Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আমেরিকা নয়, শত্রু দেশের নেতারাই

আজাদি স্কোয়ারে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের গুলি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

তেহরানের আজাদি স্কোয়ারে গতকাল ছিল উপচে পড়ছে ভিড়। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কেউ তুলেছেন সরকার-বিরোধী স্লোগান। সমাবেশ থেকে আওয়াজ ওঠে, ‘মিথ্যা বোঝাচ্ছেন দেশের নেতারা। তারাই সবচেয়ে বড় শত্রু, আমেরিকা নয়।’ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গতকাল পুলিশ গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার ভুলবশত ইউক্রেনীয়ান বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা তেহরান মেনে নেওয়ার পর থেকেই ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি পড়েছে। ইরানের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ।

গতকাল সকালেও আজাদি স্কোয়ারে প্রায় তিন হাজার মানুষ জড়ো হয়ে সর্ব্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খোমেনির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। সরকারের শীর্ষ আমলাদের পদত্যাগের দাবিও উঠেছে দফায় দফায়। ইরানের নিউইয়র্ক ভিত্তিক সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস-এ পাঠানো ভিডিও যাচাই করে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, আজাদি স্কোয়ারের কাছাকাছি বিক্ষোভকারীদের উপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।। গ্যাস থেকে বাঁচতে অনেককে দৌড়াতে দেখা ফারসিতে এক মহিলার চিৎকার শোনা যায়, ‘তারা লোকদের দিকে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে! স্বৈরশাসকের মৃত্যু চাই!’ অন্য একটি ভিডিও দেখা যায়, রক্তাক্ত এক মহিলাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার চারপাশের লোকেরা চিৎকার করে বলেছে যে, তাকে গুলি করা হয়েছে। ঘটনার পরে ফটো এবং ভিডিও ফুটজে রাস্তার অনেক জায়গা রক্তে লাল হয়ে থাকতে দেখা যায়। তেহরানের পুলিশ প্রধান জেনারেল হোসেইন রহিমি গুলি চারানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে ইরানের আধাসরকারি সংবাদ মাধ্যম ফার্স নিউজ এজেন্সি বলেছে যে, পুলিশ কিছু কিছু জায়গায় টিয়ার গ্যাস চালিয়েছে।

গত শনিবার তেহরানের আমির কবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি মিছিল শুরু হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই শান্তি মিছিল চরম বিক্ষোভের চেহারা নেয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খোমেনি-সহ সরকারের উচ্চপদস্থ আমলাদের পদত্যাগের দাবি ওঠে। এর পরে রোববারও ইরাকের মাটিতে একটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। বাগদাদের উত্তরে আল বালাড নামে ওই ঘাঁটিতে আছড়ে পড়ে চারটি রকেট, যাতে আহত হন চারজন। এই হামলার জন্যও ইরানকে দায়ী করে মার্কিন সেনা। এই হামলার পরে বিক্ষোভ ফের মাথাচাড়া দেয় ইরানে।

ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম স‚ত্রে খবর, শনিবারের মিছিলে যোগ দিয়ে আটক হন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদ‚ত রব ম্যাকেয়ার। বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে তাকে ঘণ্টাখানেক আটক করে রাখে ইরানি প্রশাসন। এই ঘটনাকে ভাল চোখে দেখেনি তেহরানের মানুষজন। কোনও রাষ্ট্রদ‚তকে এভাবে আটক করে রাখার ঘটনা আন্তর্জাতিক ক‚টনীতিতে নজিরবিহিন। রব ম্যাকেয়ারকে আটক করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলেই দাবি তুলেছে ব্রিটেন।

বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ইরান সরকারকে, ‘মিথ্যুক’, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের দাবি, রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময়েই বিমানটিতে পরপর দু’টি রকেট ছোড়া হয়। ভিডিও ফুটেজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রমাণও পাওয়া গেছে। অভিযোগ, বিমানটিতে যেহেতু কানাডার নাগরিকরা ছিলেন তাই জেনেবুঝেই হামলা চালিয়েছে ইরানি সেনাবাহিনী। নিরীহ প্রাণের হত্যা যুদ্ধাপরাধেরই সামিল। সূত্র : ডয়চে ভেলে, এপি।



 

Show all comments
  • Mahbubul Islam ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 1
    ইসরায়েলের দালালদের মেরে ফেলা ভাল।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Aminur Hossain Jewel ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:০১ এএম says : 1
    যুদ্ধ জড়াতে যতটা না ইরান আর আমেরিকার আগ্রহ, তার চেয়ে সাংবাদিকদের আগ্রহ মনে হয় বেশি।
    Total Reply(0) Reply
  • Hassan Jafri ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 1
    ফিলিসতিনীদের প্রতি ইসরাইলের জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ নাকরলেই এবং ঐ এলাকায় ইসরাইলের দাসত্ব শিকার করলেই সমস্যা সহজ সমাধান ইরানের জন্য
    Total Reply(0) Reply
  • Bain Dibakar ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:০৮ এএম says : 0
    ইরানের প্রথম হামলাই ভুল লক্ষবস্তুতে। অতএব সবাই সাবধান ! আমেরিকাকে মারতে গিয়ে শেষে আমাদের দিকে না মারে ।
    Total Reply(0) Reply
  • সৌরভ রয়েল শুভজিৎ ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১০ এএম says : 0
    ইরান ইচ্ছা করে বিমান যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করেছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ