Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মালয়েশিয়ায় কেএল সামিট ২০১৯ শুরু

সউদীর চাপে যাননি ইমরান খান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ‘কেএল সামিট ২০১৯’ শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ডক্টর হাসান রুহানি অংশগ্রহণ করেছেন। তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ‘কুয়ালালামপুর সামিটে’ অংশ নিচ্ছেন না। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদকে ফোন করে কুয়ালালামপুর সামিটে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে তার অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। ইমরান খান এ জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ নিজের অপারগতার বিষয়টি জানানোর জন্য ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে মালয়েশিয়া আশা করেছিল কুয়ালালামপুর সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইমরান খান মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কে নিজের মতামত তুলে ধরবেন।

আইআরআইবি একটি সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সউদী আরবের চাপের মুখে কুয়ালালামপুর সম্মেলনে অংশ নিতে পারলেন না ইমরান খান। ওই সম্মেলনে সউদী আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ নেতৃত্ব আমন্ত্রিত না হওয়ায় এই দু’টি দেশ ক্ষুব্ধ হয়। সূত্রটি আরও বলছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে অংশ নিতে রাজি হওয়ায় সউদী আরব অসন্তোষ প্রকাশের পর ইমরান খান রিয়াদ সফরে যান। সউদী থেকে ফিরেই তিনি কুয়ালালামপুর সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের আহŸানে কুয়ালালামপুর সামিট নামের যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে তাতে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জুকো উইদোদো অংশ নিতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। সউদী সরকার প্রথম থেকেই কুয়ালালামপুর সামিট-কে ভালোভাবে দেখছে না বলে জানা গেছে। সউদী আরব মনে করছে, এই সামিট মুসলিম বিশ্বে রিয়াদের প্রভাব আরও হ্রাস করবে। সউদী আরব প্রচার চালিয়েছে, মালয়েশিয়া ওআইসি’র বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে চাইছে। তবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ এ ধরনের খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছেন।

কুয়ালালামপুর সম্মেলনটি আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। সম্মেলনের এজেন্ডায় গুরুত্বসহকারে থাকছে উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব, অখÐতা ও সুশাসন, সংস্কৃতি ও পরিচয়, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা, শান্তি-সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা এ সাতটি বিষয়।

প্রধানমন্ত্রী মাহাথির প্রথম যে দেশগুলোর এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা জানিয়েছিলেন, তার মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম ছিল। গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। গত ২৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারজুকি বিন হাজী ইয়াহিয়া ইসলামাবাদে ফোন করলে ইমরান খান সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে নিশ্চিত করেন।

এরপরেই পাকিস্তানের উপর সউদী চাপ আসে। পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকারের প্রথমদিকে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল দিয়েছিল রিয়াদ, তারা চেয়েছিল ইসলামাবাদ এই অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি নিশ্চিত করেছেন যে, কুয়ালালামপুর শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে সউদী আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত উদ্বিগ্ন। তাদের উদ্বেগের কারণ, সম্মেলনটি ‘মুসলিম উম্মাহতে বিভক্তি’ সৃষ্টি করতে পারে এবং সউদী নিয়ন্ত্রিত ‘ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)’ এর অনুরূপ একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এদিকে মাহাথির মোহাম্মদ মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের বলেছেন, সউদী বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ মুসলিমদের বিষয় নিয়ে নিয়ে আলোচনায় শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান থেকে বিরত থাকবেন। সউদী বাদশাহ মনে করেন, এ জাতীয় আলোচনার জন্য ‘ওআইসি’কে প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার করা উচিত।

কুরেশি বলেন, সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে, পাকিস্তান প্রথমে রিয়াদ ও কুয়ালালামপুরের মধ্যে দুরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে এবং যদি তা কাজ না করে তবে শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রিয়াদ সফরের উদ্দেশ্য ছিল সউদী আরব ও মালয়েশিয়ার দুরত্ব কমানো, শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে অনুমতি পাওয়ার জন্য নয়।

উল্লেখ্য, গত মাসে ‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’ নামে তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং কাতারকে সাথে নিয়ে নতুন এক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ। সূত্র : ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মালয়েশিয়া

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ