Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উত্তাপ টের পাচ্ছে ভারতও

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ভারতীয় ড্রেসিংরুমের ঠিক ওপরের গ্যালারিতে যেখানে ‘ফাইভ মিনিটস বেল’ ঝুলছে সেখানে নিজ নিজ দেশের পতাকা ওড়াচ্ছেন ভারতের ‘তারকা’ সমর্থক সুধীর কুমার আর বাংলাদেশের ‘টাইগার’ শোয়েব। ঠিক সেই মুহূর্তেই অনুশীলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরছিলেন বিরাট কোহলি। ভারত অধিনায়কের চোখ ঠিকরে বেরুচ্ছিলে জেল্লা। যা আগে দেখা যেত ক্রিকেটের রোমাঞ্চকর পাক-ভারত লড়াইয়ে। কোহলি বুঝতে পারছেন, ইডেনে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারতের দিবারাত্রির টেস্ট ঘিরে শুধু গ্যালারিতে নয়, দুই দেশই কাঁপছে গোলাপি-জ্বরে!

এই উত্তেজনা-উত্তাপ একটা সময় ভারত-পাকিস্তানের লড়াইয়ে বেশি দেখা যেত। কোহলিদের এখন নিয়মিত খেলা হয় না চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে। আইসিসির টুর্নামেন্টে যা একটু দেখা হয়, সেখানে দুই দলের লড়াই আগের মতো ঠিক জমে না। উপমহাদেশীয় ক্রিকেটীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাকিস্তানের জায়গাটা ধীরে ধীরে নিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ। ইডেনে গোলাপি বলের টেস্ট ঘিরে যে আগ্রহ-উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে সেটির সঙ্গে কোহলি তাই তুলনা করছেন ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটার সঙ্গে।

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইডেনেই ভারত খেলেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। তিন বছর পর ইডেনে আরেকটি আলোচিত ম্যাচ। প্রতিপক্ষ এবার বাংলাদেশ। উপলক্ষ, আয়োজনের তুলনা করতে গিয়ে কোহলি তাই বলছেন, ‘এখানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে যেমন অনুভব হয়েছিল এখনো তাই মনে হচ্ছে। গোলাপি বলের টেস্ট নিয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। তখনো ইডেনে এমন উন্মাদনা, রোমাঞ্চ তৈরি হয়েছিল। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এসেছিলেন। পুরো স্টেডিয়াম পূর্ণ ছিল। আমার মনে হয় এবারও পরিবেশ একই থাকবে। ভীষণ স্নায়ুচাপ থাকবে, একই সঙ্গে রোমাঞ্চকরও হবে। অবশ্যই ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এটা বিরাট উপলক্ষ। আমরা সৌভাগ্যবান, অসাধারণ এই শুরুতে আমরা থাকতে পারছি।’

টেস্টকে জনপ্রিয় করে তোলার উদ্দেশে দিবারাত্রির টেস্ট আয়োজন করছে ক্রিকেট বোর্ডগুলো। নানা কারণে ইডেনে গোলাপি বলের টেস্ট ভীষণ উদ্দীপনা, উন্মাদনা তৈরি করেছে। কিন্তু বারবার তো আর এমন উপলক্ষ আসবে না। আসবে না বলেই প্রশ্নটা আসছে, গোলাপি বলের টেস্টে কি সত্যি জনপ্রিয় হবে? উত্তরটা পাশ কাটিয়ে এই ম্যাচেই থাকতে চাইলেন সময়ের সেরা এই ব্যাটসম্যান। জানালেন প্রস্তুতির ঘাটতির আক্ষেপও।

ভারতে বাংলাদেশের সিরিজের সূচির সময়ও গোলাপি বলের টেস্টের কোন আলাপ হয়নি। সৌরভ গাঙ্গুলি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হওয়ার পর সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটিকে গোলাপি বলে দিবারাত্রির করার প্রস্তাব দেন, যাতে সায় দেয় বাংলাদেশ। এই টেস্টের আগে প্রস্তুতি ঘাটতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল বাংলাদেশ। মুখে কিছু না বললেও হুট করেই একটা গোলাপি বলের টেস্ট নামার আগে নিজেদের অস্বস্তি প্রকাশ করছিলেন ক্রিকেটাররা। অন্তত একটা প্রস্তুতি ম্যাচের অভাব বোধ করছিলেন বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এবার ভারত অধিনায়ক সুনির্দিষ্ট করে বললেন, কখন হতে পারত একটা প্রস্তুতি ম্যাচ, ‘আমার মনে হয় এটা নির্ভর করে কখন টেস্টটা হচ্ছে। যদি প্রথমে এটা হতো (গোলাপি বলের টেস্ট) তাহলে সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ করা যেত। একটা হতো লাল বলের প্রস্তুতি ম্যাচ, আরেকটা গোলাপি বলের।’

১৪ নভেম্বর থেকে ইন্দোরে শুরু হয় দুই দলের প্রথম টেস্ট। পাঁচদিন গড়ালে ওই টেস্ট শেষ হওয়ার কথা ১৮ নভেম্বর। ২২ নভেম্বর থেকেই সূচি করা আছে আরেকটি টেস্টের। এই সময় তাই আর রাখা যায়নি কোন প্রস্তুতি ম্যাচ। প্রথম টেস্ট অবশ্য তিনদিনেই শেষ হওয়ায় গোলাপি বলে বাড়তি অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে দুদল। তবে কোহলি মনে করেন এটাই যথেষ্ট নয়, কলকাতা টেস্টের আগে বাড়তি সময় আর প্রস্তুতি ম্যাচের দরকার ছিল ভীষণ, ‘দ্বিতীয় টেস্ট গোলাপি হওয়ায় দুই টেস্টের মাঝখানে বিরতি থাকা দরকার ছিল। এবং সেই বিরতির মধ্যে গোলাপি বলের একটা দিবারাত্রির প্রস্তুতি ম্যাচ দরকার ছিল। সিরিজের আগে হলে এটা কোন মানে বহন করত না। যাইহোক না কেন একটা প্রস্তুতি ম্যাচ এই টেস্টের আগে হওয়া দরকার ছিল। এবং এই টেস্টের আগে পর্যাপ্ত সময় থাকা দরকার ছিল।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ