Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় সিলেট আওয়ামী লীগ

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ২:৫৫ পিএম

সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা হিসেব নিকেশ। চলছে জোর আলোচনা। বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এরই মধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতি শেষ করেছে আওয়ামী লীগ। সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রস্তুত হয়েছে সম্মেলন মঞ্চও।

নতুন নেতৃত্বে কারা আসতে পারে এ নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানান কথা। পুরনোদের পাশাপাশি নতুন অনেক নামও আলোচিত হচ্ছে। দুই কমিটির শীর্ষ দুটি করে মোট ৪ পদের জন্য অন্তত এক ডজন নেতা দৌড়ঝাঁপ করছেন। শহরজুড়ে বিলবোর্ড, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তারা প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন। পদ প্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে আছেন বিতর্কিত অনেকেও। এদিকে, সম্মেলন যত ঘনিয়ে আসছে ততই আলোচিত হচ্ছেন পুরনো নেতারা। পুরনোরাই আবার নেতৃত্বে থাকছেন কী না এ আলোচনা চলছে জোরেশোরেই। তবে পদপ্রত্যাশী সকলেই বলছেন, সবকিছুই নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। শেষ পর্যন্ত ভোট নয়, সমঝোতার মাধ্যমেই কমিটি হবে বলে জানিয়েছেন তারা। শুধু পদ প্রত্যাশী নেতারাই নয়, তাদের অনুসারীদের মাঝেও একটাই প্রশ্ন আগামী দিনগুলোতে কে হচ্ছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কান্ডারি? নিজের পছন্দের কেউ হলেই তো নেতা হওয়ার পথ সুপ্রসন্ন। ফলে এখানেও উৎকণ্ঠা।

সম্মেলনের আর মাত্র এক দিন বাকি। এরইমধ্যে নেতাকর্মীদের ব্যানার-ফ্যাস্টুন ও তোরণে তোরণে নতুন সাজে সেজেছে সিলেট নগরী। জেলার ১৩টি ও মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষ হওয়ার পর থেকেই নেতা-কর্মীরা পুরোদমে এ কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। পাশাপাশি সম্মেলন স্থল সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রসা মাঠকে ঘিরেও শুরু হয়েছে দফায় দফায় পরিদর্শনের কাজ। ত্রি-বার্ষিক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

শীর্ষ পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি। আব্দুজ জহুর চৌধুরী সুফিয়ান মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লুৎফুর রহমান। দলের কার্যক্রমে ততটা সক্রিয় নন বলে অভিযোগ রয়েছে এই বয়োবৃদ্ধ নেতার বিরুদ্ধে। তিনি এবার ও সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে মনে করছেন অনেকে। তার সা¤প্রতিক কর্মকান্ড বলছে, তিনি ভারমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের আশা করছেন। প্রবীন লুৎফুর রহমানের উপর দলীয় প্রধান ভরসা রাখলে সভাপতি পদের জন্য আলোচিত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে আবারও দেখা যেতে পারে সাধারণ সম্পাদক পদে। এই পদে তিনি বেশ সফল বলেই মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সার্বক্ষণিক রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি আছে শফিকের। তবে তিনি এবার সভাপতি পদে প্রার্থী। এমপিরা পদে আসতে পারবেন না এমন একটি ঘোষণা থাকায় সভাপতি পদে আলোচিত আরও দুই ব্যক্তি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির শীর্ষ পদে আসার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন দলটির নেতারা। তবে দলের হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ইমরান আহমদ চৌধুরীর শেষমুহূর্তে জোরেশোরে প্রচারণায় নামাও ভাবিয়ে তুলেছে তাদের। আরেক সহসভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদও এবার সভাপতি পদে প্রার্থী। তবে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ছোটভাই আসাদ উদ্দিনের কারণে এবারও বঞ্চিত থাকতে হতে পারে তাকে।

মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম দেখছেন অনেকে। গত সিটি নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় থাকলেও কামরান-আসাদকেই আবারো দেখা যেতে পারে নেতৃত্বে। তবে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে আগামীতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। সেটি সত্য হলে এই পদে নতুন কেউ আসতে পারেন। এছাড়াও আলোচনায় আছেন সহসভাপতি এডভোকেট মফুর আলী, এডভোকেট রাজ উদ্দিন আহমদ ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালিক এবং যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার। ২০০৫ সালের পর এবার সম্মেলন হচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগে। অন্যদিকে ২০১১ সালের নভেম্বরের পর এবার আসবে নতুন কমিটি। ফলে এবারের সম্মেলন নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে আগ্রহের পারদ বেশ তুঙ্গে। তবে সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ না করার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র। শেখ হাসিনার মতামতের ভিত্তিতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করতে পারেন।

নেতা-কর্মীদের মতে, ওয়ার্ড কমিটিতে যেভাবে নতুন ও যুবকদের জায়গা দেওয়া হয়েছে, সেভাবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগেও নতুন এবং যুবকদের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এতে তরুণরা যেমন রাজনীতির প্রতি আগ্রহী হবে তেমন প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে। যারমধ্য দিয়ে দলের কার্যক্রম আরও বেগবান হবে এবং ভবিষ্যতে জাতীয় নেতৃত্ব দেওয়ার মতো নেতা তৈরি হবে। সম্মেলন আনন্দময় এবং উৎসবমুখর করে তুলতে নানা আয়োজন করা হয়েছে। এজন্য ৬টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। সবার প্রচেষ্টায় একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর সম্মেলনের আশা ব্যক্ত করেন এ দুই নেতা। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ চলছে। তবে পদ পদবী পাওয়া নিয়েও নেতা ও সমর্থকদের মাঝে টানটান উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠায় পার হচ্ছে বর্তমান সময়। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, নেতাকর্মীদের আশা সম্মেলনে মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াবে সিলেট আওয়ামী লীগ। গতিশীল হবে দলীয় কার্যক্রম। কমিটিতে স্থান পাবেন ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ