Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এবার নৌবাহিনীর অভিযান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৬ পিএম
অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী দাবানল কবলিত শহর মাল্লাকোটায় আটকাপড়া হাজার হাজার মানুষকে উদ্ধারে এবার অভিযান শুরু করেছে। নৌবাহিনীর জাহাজ এইচএমএএস চউলস একবারে আটশো মানুষ উদ্ধার করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতা সমন্বয় করছে নিরাপত্তা বাহিনী। আগ্রহীদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে জাহাজে চড়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার দুটি অঙ্গরাজ্যে শুরু হওয়া দাবানল সম্প্রতি ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের এই দাবানল শহরের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯) ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের মাল্লাকোটা শহরের দিকে আগুন এগিয়ে আসতে থাকলে সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। উপকূলীয় শহরটিতে আটকা পড়ে প্রায় চার হাজার বাসিন্দা ও পর্যটক। অনেকেই আবার পার্শ্ববর্তী নিউ সাউথ ওয়েলসের দিকে পালিয়ে যায়। সেখানেও চলছে জরুরি অবস্থা।
চলতি মৌসুমের দাবানলে অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিখোঁজ রয়েছে ১৭ জন। পুড়ে গেছে এক হাজার দুইশোরও বেশি ঘরবাড়ি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। বৃহস্পতিবার দাবানল কবলিত নিউ সাউথ ওয়েলসের কোবারগো শহরে গিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। পরে সফর সংক্ষিপ্ত করে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
দাবানল তীব্র হতে শুরু করায় স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল আটটা থেকে সপ্তাহব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের প্রিমিয়ার গ্লাডিস ব্রেজিকলিয়ান। কয়েকটি শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় নিত্যপণ্যের সরবরাহও কমে আসছে। হাজার হাজার মানুষ এরইমধ্যে অঙ্গরাজ্যটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে উচ্চ তাপমাত্রা ও তীব্র বাতাসের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে ‘অগ্নি বিপদ মারাত্মক’ আকার নিতে পারে বলেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রিমিয়ার ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুস মাল্লাকোটাসহ ছয়টি এলাকায় দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন। মাল্লাকোটা থেকে নৌবাহিনীর জাহাজ এইচএমএএস চউলস একাধিক ট্রিপ দিয়ে সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। তবে ধোঁয়ায় দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ায় সাধারণত গ্রীষ্মকালে তাপদাহের কারণে জঙ্গলে দাবানল হয়। স্থানীয়রা একে বলে থাকে বুশফায়ার। এই দাবানল কতটা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, টেলিভিশনের পর্দায় মাঝেমধ্যেই উঠে আসে তার করুণ চিত্র। আগুনের এই রোষের মুখে অসহায় হয়ে পড়ে মানুষ। কখনও সংলগ্ন এলাকা থেকে মানুষজনকে উদ্ধার করা অথবা দাবানলের পথে গাছ কেটে আগুন থামানোর চেষ্টাতেই অবলম্বন খোঁজেন স্থানীয়রা। সরকারিভাবে বিমান থেকে বিশেষ তরল মিশ্রণ ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টাও করা হয়। তবে সে প্রচেষ্টা সব সময় সফল হয় না। তবে বুশফায়ার বা দাবানলপ্রবণ এলাকায় জনবসতি তুলনামূলক কম থাকে। ফলে লোকজনের প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কিছুটা কম হয়। তবে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া দাবানলে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০ কোটি প্রাণী প্রাণ হারিয়েছে বলে আশঙ্কা করছে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিদরা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্ট্রেলিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ