Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উত্তরের কনকনে হিমেল হাওয়ায় শীতকষ্ট হালকা গুঁড়ি বৃষ্টি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম


দেশের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পৌষের শেষ দিকে ঘোর শীত মৌসুমের বর্তমান সময়ের স্বাভাবিকের তুলনায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি বা ‘ঈষৎ উষ্ণ’ রয়েছে। এর অন্যতম কারণ মেঘলা আকাশ।

উত্তুরের হিমেল কনকনে হাওয়া, কমবেশি কুয়াশাপাত এবং রোদের তেজ কমে যাওয়া- এই তিন কারণে শীতকষ্টে ভুগছে মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ঢাকা অঞ্চলে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা শীতল বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন স্থানে হালকা কিংবা গুঁড়ি গুঁড়ি বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ঝরেছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় রাজশাহী বিভাগের ঈশ্বরদীতে ৪ মিলিমিটার। এ সময় গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে ৩ মি.মি. করে, খুলনা, সৈয়দপুর, তাড়াশ, শ্রীমঙ্গলে ২ মি.মি. করে এবং রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, কুমারখালী, নিকলি, ময়মনসিংহ, কুমিল্লায় ১ মি.মি. করে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর রাজধানী ঢাকা, সিলেট, যশোর ও কয়েক জায়গায় ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ঝরে। তবে এ সময় বরিশাল বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়নি।

দিন ও রাতের তাপমাত্রা ছিল গতকাল যথেষ্ট সহনীয়। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ পারদ ছিল টেকনাফে ২৭.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকায় পারদ সর্বোচ্চ ২৩ এবং সর্বনিম্ন ১৩.৫ ডিগ্রি সে.। অধিকাংশ জেলায় গতকাল দিনের তাপমাত্রা ছিল ২৩ থেকে ২৬ ডিগ্রিতে।

এদিকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী কুয়াশা পড়তে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

বর্তমানে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার এবং এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ অবস্থায় শীতের বলয় বা মূল কেন্দ্রটি বাংলাদেশ থেকে আপাতত বেশ দূরত্বে অবস্থান করছে।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে মেঘলা আকাশ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। তাপমাত্রা বাড়লেও বৃষ্টির কারণে শীতের দাপট বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। বিকেলে তা কমে দাঁড়ায় ২৫ শতাংশে।

রাতভর ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হলেও সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টি থামে। তবে দুপুর পর্যন্ত আকাশ ছিল মেঘলা। কিছুক্ষণের জন্য মেঘলা আকাশ রৌদ্রোজ্জ্বল হয়ে ওঠে। খানিক বাদে আবারও শুরু হয় মেঘ আর রোদের লুকোচুরি খেলা। এদিকে ভোরের দিকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে মহানগরীর অনেক নিচু এলাকা কর্দমাক্ত হয়ে যায়। বৃষ্টি ও হিমেল বাতাসের ফলে সকালে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে স্কুলগামী শিশু ও কর্মজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।

এদিকে দিনভর সূর্যের আলোর উত্তাপ কম থাকায় ঠাÐা বাতাসের দাপট ছিল। এতে ছিন্নমূল মানুষকে আরও বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ঠাÐাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের অনেকেই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেসহ ডাক্তারদের চেম্বারে ভিড় করছেন।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস জানান, রাজশাহীর ওপর দিয়ে প্রায় দেড় মাস ধরে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বেড়েছে নবজাতকের সংখ্যাও। তীব্র শীতের ফলে বেশিরভাগ নবজাতকই নিউমোনিয়াসহ ঠাÐাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, কোল্ড ডায়রিয়াসহ ঠাÐাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ