Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আপনি নিজেই ছুটি নিতে পারতেন -প্রধানমন্ত্রীকে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:২৭ পিএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, আপনারা আমাকে ছুটি দিবেন।’ ছুটি অন্যরা দিবে কেন ছুটি আপনি নিজেই নিয়ে নিতে পারতেন। আসলে আপনার এ সমস্ত কথা জনগণের সাথে ‘ডার্ক হিউমার’। রাজনীতি থেকে অবসরের কথা আপনি এর আগেও বলেছিলেন কিন্তু সে কথাও রাখেন নি। অর্থাৎ আপনি মুখে যা বলেন অন্তরে পোষণ করেন অন্যটি। জিঘাংসা ও ভোগবাদের মিলিত রুপ আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সরকার। সেখানে মানবতা আর ন্যায় বিচারের কোন বালাই নেই। দলীয় প্রধানের পদসহ দখল করা মসনদের প্রধান আপনি। সুতরাং আপনি আপনার কুক্ষিগত কোন পদ থেকে সরে যাবেন এটা পাগলেও বিশ্বাস করে না।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সব গণতান্ত্রিক, মৌলিক অধিকার মানবাধিকার সব দলিত-মথিত করে আওয়ামীলীগের কাউন্সিল করা হয়েছে। সমস্ত মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোটাধিকার ডাকাতি করে, দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করে ক্ষমতাসীনরা কাউন্সিলে বাগড়ম্বরের নামে জনগণের সাথে ঠাট্টা করেছে।

তিনি বলেন, দশের জনগণ আশা করেছিলেন, এ দেশের গণতন্ত্র কিভাবে ফিরে আসবে, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কিভাবে ফিরে আসবে, খুন-গুম-হত্যা প্রতিহিংসাপরায়ণতার রাজনীতি কিভাবে বন্ধ হবে এগুলো থেকে কিভাবে সরে আসবেন তার একটি ইঙ্গিতের প্রত্যাশা করছিল জনগণ। গোটা জাতির প্রত্যাশা ছিল যে, ২০১৪ সালের বিনাভোটে সরকার গঠন ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসম্বরের আগের রাতে ভোট ডাকাতির জন্য হয়তোবা তাদের অনুশোচনা হবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের একটা পথ দেখানো হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য কোনো দিকনির্দেশনা থাকবে। কিন্তু জাতি চরমভাবে হতাশ হয়েছে। কোন পথ কিংবা আশার আলো দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে এই কাউন্সিল।

তিনি বলেন, জাতিকে এই মিডনাইট সরকার যে গভীর সংকটে পতিত করেছে সেই সংকট উত্তরণের ইতিবাচক কিছু আসেনি। বরং শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাহেব সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর দিনই ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ে ছাত্রলীগ সমহিমায় আবির্ভূত হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করেছে, ছাত্রদের রক্তে রক্তাক্ত হয়েছে ক্যাম্পাস, চালের দাম ও পেঁয়াজের দামি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশিদের হত্যার হিড়িক চলছে, বিচার বর্হিভূত হত্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, অটো রিকশায় আবারও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন দুই যুবতি, শেয়ার বাজারের নেমেছে আরও ধ্বস।

রিজভী বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে গত এক দশক ধরে তারা যে অপকর্মগুলো করে আসছে তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল এই কাউন্সিলে। তাদের নেতা-নেত্রীদের বক্তব্যে ছিল একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের জয়ধ্বনী। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকায় খরচ করা এই কাউন্সিল জাতিকে আতঙ্কিত করেছে।

 

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোকে গুম, খুন, হত্যা এবং অসংখ্য মামলায় জর্জরিত করে প্রচ- বৈরী ও প্রতিকূল অবস্থায় ঠেলে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার । বিএনপির প্রতিটি কর্মকা-ে সহিংস কায়দায় বাধা দেয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত মিথ্যা ও আজগুবে মামলায় হয়রানী করা হচ্ছে। দেশের জেলা উপজেলায় আমাদের কাউন্সিল করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। আমাদের শান্তপূর্ণ সভা-সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। গনতান্ত্রিকভাবে মিছিল সমাবেশ করলে গুলী টিয়ার লাঠিচার্জ গ্রেফতার করা হচ্ছে। অথচ আওয়ামীলীগসহ তাদের অঙ্গ সহযোগি সংগঠনগুলো ঢাকা শহরের অনেক সড়কে যান চলাচল বাধা দিয়ে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে দিনের পর দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা- সমাবেশ করছে। নিজেদের দলে কথিত গণতন্ত্র চর্চার নামে বিরোধীদল ও প্রতিপক্ষের গণতন্ত্রকে টুটি চেপে হত্যা করা হচ্ছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দখলদার আওয়ামী সরকার শুধুমাত্র প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও গনতন্ত্রের কন্ঠস্বর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়েকে কারারুদ্ধ রেখে বিনা চিকিৎসায় হত্যার চক্রান্ত করছে। গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীর কি চিকিৎসা হচ্ছে এটি কেউ কিছুই জানতে পারছে না। একেতো সরকারের পূর্বের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত বদলে সরকারি দলের সমর্থক ডাক্তারদের দিয়ে তৈরি করে বানোয়াট রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছে, তার ওপর বেগম জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার শামীম ও ডাক্তার মামুনকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ বিনা চিকিৎসায় তাঁর জীবনকে বিপন্ন করার কলা-কৌশল হচ্ছে কি না এজন্য জনগণ উদ্বিগ্ন। বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে একধরণের ‘মেডিকেল টেরোরিজম’ কায়েম করেছে সরকারের নির্দেশে বিএসএমএমইউ’র কর্তৃপক্ষ। আমরা বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ