Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশ স্পিনে কুপোকাত মালদ্বীপ

কাঠমান্ডু (নেপাল) থেকে জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৭:৩১ পিএম

নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস পুরুষ ক্রিকেটে মালদ্বীপকে উড়িয়ে দারুণ সূচনা করলো বাংলাদেশ। মূলত বাংলাদেশ স্পিনেই কুপোকাত হলেন দ্বীপদেশটির ব্যাটসম্যানরা। বুধবার কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন ইউনিভার্সিটি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ১০৯ রানে বিধ্বস্ত করে মালদ্বীপকে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ তুলে। জবাবে মালদ্বীপ ১৯.২ ওভারে ৬৫ রানেই গুটিয়ে যায়। সিঙ্গেল লিগ ভিত্তিক ম্যাচে শুক্রবার ভুটানের মুখোমুখি হবে জুনিয়র টাইগাররা।

উইকেটে যথেষ্ট টার্ন। হঠাৎ লাফিয়ে ওঠছে বল। মাঝেমাঝে বল স্লো হয়ে ব্যাটে আসছে। এমন উইকেটে ঘূর্নি জাঁদু দেখিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁ হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। একাই নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। শুধু তানভীরই নন, বাংলাদেশের অন্য স্পিনাররাও করেছেন রাজত্ব। তবে দুর্বল প্রতিপক্ষের অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধে কাল ব্যাটিংয়ে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি না সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্তররা। হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি টাইগারদের কোনো ব্যাটসম্যানই। গেমসের ক্রিকেটে এবার ভারত ও পাকিস্তান না থাকায় স্বর্ণ জয়ে বাংলাদেশের একমাত্র বাধা শ্রীলঙ্কা। আসরে একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে নামার আগে মালদ্বীপের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করলেও ব্যাটিংয়ে আরো বেশি জ্বলে ওঠার কথা ছিল সৌম্য-শান্তদের। কিন্তু তাদের ব্যাট তেমন হাসেনি। অধিনায়ক শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৪৯ রান। সৌম্য ৪৬ এবং নাঈম শেখ করেন ৩৮ রান। বিশ বছর আগে এ মাঠেই এসিসির টুর্নামেন্ট খেলতে এসেছিল বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন ওই দলের সদস্য হাবিবুল বাসার সুমন এবার ম্যানেজার এসএ গেমস দলের। ম্যাচের আগে উইকেট দেখে আগাম একটি ধারনা দিয়েছিলেন তিনি। সুমনের ধারণা মতে এই উইকেটে ব্যাটম্যানদের ব্যাটিং করা কঠিন হবে। বাস্তবে সৌম্য-শান্তদের ব্যাটিং দেখে তাই মনে হয়েছে। তবে বোলিংয়ে বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন স্পিনাররা। মালদ্বীপের ১০ উইকেটের মধ্যে নয়টিই নিয়েছে বাংলাদেশের স্পিনাররা। তানভীরের পাঁচ উইকেট শিকারের পাশাপাশি দু’টি করে উইকেট ঝুলিতে পুড়েছেন মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি ও আফিফ হোসেন ধ্রæব।

ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সৌম্য। ৭.২ ওভারে এই জুটি তোলে ৫৯ রান। দুই ওপেনারের মধ্যে তুলনামূলক আগ্রাসী ব্যাটিং করা নাঈমকে রান আউট করে জুটি ভাঙেন মোহামেদ মাহফুজ। ২৮ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় নাঈম করেন ৩৮ রান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলকে কিছুটা এগিয়ে নেন সৌম্য। এই জুটিতে ৩৬ বলে আসে ৫৩ রান। ৩৩ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৬ রান করে মাহফুজের বলে আউট হন সৌম্য। ক্রিজে এসেই বোলারদের উপর চড়াও হয়েছিলেন আফিফ। কিন্তু খুব বেশি সময় টেকেননি। ৯ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৬ রান করে স্টৗাস্পড হন আজিয়ান ফারহাতের বলে। ইয়াসির আলির সঙ্গে শান্তর ১৫ বলে ২৯ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি দলকে বড় সংগ্রহ দেয়। ইনিংসের শেষ ওভারে ইব্রাহিম হাসানের বলে আউট হওয়ার আগে এক চার ও তিন ছক্কায় ৩৮ বলে ৪৯ রান করেন শান্ত। ইয়াসির অপরাজিত থাকেন ১২ রানে। রান তাড়ায় মালদ্বীপ কখনোই সঠিক পথে ছিল না। তাদের রান তোলার গতি ছিল শ্লথ, পুরো ২০ ওভার ক্রিজে কাটিয়ে দেওয়াই যেন লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যটাও পূরণ হয়নি মালদ্বীপের। প্রথম চার ওভার দেখে শুনেই কাটান দুই ওপেনার আহমেদ হাসান এবং আলী ইভান। বাংলাদেশ পেসাররা তাদের জুটি ভাঙ্গতে পারেননি। তবে বিপজ্জনকও হতে দেখা যায়নি এ দুই ব্যাটসম্যানকে। বোলিং করতে এসেই বাংলাদেশকে সফলতা এনে দেন তানভীর। বোল্ড করেন ১৬ বলে ১০ রান করা হাসানকে। এরপর প্রতি ওভারেই উইকেট নেন এই স্পিনার। মালদ্বীপের প্রথম পাঁচ উইকেটই তার দখলে যায়। তানভীরের ঘূর্নিও পর টার্নিও উইকেটের ফায়দা লুটে নেন আফিফ, আফ্রিদি ও সৌম্য। মালদ্বীপের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২ রান আসে আলী ইভানের ব্যাট থেকে। দু’জন ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংকের ঘরে পৌছাতে পারেননি। পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন তানভীর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

টস: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল

বাংলাদেশ: ১৭৪/৪;২০ ওভার (শান্ত ৪৯, সৌম্য ৪৬, নাইম ৩৮, আফিফ ১৬, ইয়াসির ১২*, জাকির ৪*; ইব্রাহিম ১/৩১, মাহফুজ ১/৩২, আজায়ান ১/৩৪)

মালদ্বীপ: ৬৫/১০; ১৯.২ ওভার (আলি ইভান ১২, হাসান ১০; তানভীর ৫/১৯, আফিফ ২/৭, আফ্রিদি ২/১৭, সৌম্য ১/১৫)

ফল:বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল ১০৯ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: তানভীর ইসলাম।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ