Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তৃণমূলের হ্যাটট্রিক! সবুজ ঝড়ে উড়ে গেল বিজেপি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৯, ৩:৪৩ পিএম

বাম-কংগ্রেস জোট, বিজেপির দাপাদাপি - কোনও কিছুই ঠেকাতে পারল না তৃণমূল কংগ্রেসকে।

মানুষ যে উন্নয়নের পক্ষে এবং হিংসাত্মক রাজনীতির বিপক্ষে তা আরও একবার প্রমাণিত বাংলায়।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপনির্বাচনের তিনটি আসনেই বিপুল ভোটে জিতল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।

ফলপ্রকাশের আগের দিনও দিল্লিতে গিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে মুকুল রায় দাবি করেছিলেন যে তিনটি আসনেই জিতবে বিজেপি। এই প্রতিশ্রুতি যে ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই নয়, তা প্রমাণিত হতে বেশি সময় লাগেনি। বৃহস্পতিবার সকালে ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর কালিয়াগঞ্জে কিছুটা এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে।

৫৬,০০০ ভোটে পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২৩০৪ ভোটে জয়লাভ করেন তৃণমূল প্রার্থী তপন দেব সিংহ। জন্মলগ্ন থেকে এই প্রথম কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় জিতল ঘাস-ফুল। এনআরসি, হিংসা-সহ নানা ইস্যুর পর মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় তা বিধানসভার উপনির্বাচনে কাজে আসেনি। খড়গপুর সদরও এর আগে কখনও তৃণমূলের হাতে আসেনি। সেখানেও এ বার সবুজ হাওয়া। প্রেস্টিজ ফাইটে ২০,৮১১ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা স্থানীয় পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। করিমপুরে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারের জয় নিশ্চিত বলে দাবি করেছিলেন মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ। সেখানেও ফল উলটো হয়েছে। করিমপুরে শুরু থেকেই অনেকটা এগিয়ে তৃণমূল।

কালিয়াগঞ্জ, খড়্গপুরে দলীয় প্রার্থীদের জয় ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। করিমপুরেও জয় কার্যত সময়ের অপেক্ষা। উপনির্বাচনে অভাবনীয় এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দাগলেন বিজেপির ‘ঔদ্ধত্য ও অহংকার’-এর বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার তিনি ফের সরব হন জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি)-র বিরুদ্ধেও।

মাত্র ছয় মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর-কালিয়াগঞ্জে পিছিয়ে থেকেও দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বিপুল ভোটের এই জয়কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি এই জয়কে রাজ্যের মানুষকে উৎসর্গ করেছেন। পাশাপাশি তার নতুন স্লোগান, ‘তিনে-তিন, বিজেপিকে বিদায় দিন।’

তিন কেন্দ্রেই এনআরসি যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে, সে কথা বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। ভোটের ফল মোটামুটি স্পষ্ট হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওদের ঔদ্ধত্য, অহংকারকে মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি। যখন তখন যে কোনও রাজ্যে যা খুশি করছে। বিজেপি কখনও এনআরসি, কখনও অন্য কিছু নিয়ে যা খুশি প্রচার করছে। এই মানুষরাই দীর্ঘ দিন ধরে ভোট দিয়েছেন, এমপি-এমএলএ বানিয়েছেন, সমস্ত কাজ করেছেন। আর এখন ওরা (বিজেপি) বলছে, নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে।’ এর সঙ্গে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির খারাপ হাল। মানুষ কাজ পাচ্ছেন না, উল্টো কাজ হারাচ্ছেন। যুব সমাজের কাছে কোনও দিশা নেই।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন আরও বলেন, ‘‘৯৮ সালে দল তৈরি হওয়ার পর থেকে গত ২১ বছর ধরে আমরা কোনও দিন কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুর আসন জিততে পারিনি। এ বার মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। এটা মানুষের জয়। তাই মানুষকেই এই জয় উৎসর্গ করছি আমরা। মানুষের রায়ই বড় রায়, তার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।’ মমতার কথায়, ‘দলের কর্মীরা সবাই মন-প্রাণ দিয়ে কাজ করেছেন। সবাই কাজ করেছেন। তাঁদের এই পরিশ্রমেই জয় এসেছে।’

মাত্র ৫ মাস আগে লোকসভা ভোটের নিরীখে খড়্গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ— দুই কেন্দ্রেই বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। খড়্গপুরে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ এগিয়ে ছিলেন ৪৫ হাজার ১৩২ ভোটে। অন্য দিকে রায়গঞ্জ লোকসভার অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী এগিয়ে ছিলেন ৫৬ হাজার ৭৬২ ভোটে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘এত বিপুল ব্যবধান অতিক্রম করে জেতাটা বিরাট ব্যাপার। এটা দলের কর্মীদের একাগ্রতা এবং মানুষের প্রতি বিশ্বাস রাখার ফসল।’ সূত্র: টিওআই, ইন্ডিয়া টুডে।



 

Show all comments
  • Md Jashim ২৮ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৪২ পিএম says : 0
    তিনে তিন বিজেপিকে বিদায় দিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পশ্চিমবঙ্গ

১ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ