Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৫২০টি গ্রামীণ বাজারের নির্মাণকাজ শুরু

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

গ্রামীণ পর্যায়ে ব্যবসার পরিবেশ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি লক্ষে সারাদেশে ৫২০টি মডেল গ্রামীণ বাজার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ১হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৯১টি উপজেলায় এসব বাজার নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

ইতোমধ্যে ২০৩টি গ্রামীণ বাজার নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবানের কাজ শেষ। ৫০টি গ্রামীণ বাজার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের পরিচালক শাহ আলমগীর। তিনি বলেন, কৃষি ও অকৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণের সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছর জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। চার তলা বিশিষ্ট ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার বর্গফুট আয়তের মোট ৫২০টি গ্রামীণ বাজার নির্মাণের কাজ করা হবে। এসব বাজার নির্মাণ হলে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। গ্রাম পর্যায়ে ব্যবসার উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উপজেলা হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নবনির্মিত ভবনের বিভিন্ন অংশের ইজারা প্রদান করবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ, কৃষিপণ্য ন্যায্যম‚ল্যে প্রাপ্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য স¤প্রসারণ ও পরিবহন ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ১ হাজার ২০০টি গ্রোথ সেন্টার ও গ্রামীণ হাটবাজার নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। পরে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি পরে আকার বৃদ্ধি করা হয়। সামগ্রিকভাবে পল্লী এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রকল্পটির ব্যয় ও বরাদ্দ স্থানীয় সরকার বিভাগের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে প্রদানের ব্যবস্থা করে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রত্যয়ন করেছে। এসব বিবেচনায় ১ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৯১টি উপজেলায় ৫২০টি গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)অনুমোদন দেয়া হয়।

যেসব জেলায় গ্রামীণ মডেল বাজার নির্মানের কাজ শরু হযেছে সে জেলা গুলো হচ্ছে, রংপুর, বগুড়া, মাদারীপুর, জামালপুর, নোয়াখালী, পাবনা, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় কাজ চলমান রয়েছে।

প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়, গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতি কৃষির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করতে হলে গ্রামীণ হাট বাজার নির্মাণ জরুরি। ফলে গ্রামীণ কৃষক ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা (ব্যবসায়ী) সুযোগ পেয়ে থাকে। বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ সুবিধার অবাবে মধ্যস্বত্বভোগীদের নিকট স্বল্প মূল্যে উৎপাদন স্থলেই বিক্রি উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে স্থায়ী অবকাঠামো না থাকায় গ্রামীণ বাজারে মালামালের সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় ভোক্তাদের অধিক মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি গ্রামীণ বাজারে ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার বর্গফুটের বাজার ও অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো সুবিধা দেয়া গেলে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের সহজ বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকরা প্রতিযোগিতামূলক দামে তার পণ্য বিক্রি করতে পারবে। এজন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। বাজারের নকশায় বলা হয়েছে, চার তলা ফাইনডেশনের প্রতিটি গ্রামীন বাজারে একক ভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। দোতলায় থাকছে আধুনিক মার্কেট। এক ছাদের নীচে পুরো মার্কেটের সুবিধা। প্রায় ৪ হাজার থেকে দশ হাজার বর্গ ফুট ফ্লোর এরিয়া বিশিষ্ট মার্কেট। আধুনিক মার্কেটের নীচ তলায় থাকছে কাঁচা বাজার, মাছ-মাংসের দোকান ও মুদির দোকান। দোতলায় অর্ধেক অংশে হার্ডওয়ার, গার্মেন্টস, কসমেটিকস এবং মহিলাদের দোকান, আলাদা টয়লেটসহ মহিলা ও শিশুদের জন্য আলাদা কর্ণার। তৃতীয় তলায় থাকছে ইলেকট্রিক্যাল-ইলেকট্রনিক, টেইলরিং এবং কাপড়ের দোকান। চতুর্থ তলায় রয়েছে ভকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, সাইবার ক্যাফে ও খাবার দোকান। সাব-সয়েল, ইনভেস্টিগেশন ও টপো সার্ভে সম্পাদনপূর্বক মার্কেটে জমির প্রাপ্যতা এবং অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন স্থাপত্য নকশার দৃষ্টি নন্দন মডেল গ্রামীণ মার্কেট নির্মাণ হচ্ছে। মার্কেটের চারিদিকে জনগণ প্রবেশ করতে পারবে এবং বাহির হতে পারবে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মার্কেটে মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা টয়েলেটের সুবিধা রাখা হযেছে। এছাড়া মার্কেটের ছাদে সোলার প্যানেল মাধ্যমে নির্মল সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ডিজাইনের সার্বিকভাবে নকশা প্রণয়ণ ও অনুমোদন করে এলজিইডির ডিজাইন ইউনিট।



 

Show all comments
  • বিদ্যুৎ মিয়া ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:১৫ এএম says : 0
    খুব ভালো উদ্যোগ
    Total Reply(0) Reply
  • Biddut ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১:৪৩ পিএম says : 0
    Darun akta uddog niyece govt .ata village or rural area gulo ke anek somriddho korbe sathe grameen jibon jatrar man unnowon hobe.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রামীণ বাজার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ