Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী ধর্ষণেছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

ধর্ষক তারব পৌরসভা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের আরো অনেকেই ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরই উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল আলম শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ মাসুম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারাব পৌরসভা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতাররা নারায়ণগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ছাত্রলীগের আরো বেশ কয়েকজন ধর্ষণের সাথে জড়িত। তাদের বাঁচাতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। এজাহারভুক্ত ৪ আসামির মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি রূপসী এলাকার মৃত কবিরের ছেলে তানভীরকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

এজাহারভুক্ত আসামির বাইরে যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে পুলিশেরও মাথা ব্যথা নেই। ছাত্রলীগের এ সিন্ডিকেটটি ফেন্সিডিল, ইয়াবা, মদ, বিয়ার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এদের সেল্টার দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী কয়েক নেতা। আর ওই নেতারাই এখন এজাহারভুক্ত আসামির বাইরে যারা জড়িত তাদের বাঁচাতে মরিয়া। সিন্ডিকেটটি রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ, আড়াইহাজার, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকার মাদকের আধিপত্য চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার পর থেকেই জনমনে চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, মেয়ের এ কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছি না। আমার মতো আর কোনো বাবার জীবনে যেন এমন দুঃখ আর না আসে। আমি ধর্ষকদের ফাঁসি চাই।

তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ধর্ষক কোন দলের সেটি দেখার বিষয় নয়, তার একমাত্র পরিচয় সে ধর্ষক। ছাত্রলীগে ধর্ষকদের স্থান নেই। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানো হবে।

গন্ধর্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ানসহ সব ধর্ষকের ফাঁসি চাই। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধেই কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, এজাহারভুক্ত আসামি তানভীরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে গ্রেফতাররা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো অনেকের নাম আসতে পারে। অপরাধী বা অপরাধীর সেল্টারদাতারা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন পুলিশ কাউকে ছাড় দিবে না।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলার তারাবো গন্ধর্বপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় তৌসিফ, আফজাল, তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান ও তানভীরসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন। পরে রূপসী ও কর্ণগোপ এলাকার পৃথক দুটি বাড়িতে দুদিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে শুক্রবার গভীর রাতে তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকায় ফেলে রেখে যায়। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।



 

Show all comments
  • ahammad ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ২:৫০ এএম says : 0
    দর্ষকদের বহিস্কার করাতে দর্ষিতা কিছু পেয়েছে কি ? যাহারা বহিস্কার করেছেন তাদের পরিবারের সদস্য বা নিকটাত্বীয় আজ দর্ষনের স্বিকার হলে ওনাদের ভুমিকা কেমন হতো ???
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ