রোগাক্রান্ত করে থাকে। আবার বর্জ্য নিঃসৃত ইনফ্লয়ন্টে চুঁইয়ে মাটির গভীরে ভূ-গর্ভস্থ পানিকে দূষিত করে। বর্তমানে মাটি দূষনের প্রধান কারণ হচ্ছে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার এবং জীবাণুমুক্ত বর্জ্য পদার্থ। এক জরিপে দেখা গেছে, খোদ ঢাকা শহরে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টি পলিথিন ব্যাগ তৈরির কারখানা স্থাপিত হয়েছে যাতে প্রতিদিন প্রায় ৭০-৭৫ লাখ ব্যাগ উৎপাদিত হচ্ছে। পলিথিন ব্যাগ বিভিন্ন অনুজীব পঁচাতে পারেনা বিধায় জমিতে তা জমা থেকে যায় এবং জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে দেয়। এছাড়া ড্রেন, নালা, নর্দমা, পানি নিষ্কাশন নালাতে জমে থেকে দ্রুত পানি সরে যেতে ব্যাঘাত ঘটায়।
বাংলাদেশে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের অন্যতম কেন্দ্রীয় এলাকা হাজারীবাগ। বহু বছর আগে ঢাকা শহরের বাইরে একটি অনাবাসিক এলাকার সাথে ট্যানারিসমূহ স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু কালক্রমে তা ধানমন্ডির মত গুরুত্বপূর্ণ অভিজাত আবাসিক এলাকার সাথে সংযুক্ত হয়। হাজারীবাগস্থ ট্যানারী ইউনিটগুলোর উৎপাদন প্রক্রিয়া ছিল অতি প্রাচীন এবং এগুলোর একটিতেও বর্জ্য শোধনাগার বা ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ছিল না। নানা ধরনের ক্যামিক্যাল ও পঁচনশীল বর্জ্য মিশ্রিত ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার ঘনমিটার পানি প্রতিদিন বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলা হতো, যার ওজন প্রতিদিন প্রায় ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার কেজি। কঠিন বর্জ্যের বার্ষিক পরিমাণ হতো ১৮ হাজার হতে ২৩ হাজার টন। বর্জ্যরে প্রভাবে এলাকায় টিনের নির্মিত বাড়ী খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতো। গাছপালা প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তো। হাজারীবাগের পিছন দিকে ঢাকা শহর রক্ষা বাঁধের কোণা ঘেঁষে যে খাল, তাতে পানি নেই, আছে পঁচা চামড়ার স্তূপ, ট্যানারির বর্জ্য আর ক্যামিকেল মিশ্রিত কালো পানি। হাজারীবাগের রাস্তায় হাটলে ট্যানারির দুর্গন্ধে চলাফেরাতে বিঘœ ঘটতো নাকে রোমাল বা হাত দিয়ে চলতে হতো। এলাকার বড় বড় খোলা ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত হতো ট্যানারির বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত রঙ বেরঙের পানি। কোন পানি ঘন নীল, কোনটা চুনের পানির মত ঘোলা, কোনটা হলুদ বা লাল। ক্যামিকেলের গন্ধ আর চামড়া পঁচা গন্ধে সর্বত্র বাতাস ভারি হয়ে থাকতো। উল্লেখ্য, হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প এখন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেখানে ধলেশ্বরী নদীর পানি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে একইভাবে।
সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ করলে তা মানুষের কর্মসংস্থানে অনেক উপকারে আসে। অন্যদিকে পঁচনশীল বর্জ্যরে দুর্গন্ধ এবং বর্জ্য নিষ্কাশন স্থাপনের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। কলকাতায় কেন্দ্রীয় গ্লাস ও সিরামিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান শিল্পজাত বর্জ্য ব্যবহার করে স্যানিটারী সামগ্রী, ইনসুলেটর, টাইলস, গ্লেজড টাইলস এবং লাল ইট তৈরি করছে। নারিকেলের ছোবড়া ব্যবহার করে শ্রীলংকা তৈরি করছে রুফিং পেপার। ফিলিপাইন কলার খোসা থেকে উন্নতমানের প্যাকিং সামগ্রী তৈরি করছে। কলাগাছের কান্ড থেকে উত্তর ভারতে তৈরি হচ্ছে ফাইল কভার, ফাইল বোর্ড, সিমেন্টের বস্তা।
বর্জ্য থেকে পুনরাবর্তনযোগ্য উপাদান পৃথক করে পুনরাবর্তন শিল্প গড়ে তোলা যেতে পারে আমাদের দেশেও। বর্জ্য থেকে কম্পোস্ট সার ও বায়োগ্যাস তৈরি করা যায়। টোকাই, ছিন্নমূল মানুষকে কাজে লাগিয়ে তাদের আয়ের সংস্থান করা সম্ভব। পুনরাবর্তনের কাজে লাভজনকভাবে নারকেল, ধান, কলা, কৃষিজাত, পৌর এবং শিল্পজাত বর্জ্য ব্যবহার করা যায়। উদাহরণ হিসাবে পাকিস্তানের চামড়া বোর্ডের কথা বলতে পারি। পাকিস্তানের ট্যানারির বর্জ্য ব্যবহার করে চামড়ার বোর্ড তৈরি হচ্ছে ব্যাপক হারে এবং রপ্তানিও হচ্ছে সারাবিশ্বে। জাপানে প্রতি ১ লক্ষ লোকের পৌর বর্জ্য থেকে ৪ লক্ষ রোল টয়লেট পেপার তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের শহরে উৎপাদিত বর্জ্যরে স্বাস্থ্যসম্মত অপসারণের পাশাপাশি এগুলোর লাগসই পুনরাবর্তন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এর মাধ্যমে শিল্প স্থাপন করে বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপর্জন করতে পারি, অসংখ্য বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। আমরা অতি সহজেই নানা রকম শিল্প গড়ে তুলতে পারি। এর দ্বারা আমাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আয়ও বৃদ্ধি পাবে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থকে লাভজনক পণ্যে রূপান্তরিত করা যায় অতি সহজেই, প্রয়োজন উদ্যোগ আন্তরিকতা ও দেশপ্রেম।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

 



 

Show all comments
  • jack ali ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:২২ পিএম says : 0
    I have noticed so many constructive article in the news paper columns-but unfortunately our people those who govern the country they are absolutely ignorant- as to how to run a country---they are busy how to stay in power and loot our tax payers money----harassing people by falsely accusing people which they never committed.....
    Total Reply(0) Reply
  • মুহাম্মাদ রনি ৯ আগস্ট, ২০২০, ৯:৩১ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের বর্জ্য অব্যবস্থাপনা আমাকে অনেক অনেক বেশি কষ্ট দেয় ভাই।দুঃখে কলিজা ফেটে যায় মানুষের রুচি আর ময়লা পরে থাকতে দেখলে।কষ্টে অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করে কিন্তু এ লেখার স্বার্থকতা তো দেখছি না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবেশ

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন