Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে মুসলিম প্রতিনিধিদের আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ২:২৬ পিএম

ভারতে সম্প্রতি পাশ হওয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে যে প্রক্রিয়ায় আন্দোলন-প্রতিবাদ-সহিংসতা চলছে তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুসলিম বিশিষ্টজন ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

তারা সকলেই জানিয়েছেন, হৃদয়ের ক্ষোভের জায়গা যা-ই থাকুক, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অন্যায়। গণতান্ত্রিক উপায়ে বিরোধিতা নিশ্চয়ই করতে হবে। কিন্তু সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও পথ বেছে নেওয়া চলবে না।
ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীর কথায়, “কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন মানুষ বাস্তবতার অর্থেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে তারা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছেন। কিন্তু শুক্রবার থেকে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় যে পদ্ধতিতে ট্রেনে পাথর ছোড়া, স্টেশন মাস্টারের ঘরে আগুন জ্বালানো থেকে শুরু করে বাসে আগুন জ্বালানো হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না।”
ত্বহার আবেদন, “আন্দোলন অবশ্যই করুন। কিন্তু দয়া করে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। এমন হিংসাত্মক আন্দোলন করলে যাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হচ্ছে সেই রাজনৈতিক দলই সুবিধা পাবে।”
রাজ্যের সমস্ত মানুষের প্রতি অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের রাজ্য সভাপতি ফজলুর রহমানের আবেদন, “কারও প্ররোচনায় পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন। নচেৎ আন্দোলনের গতিপথ নষ্ট হয়ে যাবে।”
জামায়াতে ইসলামি হিন্দের রাজ্য সভাপতি মৌলানা আবদুর রফিকের কথায়, “এই আইনের বিরুদ্ধে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলন করতে হবে। এটা মুসলমানদের অস্তিত্বের আন্দোলন। দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে সহিংসতার আশ্রয় নিলে কখনও ভাল ফল আসতে পারে না।”
বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুহম্মদ ইয়াহিয়া জানান, “বিজেপি সরকারের ধর্মীয় বিভাজনের নতুন আইনের বিরোধিতা করে সর্বস্তরের আবাল-বণিতা নারী-পুরুষ সকল মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। কিন্তু আন্দোলন করতে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা আন্দোলনের গতিমুখটাই বদলে দেবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন-এর রাজ্য কমিটির সদস্য মৌলানা নিজামুদ্দিম কাশেমি বলেন, “নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যারা হিংসাত্মক ঘটনা ঘটাচ্ছেন, তারা ঠিক করছেন না। আমাদের দল এই ধরনের আন্দোলনের অনুমতি দেয়নি।” তিনি আরও বলেন, “আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে আন্দোলন করবেন না কেউ।”
প্রবীণ অধ্যাপক ওসমান গনির পর্যবেক্ষণ, “ভারতীয় মুসলিমদের এই করুণ পরিণতি দেখে আমার ঘুম নষ্ট হয়েছে। মানুষ অনেক কষ্টে, যন্ত্রণায় নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের প্রতি আবেদন, শান্তির সঙ্গে গঠনমূলক আন্দোলনের পথ বেছে নিন। আন্দোলনের গতিমুখ নষ্ট হলে আন্দোলনকারীদেরই ক্ষতি হবে।”
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মীরাতুন নাহার বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে এই নয়া আইনের প্রতিবাদ-আন্দোলন আত্মঘাতী আন্দোলনে পরিণত হচ্ছে। স্বতঃস্ফূর্ত, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন না হলে কেন্দ্রীয় সরকার এই আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কাজে লাগাবে


 

Show all comments
  • Shahinur islam ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৪:২৭ পিএম says : 0
    Eta momotar natok hotepare.she kico korte pare na.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ