Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টা আ. লীগ নেতার

প্রাইভেট ও মাদরাসায় যাওয়ার পথে শিকার দুই ছাত্রী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

পিতার অসুস্থতার খবর শুনে নানির বাড়ি থেকে বাবাকে দেখতে আসে মেয়ে। গত সোমবার রাতে দাদির ঘর থেকে মেয়েকে তার ঘরে থাকতে নিয়ে যায় তোতা এবং ওই রাতে নিজের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ঘটনাটি কাউকে বললে মেয়েকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয় তোতা। এ ঘটনায় ভয়ে ঘটনাটি নিয়ে কাউকে কিছু না বললেও পরের রাতে পুনরায় মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই লম্পট পিতা।
এ সময় বিষয়টি মেয়ে তার মামাকে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে তাকে পিতার বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে বলে। এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। ধর্ষণ চেষ্টাকারী পিতা তোতা মিয়া ১২ নং আছিম পাটুলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক

অন্যদিকে, ফেনীর ফুলগাজীতে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণ করা হয়েছে। ওই ছাত্রী গতাকল শনিবার সকালে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায় : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় নিজের মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় পিতা হারুন অর রশিদ আকন্দ তোতাকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার আছিম-পাটুলী গ্রাম থেকে তোতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, তোতা মিয়া উপজেলার আছিম পাটুলি গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল আকন্দের ছেলে। তিনি ১২ নং আছিম পাটুলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর মামা বাদী হয়ে ফুলবাড়িয়া থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।

ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : গলায় ছুরি ঠেকিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণ করার ঘটনায় স্থানীয় যুবক আবু বক্কর ছিদ্দিক ওরফে সোহাগের (৩০) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বখাটের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, ওই স্কুলছাত্রী এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। গতকাল সকাল আটটার দিকে প্রতিদিনের মতো সে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর ওই বখাটে তার পথরোধ করে দাঁড়ায়। তার মুখ চেপে ধরে ও গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সিলোনীয়া নদীর বেড়িবাঁধের ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আবুবক্কর পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন ওই স্কুলছাত্রীকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। পরে ছাত্রীর পরিবারের লোকজনসহ তাকে ফেনীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে ফেনীর সিভিল সার্জন মো. নিয়াতুজ্জামান ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান।

স্থানীয় আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার জানান, ওই বখাটে যুবক প্রায় তিন বছর আগেও একজন স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানি করায় তাঁকে পেটানো হয়েছিল।
ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আএমও) মো. আবু তাহের পাটোয়ারী জানান, হাসপাতালে ওই স্কুলছাত্রীর চিকিৎসা চলছে। তার শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নখের আঁচড়ের দাগও রয়েছে।

ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন জানান, ঘটনাটি শোনার পর তিনি ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : নূরানী মাদরাসার এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে শুক্রবার (০৩ জানুয়ারী) রাতে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তিনজনকে আটক করেন। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ ওই শিক্ষার্থী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের আপুয়ারখাতা সোত্তারভাটা গ্রামের শিশু শিক্ষার্থী (১২) মাদরাসায় যাতায়াতের সময় প্রতিবেশি তৈয়ব আলীর পুত্র হাফিজুর রহমান সোহেল (১৯) তাকে প্রায় সময় উত্ত্যক্ত ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বিকালে ওই শিক্ষার্থী সোহেলের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার পার্শ্বে টিউবওয়েলে হাত পরিস্কার করার জন্য যায়। এ সময় সোহেল ওই শিক্ষার্থীকে মুখ চিপে ধরে জোর করে তার শয়ন ঘরে নিয়ে ধর্ষন করে। এতে ওই শিক্ষার্থীর শরীরে রক্তক্ষরণ শুরু হলে সোহেল তাকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর ওই ছাত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে এসে মাকে বিষয়টি জানানোর সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে ভর্তি করান। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে ওই ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোহেলের মা সিদ্দিকা বেগম, চাচী সেলিনা বেগম সেলী (২৫) ও চাচাতো ভাই সোহেল রানা বাবু (২৭) কে আটক করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফকরুল আলম বলেন, ওই শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করার কারনে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। তাই তার উন্নত চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পুন্ন করার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ধর্ষনের ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মূল আসামী হাফিজুর রহমান সোহেলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

Show all comments
  • Md Kobayet ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    এই জানোয়ার লিংগটা কেটে দিন। দেখবেন ওর সব বাহাদুরি শেষ। আমি জানি এই জারস দের কিছু হবেনা। এমন ঘটনা আরো ঘটবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun Khan ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    ঐ ... বাচ্চার কোন দলিয় পরিচয় না দিয়ে ওর সর্বোচ্চ সাস্তি মৃত্যুদণ্ড কামনা করছি
    Total Reply(0) Reply
  • Humayun Md Humayun Kabir ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    Is it possible??It's a bulsheet man
    Total Reply(0) Reply
  • Md Alam ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    যাদের হাতে নিজের পরিবারের লোকজন নিরাপদ নয় তাদের হাতে একটা দেশ কিভাবে চলবে বাংলাদেশের মানুষ কত হতভাগা জাতি
    Total Reply(0) Reply
  • Lokiatullah Sofiullah ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    বর্তমান যুগটা আমার মনে হইতেছে জাহিলি যুগের ছেয়েও হার মানাইতেছে,৷ কেয়ামত মনে অতি নিকটে এসে গেছে, এই জানোয়ার নিজেরে নিজেই মরে যাওয়ার দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • Azizur Rahman Khan ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    জাহেলিয়াত যুগে বাবা কন্যা সন্তানকে মাটিতে পুতে রাখতো সম্ভ্রম বাচানোর জন্য। আর এখন লালন পালন করে বড় করে ধর্ষণ করার জন্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Mayeen Uddin ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    ওরা ক্ষমতার অপব্যবহার ঘরে ও শুরু করে দিয়েছে??
    Total Reply(0) Reply
  • Shahed Khandakar ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    জন সম্মুখে দাড় করিয়ে এদের কঠিনতম শাস্তি দেওয়া দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • ahammad ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ২:১২ এএম says : 0
    দর্ষ্যনের শাস্তি মৃত্যুদন্ড সংবিধানে পাস করা হউক এটা সময়ের দাবী। এবং দর্ষক প্রমানিত হওয়ার দিনই কোন প্রকার আপিলের সুযোগ না দিয়ে ফাসি কর্যকর করা হলে এক মাসের মধ্যেই দর্ষন চিরতরে বন্দ হয়ে যাবে। দর্ষনের মহামারী আর থাকবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • shaik ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:২৭ এএম says : 0
    Nawjubillah, ........
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৮:৩৫ এএম says : 0
    জানোয়ার মুক্ত বাংলাদেশ চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৩৭ পিএম says : 0
    সঠিকভাবে বিচার করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ