Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারাক্ষণ পড় পড় করলে ছোটদের ভালো লাগে না

গণভবনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

পড়াশোনার পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সারাক্ষণ শুধু পড় পড় করলে ছোট ছেলেমেয়েদের ভালো লাগে না। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে তাদের পড়ালেখা শেখাতে হবে। তবেই সেটা ফলপ্রসূ হবে। গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার লক্ষ্যে নিজেদের প্রস্তুত করার জন্য শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে চাই, যাতে তারা পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে। এ কথা মাথায় রেখেই তার সরকার শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক মানোন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষাকে আরও আধুনিক, উন্নত এবং বিজ্ঞানসম্মত করতে চাই। শুধু সাধারণ শিক্ষা নয়, কারিগরি শিক্ষাকে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই, যাতে ছেলেমেয়েরা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেরা কিছু করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী ভালো ফলের জন্য শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোনিবেশ করার আহŸান জানিয়ে বলেন, ভালো ফল করতে হলে আমাদের শিশুদের আরও মনোযোগী হতে হবে। ভবিষ্যতে যেন ফলাফল আরও ভালো হয়, সে জন্য মন দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে।

তার সরকার বিনা ম‚ল্যে শিক্ষার্থীদের বই দেয়াসহ বৃত্তি প্রদান করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গরিব মা-বাবার ওপর যেন চাপ না পড়ে, সে জন্য আমরা বছরের শুরুতেই বই দিচ্ছি। স্কুল ও কলেজ সরকারি করে দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের যেন নদী-নালা, খাল-বিল পার হতে না হয়, সেটা বিবেচনায় রেখে স্কুল করে দিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছি। উচ্চশিক্ষাসহ সর্বস্তরে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা করেছি। কোনো শিক্ষার্থী যেন ঝরে না পড়ে, এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে শিক্ষার কথা বলা আছে গুরুত্বের সঙ্গে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের একটা স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। এই দেশটাকে আমরা আরও উন্নত করতে চাই। উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়তে হলে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করবেন। এখন আমরা সাড়ে তিন হাজার ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়েছি। সাড়ে তিন হাজার ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দেয়া এবং তার সরকারের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে তোলাতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহŸান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি পরীক্ষা সময়মতো হবে এবং ফলাফলও সময়মতো হবে। আমরা কোনো সেশনজট রাখব না। সেশনজট থাকলে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনায় অমনোযোগ চলে আসে। স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু সরকার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করেছিল। এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা বিনা মূল্যে প্রদান করার পাশাপাশি ৩৬ হাজার প্রাথমিক স্কুল জাতীয়করণ করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা ২৬ হাজার প্রাথমিক স্কুল জাতীয়করণ করেছি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের জন্য বিনা মূল্যে শিক্ষা প্রদান করছি। একই অনুষ্ঠানে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জেএসসি ও জেডিসি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ