Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাজবাড়ী রেলওয়ের বাসা ও জমি বেহাত

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাজবাড়ীতে বেদখল হয়েছে রেলওয়ের ৫৫৫ একর জমি ও ৩৪৬টি স্টাফ কোয়ার্টার। রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে হাজারো কোটি টাকার এ সম্পত্তি হাতছাড়া হলেও নিরব রয়েছে রেলওয়ে প্রশাসন। স্থানীয় প্রভাবশলীরা এসব জমি দখল করে গড়ে তুলছেন বসত বাড়ি, মার্কেট ও মাছের খামার। এছাড়াও রাজবাড়ী থেকে যাত্রী সেবার মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
রাজবাড়ীর রেলওয়ে বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় রেলওয়ের জমির পরিমাণ ১৭০৩ একর। এর মধ্যে রেলওয়ের দখলে আছে ১০৪০ একর। নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে ৯১ একর জমি। জেলা প্রশাসন ব্যবহার করছে ১৫ একর। লীজ দেয়া হয়েছে ২ একর। বাকি ৫৫৫ একর জমি রয়েছে বেদখলে। এছাড়াও ৪৬৫টি কোয়াটারের মধ্যে ৩৪৬টি রয়েছে প্রভাবশালীদের দখলে। কার্যালয়টির তথ্য মতে আরো জানা যায়, প্রতিদিন রাজবাড়ী থেকে নিয়মিত ৬টি ট্রেন চলাচল করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা বাদল জানান, এক সময় রেলের শহর হিসিবে বিখ্যাত ছিলো রাজবাড়ী। ওই সময় এখানে রেলওয়ের রমরমা অবস্থা থাকলেও এখন নাজুক অবস্থা। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বেদখল হয়েছে রেলওয়ের স্টাফ কোয়াটার। এসব সরকারি কোয়াটার দখল করে আবার কেউ কেউ ভাড়াও দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার এসব কোয়াটারেই গড়ে তুলেছেন মাদকের আখরা। এছাড়াও দিনের পর দিন খোলা জায়গায় থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রেলওয়ের মাল বহনকারী গাড়ি।
উদিচি শিল্পী গোষ্ঠি রাজবাড়ীর সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাসান খোকা জানান, এক সময় রাজবাড়ী থেকে শিয়ালদহ ট্রেন চললেও এখন মৃত প্রায় এই রেল। তাছাড়া রাজবাড়ী থেকে খুব সহজেই ঢাকা-রাজশাহী ও খুলনা এই তিন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা যায়। এখন সেই অবস্থা নেই। এক সময় সচল ছিলো এসব রুটে যোগাযোগ। এখন যাত্রী থাকলেও নেই সেবার মান। এমনটি অনেক সময় টিকিট চেক করার মতো লোকও খুজে পাওয়া যায় না।
শহরের নিউ কলোনী এলাকায় রেলওয়ের কোয়াটারে বসবাসরত আলী আকবর ফকির বলেন, এক সময় আমার দাদা রেলওয়েতে চাকরি করতো। সেই সুবাধে এই কোয়াটারটি আমি পেয়েছি। এই কোয়াটার এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে তাই পাশেই একটি পাকা ঘর তুলে বসবাস করছি। তবে জমি রেলওয়ে থেকে কোন লীজ নেয়া হয়নি।
রেলওয়ে শ্রমিকলীগ রাজবাড়ী শাখার সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন জানান, নতুন চাকরি যোগদানকারী ২৮ জন কর্মকর্তার জন্য কাগজে কলমে ২৮টি বাসা বরাদ্দ হয়েছে ছয় মাস আগে । কিন্তুু এখনও বাসা বুঝে পাইনি। বাসা বাড়ি না থাকার কারণে খুবই বিপদে আছেন তারা। এমনকি অবৈধভাবে কোয়াটার দখলের পাশাপাশি প্রভাবশালীরা ঘর তুলে আবার ভাড়াও দিয়েছেন। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বারবার বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কোনো কর্মকর্তাই কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
আর রেলওয়ের ভু-সম্পত্তির দায়িত্বে থাকা ১৫নং কাচারীর ফিল্ড কানুন গো মো. সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, অচিরেই রাজবাড়ীতে রেলওয়ের ডিভিশন করা হবে। ডিভিশনের কার্যক্রম শুরু হলে এসব বেদখল হয়া সম্পত্তি দখলে আনবে রেলওয়ে বিভাগ। তার কার্যক্রম হিসেবে কিছুদিন আগে রেলওয়ের মন্ত্রী এলাকা পরিদর্শন করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ