Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিটি নির্বাচনে প্রি-ইলেকশন রিগিং শুরু হয়েছে -আমীর খসরু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:৫১ পিএম

ঢাকার সিটি নির্বাচনে ‘প্রি-ইলেকশন রিগিং’ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি একটু আগে দেখলাম, ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের যিনি প্রার্থী উনাকে অভ্যর্থনা দেয়ার জন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সারিবদ্ধভাবে ফুল নিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে সংবাদটি চলে এসেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করছে আপনারা কি জন্য দাঁড়িয়েছে, তারা বলেছে, আমরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে অভ্যর্থনা দেয়ার জন্য আমরা দাঁড়িয়েছি। আপনাদের কে বলেছে, তারা বলছে- স্কুলের পক্ষ থেকে আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে অভ্যর্থনা জানাতে। নির্বাচনে প্রি-ইলেকশন রিগিং তো শুরু হয়ে গেছে অলরেডি। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত অপেক্ষার আর প্রয়োজনীয়তা নেই।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে ‘নির্বাচনে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, আমরা তারপরেও নির্বাচনে যাচ্ছি। কারণ এজন্য যে, একেকটি নির্বাচন একেকটি কারচুপির মাইলস্টোন, একেকটি নির্বাচন একেকটি গণতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের মাইলস্টোন, একেকটি নির্বাচন এই সরকারের মানুষের ভোট কেড়ে নেয়ার মাইলস্টোন। এসব যোগ করে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে ভোটের অবস্থা জানিয়ে মহানগরের সাবেক সভাপতি আমীর খসরু বলেন, চট্টগ্রামের উপ-নির্বাচনের খবরাখবর আমার কাছে এসেছে। সেখানে প্রায় সকল কেন্দ্র সরকারি দল দখল করে নিয়েছে অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে ভয়ভীতির মাধ্যমে এবং ইভিএমের মাধ্যমে তারা সন্দুরভাবে ভোট নিয়ে যাচ্ছে। ভোটার ভোট দেক আর না দেক। সরকারি দল কেন্দ্র দখল করে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করাচ্ছে। ফলাফল আপনারা বিকালে জানতে পারবেন।

ঢাকাতেও একই কার্যক্রম শুরু হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রচারণার সময়ে গ্রেপ্তার করবে না বলেছে। নির্বাচন কমিশনে আমি নিজে গিয়েছিলাম। আমাকে ইসি ওয়াদা করেছে ৩০ তারিখ পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার হবে না, কোনো অভিযান চলবে না। গ্রেপ্তারও চলছে, অভিযানও চলছে, আক্রমণ চলছে, হামলা চলছে এবং হামলার মাধ্যমে একটা ভয়ভীতির পরিবেশ তারা সৃষ্টি করেছে।

ইভিএমের বিরোধিতা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, আমরা ইভিএমকে চিরতরে যদি বিদায় করতে না পারি, বাংলাদেশে আগামী দিনে নির্বাচনী ব্যবস্থা বলে আর কিছু থাকবে না। আমি মনে করি না, এই মেশিনের মাধ্যমে দেশের মানুষ কোনো দিন তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে-ইভিএম বন্ধ করতে হবে। নতুবা ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামী দিনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আমীর খসরু বলেন, যেখানে সিংহভাগ নিবন্ধিত বিরোধী দলের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে এককভাবে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার পেছনে উদ্দেশ্য কি আপনার বুঝার তো বাকি নেই। তাদের একমাত্র পথ হচ্ছে এখন ইলেক্ট্রনিকেলি ভোট চুরি করতে হবে, ডিজিটালি ভোট চুরি করতে হবে। নিরবে যেটা জনসমক্ষে ধরা পড়ে এই ধরনের ভোট চুরি থেকে সরে গিয়ে তারা এখন ডিজিটালি ভোট চুরির পথে গেছে।

খসরু বলেন, এই মেশিনের ভোট প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নাই। সুতরাং এটা বন্ধ করা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। সত্যিকার অর্থে যারা প্রযুক্তি জন্ম দেয়, যাদের প্রযুক্তির বিষয়ে গভীর জ্ঞান আছে তারা কেনো ইভিএম বাদ দিয়েছে। যদিও তাদের সরকার প্রশ্নবিদ্ধ নয়, তাদের নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ নয়, তাদের নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ নয় তারপরে তারা বাদ দিয়েছে। আর এখানে সব কিছু প্রশ্নবিদ্ধ। এখানে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ, নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ, নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা আছে সবাই আজকে প্রশ্নবিদ্ধ, দেশে বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ তারা ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আপনার ভোট কেডে নেয়া ছাড়া আর কোনো কিছু হতে পারে না।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির আহমেদ আজম খান, খায়রুল কবির খোকন, শ্যামা ওবায়েদ, বিলকিছ ইসলাম, নাসির হায়দার, উলামায়ে ইসলামের মাওলানা শোয়েব আহমেদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমীর খসরু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ