Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্প্রসারিত পানামা ক্যানেল খুলছে রোববার

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক ঃ পানামা ক্যানেলের সম্প্রসারিত অংশটি আগামী রোববার খুলে দেয়া হবে। শিপিং খাতের ভয়াবহ মন্দা সময়ে ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে। পানামার প্রসারের ফলে নিকট ভবিষ্যতে শিপিং খাতের কোনো উন্নতি না হলেও দীর্ঘমেয়াদে পশ্চিমা বিশ্বের বাণিজ্যের চালচিত্র পাল্টে যেতে পারে।
এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পরিবহনের এক-তৃতীয়াংশই পানামা খালের মধ্য দিয়ে পরিবহন করা হয়। শিপিং খাতের মন্দার কারণে বড় কোম্পানিগুলো নিজেদের জাহাজ বহরের কলেবর সংক্ষিপ্ত করছিল। আগের চেয়ে কমসংখ্যক কিন্তু আয়তনে বড় জাহাজ ব্যবহারে জোর দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় পানামা ক্যানেল সম্প্রসারণের বিকল্প ছিল না।
নয় বছরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৫৪০ কোটি ডলার। ক্যানেলে তৃতীয় একটি লেন সংযোজন করা হয়েছে। নতুন লেনটি বিরাটকায় জাহাজ চলাচলের উপযোগী। বিদ্যমান লেনে যেসব জাহাজ পাড়ি দেয়, সেগুলো ৫ হাজার কনটেইনার বহন করতে পারে। নতুন লেনে পাড়ি দিতে পারবে ১৪ হাজার কনটেইনারবাহি জাহাজ। এর ফলে ছোট জাহাজগুলোয় যে পণ্যজট লাগত, তা নিরসন সম্ভব হবে।
সম্প্রসারণের ফলে মিসরের সুয়েজ খালের সঙ্গে পানামা ক্যানেলের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে আসতে পণ্যবাহী জাহাজের পাঁচদিন সময় সাশ্রয় হবে। আটলান্টিকে পৌঁছাতে এসব জাহাজকে আর কেপ হর্ন ঘুরে যেতে হবে না।
পানামা ক্যানেল সম্প্রসারণের ফলে ২০২০ সাল নাগাদ এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কনটেইনার পরিবহনের ১০ শতাংশ পশ্চিম উপকূল ছেড়ে পূর্ব উপকূলের মার্কিন বন্দরগুলোয় স্থানান্তর হবে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ ও সিএইচ রবিনসন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
সম্প্রসারণের ফলে শিপিং খাতের সব সমস্যা একেবারে মিটে যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের যেসব বন্দর বড় জাহাজ ও বাড়তি পণ্য প্রাপ্তির আশায় শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে, তাদের সবাই এককভাবে লাভবান হবে না।
দ্য আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব পোর্ট অথরিটিজের মতে, ২০২০ সাল নাগাদ বন্দরগুলো বড় জাহাজ ধারনের সক্ষমতার জন্য প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণ আমেরিকান কনটেইনার টার্মিনালগুলোও সম্প্রসারণের কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের সব বন্দরের সক্ষমতা এক রকম নয়। বাল্টিমোর, মিয়ামি ও নরফোক বন্দর বড় জাহাজের জন্য প্রস্তুত হলেও অন্য বন্দরগুলো এখনো সে সক্ষমতা অর্জন করেনি। জর্জিয়ার সাভানা ও সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটন বন্দরে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। কিছু বন্দরে অবকাঠামো সংকট রয়েছে।
বড় জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মতো ক্রেন ও ডকিং স্পেসের অভাব রয়েছে। নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি বন্দরের সবচেয়ে বড় তিনটি টার্মিনালই বেয়ন ব্রিজের দেয়ালের কারণে বড় জাহাজগুলোর ব্যবহার উপযোগী নয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৩০ কোটি ডলার ব্যয়ে ব্রিজটি ৬০ ফুট উঁচু করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
বৈশ্বিক বাণিজ্যে নিজের গুরুত্ব ধরে রাখতে পানামা ক্যানেলের সম্প্রসারণ অপরিহার্য ছিল। সক্ষমতার বিচারে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৬ শতাংশ অর্থাৎ ৩৪ কোটি টন পণ্য গত বছর পানামা ক্যানেলের মধ্য দিয়ে পারাপার হয়েছে। কিন্তু তার পরও পানামা ক্যানেল তিন বছরে সুয়েজ খালের কাছে বার্ষিক আয়ের ১০-১৫ শতাংশ হারিয়েছে। সম্প্রসারণ কাজ শেষ করতে পানামা ক্যানেল অপারেটর কর্তৃপক্ষ জাপান, ইউরোপ ও আমেরিকার ঋণদাতাদের কাছ থেকে ২৩০ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে।
পানামা ক্যানেলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্ল্যানিং অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) অস্কার বাজান আগামী বছর ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ আয় বৃদ্ধির আশা করছেন। সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সম্প্রসারিত পানামা ক্যানেল খুলছে রোববার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ