Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন ভাইরাসে চীনে মহামারীর আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ১০:৫৯ এএম | আপডেট : ১২:৪৪ পিএম, ১২ জানুয়ারি, ২০২০

চীনে নতুন ধরণের কোরোনা ভাইরাসের আবির্ভাব হয়েছে। এতে অন্তত একজন মারা গেছে। সে দেশের সরকার আশঙ্কা করছে, ২০০০ সালের দিকে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাসের মতো মহামারি সৃষ্টি করতে পারে এই ভাইরাস। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি। চীনের ইয়ুহান পৌর স্বাস্থ্য কমিশন বলেছে, নতুন এই করোনাভাইরাসের কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এখন পর্যন্ত ৪১ জন। এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। সাত জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অবশ্য এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯ বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

এখন বলা হচ্ছে, কারও কারও অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। দুই জন সুস্থ হওয়া হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

যেই রোগী মারা গেছেন তিনি ৬১ বছর বয়সী। নিঃশ্বাসে সমস্যা ও মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। কমিশন বলেছে, নিউমোনিয়া ছাড়াও পেটে টিউমার ও জটিল লিভারের রোগ ছিল তার। তিনি খাদ্য গ্রহণ করতেন উইহানের শহরতলীর বাজার থেকে। বেশিরভাগ রোগীই এই বাজার থেকে খাবার কিনতেন।

চীন বলছে, এই রোগের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে সার্স ভাইরাসের মতো মহামারী আকারে এই রোগ ছড়াতে পারে বলে যেই আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করতে চেয়েছে। ওই রোগে ২০০২ ও ২০০৩ সালে চীনে শ’ শ’ মানুষ মারা গিয়েছিল।
করোনাভাইরাস হলো ভাইরাসের একটি বড় শ্রেণি। এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত কিছু ভাইরাস সর্দি কাশির জন্য দায়ী। তবে বাদুড়, উট ও কিছু প্রাণিতে এই শ্রেণির কিছু ভাইরাস পাওয়া যায়, যেগুলো মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
চীনে যেই নিউমোনিয়া দেখা যাচ্ছে, সেখানে সাধারণ লক্ষণ হলো, সর্দি, মাথাব্যাথা, কাশি ও জ্বর। এছাড়া নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা, ঠান্ডা অনুভূত হওয়া শরীরে ব্যাথা দেখা দেওয়া গুরুতর ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।
চীনের পরিবহণ মন্ত্রণালয় বলেছে, আসছে পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে এই রোগের সম্ভাব্য বিস্তার ঠেকাতে ট্রেন, বিমান ও বাসকে জীবাণুমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ওয়াং ইয়াং সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মহামারী রোগের কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে, সামনের ভ্রমণ মৌসুমে এমনটা হতে পারে বেশি। তবে যাত্রীদের স্বাস্থ্য আরও সুরক্ষিত করতে, আমাদের মন্ত্রণালয় বাস, ট্রেন ও বিমান জীবাণুমুক্ত করা, নজরদারি ও সুরক্ষামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করবে। বিশেষ করে, যেসব অঞ্চলে বেশি সংখ্যক মানুষ ভ্রমণ করেন সেখানে এই কার্যক্রম জোরদার করা হবে।’

চীন ছাড়াও এই রোগের সঙ্গে সম্ভাব্য সাদৃশ্য পাওয়া গেছে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে। রোগীরা নিজেরা বা তাদের আশেপাশের কেউ উইহান শহরে সম্প্রতি সফর করেছেন বলে জানা গেছে। তবে চীনে উইহান শহরের বাইরে অন্য কোনো শহর থেকে কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর আসেনি। উইহান এমনিতেই অনেক বড় শহর। এই শহরে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। মধ্য চীনের পরিবহণ কেন্দ্রস্থল হিসেবে এই শহরের পরিচিতি আছে। ফলে এই শহর থেকে রোগ ছড়ালে চীনের অন্যান্য স্থানেও রোগী পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ বিশেষজ্ঞ ইউয়েন ক্যোক-ইয়াং বলেছেন, নতুন এই করোনাভাইরাসের জেনেটিক গঠনের সঙ্গে ২০০২-০৩ সালের সার্স ভাইরাসের ৮০ শতাংশ সাদৃশ্য রয়েছে। সার্স ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল বাদুর, বিড়াল ও মানুষের মধ্যে।
ইউয়েন বলেছেন, এই ভাইরাস সার্স ভাইরাসের মতো আরও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তিনি বলেছেন, আরও মারাত্মক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী ব্যবস্থা হংকং-এর রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এখন সব ধরণের পদক্ষেপ নিতে হবে এবং পরিস্থিতির দিকে ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ