Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সবচেয়ে খারাপ মানুষটিকেও ঈশ্বর ভালোবাসেন : পোপ ফ্রান্সিস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ পিএম

আজ ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। ২০১৯ বছর আগে জেরুজালেমের কাছাকাছি বেথলেহেম নগরীতে আজকের দিনে জন্ম নিয়েছিলেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশু। মানবজাতির ত্রাণকর্তা যিশু হিংসা, বিদ্বেষ, পঙ্কিলতার পথ থেকে মানুষকে উদ্ধার করে তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন ভালোবাসা, করুণা, মিলন ও সুন্দরের পথ।

সেই বড়দিনের আগমনে মানুষের মাঝে ঈশ্বরের স্বর্গীয় ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক খিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেছেন, ‘ঈশ্বর সবাইকে ভালোবাসেন, এমনকি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ব্যক্তিটিও তার ভালোবাসা বঞ্চিত হন না।’

বড়দিনের আগের রাতে গতকাল মঙ্গলবার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় সমবেত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। তার কথায়, ‘মানুষ যত গরিব বা পাপীই হোক না কেন, তাতে ঈশ্বরের অসীম ভালোবাসায় কোনো কমতি হবে না। মানুষ ভুল চিন্তা করতে পারে। সবকিছু গুবলেট করে ফেলতে পারে। কিন্তু ঈশ্বর ভালোবেসেই যান।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যৌন নিপীড়নসহ চার্চের নানা কেলেঙ্কারির দিকে ইঙ্গিত করে পোপ ফ্রান্সিস এসব মন্তব্য করেছেন বলে ধারণা করছেন অনেকেই। সেইসঙ্গে গির্জায় ত্রুটিপূর্ণ কোনো কাজের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সেই স্বর্গীয় ভালোবাসার ছায়া থেকে কাউকে দূরে সরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আমরা প্রায়ই ভাবি ভালো কাজ করলে ঈশ্বর আমাদের ভালো করবেন, আর খারাপ করলে তিনি আমাদের সাজা দেবেন। কিন্তু ঈশ্বর আসলে এমন নন।’
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু না বললেও চার্চের যৌন নিপীড়ন কেলেঙ্কারি এবং আর্থিক অনিয়মের সাম্প্রতিক সমস্যাগুলোর কথা ভাষণে উল্লেখ করেন পোপ। তিনি বলেছেন, ‘আসুন আমরা ঈশ্বরের কথা মাথায় রেখে তার ধ্যানে মগ্ন হয়ে ঐশ্বরিক সেই অপার ভালোবাসার ছায়াতলে নিজেদের সমর্পণ করি।’

বড়দিনের আগের রাতে গতকাল মঙ্গলবার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় সমবেত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে একথা বলেন পোপ। বড়দিন পালনকালে প্রথা অনুযায়ী বিশ্বকে বার্তা দিতে পোপ বুধবার আবারো সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় উপস্থিত হবেন।

যিশুর জন্মদিন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। তারা ২৪ ডিসেম্বর যে উৎসবের শুরু করে, তা শেষ করে ৫ জানুয়ারিতে। ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে।
কেন ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন : খিস্টানদের ধর্মীয়গন্থ বাইবেলে যিশুর কোনো জন্মতারিখ দেয়া নেই। তবে যীশুর জন্মের আগে রোমে প্রথম খ্রিস্টান সম্রাটের আমলে ২৫ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো বড়দিন উদযাপিত হয়েছিল। কয়েক বছর পরে, পোপ জুলিয়াস আনুষ্ঠানিকভাবে ওই তারিখকে যীশুর জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে এর গোরাপত্তন।

ক্রিসমাস ট্রি : উৎসবে ক্রিসমাস গাছ সাজানোর রীতি হাজার বছরের পুরনো। উত্তর ইউরোপে তখন ফার গাছকে এভাবে সাজানো হতো। ফার গাছ ছাড়াও আলো দিয়ে সাজানো হত চেরি গাছকে। যারা খুব গরিব, তারা কাঠের টুকরো জড়ো করে ত্রিভুজ আকার দিয়ে তাকে সাজাতেন।

ধীরে ধীরে ক্রিসমাস ট্রি দিয়ে এমন রীতি পালনের প্রথা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। আলো, মিষ্টি, খেলনা, তারা, ঘণ্টা দিয়ে সাজানো হয় গাছটি। ধীরে ধীরে বড়দিনের এই উৎসবের ঢেউ এসে লাগে ভারতীয় উপমহাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতেও। একইভাবে ২৫ ডিসেম্বরে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয় এসব দেশেও।



 

Show all comments
  • shagor ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:৪৫ পিএম says : 0
    সবচেয়ে খারাপ লোকটিকেও যদি ভালবাসেন, তাহলে ভাল-মন্দের পার্থক্য থাকলো কোথায়? ইনসাফ থাকলো কোথায়? এই কথার মধ্যে বাটপারি আছে। অথচ কুরআন আমোদের আল্লাহ বলেন: আমি কি আত্মসমর্পণকারীদের সাথেও অপরাধীদের অনুরূপ আচরণ করবো? তোমাদের কী হল? এ তোমাদের কেমন বিচার? (সূরা আল-কালাম) এ ব্যাপারে এ ছাড়াও আরো অনেক স্পষ্ট আয়াত রয়েছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পোপ ফ্রান্সিস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ