Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খুলনা শিপইয়ার্ডে ৫টি মাঝারী মাপের যুদ্ধ জাহাজ নির্মান কাজের সূচনা করলেন নৌ বাহিনী প্রধান

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৭:৩৫ পিএম

খুলনা শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জন্য ৫টি মাঝারী মাপের যুদ্ধ জাহাজ নির্মান কাজের সূচনা করেছেন নৌ বাহিনী প্রধান এ্যডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী এনবিপি, ওএসপি, বিসিজিএম, পিসিজিএম, বিসিজিএমএস, এনডিসি, পিএসসি-বিএন। চীনা কারিগরি সহায়তায় নির্মিতব্য এসব পেট্রোল ক্রাফট দেশের উপক’লীয় এলাকায় নিয়মিত টহল প্রদান সহ চোরাচালান বিরোধী অভিযান, দূর্ঘটনা পরবর্তি উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম ছাড়াও মৎস্য সম্পদ সংরক্ষন এবং যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ পরবর্তি উদ্ধার ও ত্রান তৎপরতা সহ পরিবশে দুষন প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভ’মিকা পালন করবে । নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রনাধীন খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোপূর্বে আরো ৫টি পেট্রাল ক্রাফট ছাড়াও ২টি বড় মাপের যুদ্ধ জাহাজ নির্মান অত্যন্ত সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেছে। সোমবার ৫টি প্রেট্রোল ক্রাফট-এর কিল লেয়িং উপলক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ডের সবুজ চত্তরে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন এম সজেদুল করিম-বিএন’এর সভাপতিত্বে এক অনুষ্ঠানে সহকারী নৌ বাহিনী প্রধান (ম্যাটেরিয়েল) রিয়ার এডমিরাল এম মঈনুল হক, মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম মোজাম্মেল হক এবং কমান্ডার খুলনা নেভাল এরিয়া রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা ছাড়াও শিপইয়ার্ডের জেনারেল ম্যানেজারবৃন্দ সহ উর্ধতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় নিরাপত্তা, সম্পদ আহরন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষে বাংলাদেশে নৌ বাহিনী অর্পিত দায়িত্ব পালনে ২০১৫ থেকে ’৩০ সাল পর্যন্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনা প্রনয়ন করে বাস্তাবায়ন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্বল্প মেয়াদী স্তরে আরো ৫টি পেট্রোল ক্রাফট নির্মিত হচ্ছে খুলনা শিপইয়ার্ডে। দেশের মাটিতে নৌ বাহিনীর জন্য প্রায় ৫৩২ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কিল লেয়িং-এর মধ্যে দিয়ে সৃষ্টিশীল উন্নয়নের ধারায় ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা হল সোমবার।
বাংলাদেশ নৌ বাহিনী দেশের সমুদ্র সীসানা ও তৎসংলগ্ন উপক’লীয় অঞ্চল এবং বিভিন্ন নদ-নদীতে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এ সশস্ত্র বাহিনী দেশের উপক’লীয় অঞ্চলে ইতোমধ্যে আস্থা ও নির্ভরতার প্রতিকে পরিনত হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মায়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হবার পরে বাংলাদেশ এক বিশাল সমুদ্র এলাকা লাভ করেছে। প্রকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ বিশাল সমুদ্র এলাকা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভ’মিকা পালন করে যাচ্ছে। এ সম্পদ রক্ষায় দেশের নৌ সীমায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সক্রিয় উপস্থিতি ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ সহায়তা প্রদানে এসব পেট্রোল ক্রাফট গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে ।
আর এ লক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ডও যথাযথ ভ’মিকা পালন করছে। ইয়ার্ডটিতে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৭শ নতুন নৌযান নির্মান ছাড়াও সামরিক-বেসামরিক ও বানিজ্যিক প্রায় আড়াই হাজার নৌযানের মেরামত সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদুর প্রসারী চিন্তার আলোকে বিক্রী তালিকাভ’ক্ত রুগ্ন ও মৃতপ্রায় খুলনা শিপইয়ার্ডকে ১৯৯৯ সালের ৩অক্টোবর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পরে ইতোমধ্যে প্রায় হাজার কোটি টাকা মুনফা অর্জন করেছে। গত অর্থ বছরেও প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৮১ কোটি টাকা নীট মুনফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান হয়।
সোমবার নির্মান কাজের সূচনাকৃত ৫টি পেট্রোল ক্রাফটের প্রতিটির দৈর্ঘ প্রায় ১৭০ফুট, প্রস্থ প্রায় ২৫ ফুট। জার্মেনীর এমটিইউ ব্রান্ডের ২,৩৪০ কিলোওয়াটের মুল ইঞ্জিন সমৃদ্ধ এসব যুদ্ধ জাহাজ ৩০৭ টন পানি অপসারন করে ঘন্টায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রম করতে পারবে। চায়না ক্লাসিফিকেশন সোসাইটির তত্ববধানে নিনির্মতব্য এসব পেট্রোল ক্রাফটে ৩টি এ্যন্টি এয়ারক্রাফট গান সহ সশস্ত্র ও নিরস্ত্র ৩৩জন নৌ সেনা থাকবে। যুদ্ধ জাহাজগুলো এক নাগারে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার নৌপথ অতিক্রমে সক্ষম হবে বলে জানা গেছে। অত্যাধুনিক নৌ সরঞ্জাম সম্বলিত পেট্রোল ক্রাফটগুলোতে ১টি ইমার্জেন্সি জেনারেটর ছাড়াও ২,৩৪০ কিলোওয়াটের আরো দুটি জেনারেটর থাকবে। এসব যুদ্ধ জাহাজে দুটি করে নেভিগেশনাল রাডার ও ইকো সাউন্ডার ছাড়াও সার্বক্ষনিক যোগাযোগের লক্ষে দুটি করে এইচএফ ও ভিএইচএফ ওয়ারলেস সেট থাকবে বলে জানান হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ