Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কোরআন সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে কল্যাণ ও শান্তি

মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন আল্লামা শাহ আহমদ শফী

হাটহাজারী উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বনামধন্য অন্যতম বৃহৎ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল জামিআতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী চট্টগ্রামের বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন গতকাল জামিআর প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জামিআর মহাপরিচালক ও আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে বার্ষিক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দেশ ও জাতির সার্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনি দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়। একই দিন বা’দ ইশা দস্তারবন্দী সম্মেলনে গত বছরের দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের পাগড়ী সনদ প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীরা আবেগঘন পরিবেশে পাগড়ী গ্রহণ করে। এ সময় মঞ্চে সিনিয়র শিক্ষক প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত উপমহাদেশ খ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব আল্লামা আরশাদ মাদানী হাফি. এর সুযোগ্য সাহেবজাদা হযরত মাওলানা আযহারুল হাসান মাদানী। তিনি জুমআর পূর্বে আলোচনা রাখেন এবং জুমআর খুতবা দেন ও ইমামতি করেন।
সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসীহত পেশ করেন জামিআর মহাপরিচালক ও আমীরে হেফাজতে ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সবাই দুনিয়াতে শান্তি অন্বেষণ করে। শান্তির জন্য দুনিয়ার পেছনে ছুটতে থাকে, অথচ দুনিয়ার মাঝে শান্তি নিহীত নেই। শান্তি পেতে হলে তিনটি কাজ করতে হবে। প্রথমে দুনিয়া ত্যাগ করা শিখতে হবে, পার্থিব লোভ লালসা ত্যাগ করতে হবে দ্বিতীয়ত, নিজের আত্মার শুদ্ধি ও সংশোধন করতে হবে। সকল প্রকার অন্যায় ও অনৈতিক কাজ পরিহার করতে হবে। কৃত পাপ থেকে তওবা করতে হবে। আল্লাহ ইরশাদ করেছেন যে নিজের নফসকে পরিশুদ্ধ করবে, সে নিশ্চয় সে কামিয়াব হবে।
তৃতীয়, সুন্নাত মুতাবেক জীবনযাপন করতে হবে। সকল প্রকার বিদয়াত পরিহার করতে হবে। এ তিনটি আমলকে যদি আমরা আকড়ে ধরি তাহলে শান্তি আপনা আপনি এসে যাবে। ঘরে বাইরে, পরিবারে, সমাজে শান্তি বিরাজ করবে। নসীহত শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও নিরাপত্তার জন্য বিশেষ মুনাজাত করেন তিনি।
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামিআর সিনিয়র মুহাদ্দিস ও সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি চলমান বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ আলোচনা রাখেন। ভারতের নাগরিকত্ব বিলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করেন। আশুসমস্যাগুলো চিহ্নিত করে মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেন।
বিতর্কিত হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক প্রসঙ্গে বলেন, বিজ্ঞান আমরা পছন্দ করি। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় আমরা আনন্দিত। তবে মনে রাখতে হবে বিজ্ঞান মানবতাকে রক্ষা করে আবার ধ্বংসও করে। নৈতিকতা বিবর্জিত বিজ্ঞান মানুষকে বিপদগামী করে। তার উদাহরণ সদ্য প্রতিষ্ঠিত হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক। ইসলামে মাহরামকে বিবাহ করা হারাম। এই ব্যাংক চালু রাখলে এই বিধান ধ্বংসের মুখে পড়বে। কারণ মাতৃদুগ্ধ পান করার মাধ্যমে দেড়শতাধিক নারীকে বিবাহ করা হরাম হয়ে যায়। অথচ এ ব্যাংক থেকে দুধ পান করলে ঐ মাহরামদের চেনা প্রায় অসম্ভব। ফলে দেখা যাবে ব্যক্তি তার নিজের বোন ও মাহরামকেই বিবাহ করে জীবনযাপন করছে। মুসলিমদেরকে ধ্বংসাত্মক ক্ষতি থেকে বাঁচাতে হলে এই ব্যাংক বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে আলেম উলামাদের সাথে আলোচনা করে বিকল্প পথ বের করা যেতে পারে।
বার্ষিক এ মহতি সম্মেলনের সঞ্চালনায় ছিলেন জামিআর সিনিয়র মুহাদ্দিস ও সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতী জসিমুদ্দীন, সহকারী শিক্ষাসচিব মাওলানা আনাস মাদানী ও মাওলানা নুরূল ইসলাম জাদীদ সাহেব।
মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, হযরত মাওলানা আযহারুল হাসান মাদানী (ভারত), হযরত মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুস সালাম সাহেব, হযরত মাওলানা শেখ আহমদ সাহেব, হযরত মাওলানা মুফতী কিফায়াতুল্লাহ সাহেব, হযরত মাওলানা সাজেদুর রহমান সাহেব, হযরত মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ সাহেব দা.বা, হযরত মাওলানা হাফেয নূরুল ইসলাম, হযরত মাওলানা আব্দুল বাছেত খান, হযরত মাওলানা মাহমুদুল হাসান সাহেব, হযরত মাওলানা লোকমান সাহেব, হযরত মাওলানা নোমান সাহেব, হযরত মাওলানা সালাহ উদ্দীন সাহেব, হযরত মাওলানা মুফতী শামসুদ্দীন জিয়া সাহেব, হযরত মাওলানা মুফতী জসীম উদ্দীন সাহেব, হযরত মাওলানা সলীম উল্লাহ সাহেব, হযরত মাওলানা মুফতী আহমুদুল্লাহ সাহেব দা.বা, হযরত মাওলানা মুফতী মাহমুদুল হাসান সাহেব দা.বা, হযরত মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, হযরত মাওলানা আযীযুল হক আলমাদানী, মওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী সাহেব, হযরত মাওলানা ইয়াহইয়া সাহেব , মাওলানা আবু আহমদ সাহেব, মুফতী হুমায়ুন কবীর সাহেব, মাওলানা ফোরকান আহমদ সাহেব , ড. নূরুল আবসার সাহেব, হযরত মাওলানা নূরুল ইসলাম, হযরত মাওলানা মুফতী নূরুল্লাহসহ প্রমুখ।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল্লামা শাহ আহমদ শফী

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ