Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আল-কুদস দিবস আজ

প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আজ রমযানের শেষ শুক্রবার আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস। বায়তুল মুকাদ্দাস ইসলামের ১ম কিবলা এবং মক্কা মুআয্যামাহ ও মদিনা মুনাওয়ারার পরে তৃতীয় পবিত্র স্থান। হজরত রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কার মসজিদুল হারাম, মদীনার মসজিদুন্নবী ও বায়তুল মুকাদ্দাস মসজিদের উদ্দেশ্যে সফরকে বিশেষভাবে সওয়াবের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যা অন্য কোন মসজিদ সম্পর্কে করেননি। হিজরতের পর বায়তুল মুকাদ্দাস ইসলামের প্রথম কিবলা। এ পবিত্র ঘর থেকেই খাতামুন্নাবীয়ীন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজে গমন করেছিলেন।
বায়তুল মুকাদ্দাস নাম সকল মুসলমানের ঈমান ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসূলের মাজার। ওহী ও ইসলামের অবতরণ স্থল এ নগরী নবীগণের দ্বীন প্রচারের কেন্দ্রভূমি। তাই এ পবিত্র নগরীর প্রতি ভালবাসা প্রতিটি মু‘মিনের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত। হজরত ইবরাহীম (আ.) কা‘বা ঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর হজরত ইয়াকুব (আ.) জেরুজালেমে আল আকসা মসজিদ নির্মাণ করেন। অতঃপর হজরত সুলায়মান (আ.) এই পবিত্র মসজিদের পুনঃনির্মাণ করেন। ৬৩৮ ঈসায়ী সালে দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) এর খিলাফতকালে পুরো বাইতুল মুকাদ্দাস এলাকা মুসলমানদের দখলে আসে। ১০৯৬ সালে খ্রিস্টান ক্রুসেডারগণ সমগ্র সিরিয়া ও ফিলিস্তিন দখল করে নেয়ার পর বাইতুল মুকাদ্দাস মসজিদের ব্যাপক পরিবর্তন করে একে গীর্জায় পরিণত করে। এরপর ১১৮৭ সালে মুসলিম বীর ও সিপাহসালার সুলতান সালাহ উদ্দীন আইয়ুবী জেরুজালেম শহর মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর হাতে পরাজিত হওয়ার পর খ্রিস্ট শক্তি পিছু হটলেও ইয়াহুদী চক্র বায়তুল মুকাদ্দাসের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি রাখে। তারা ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে সুদূর মদীনা পর্যন্ত সারা মুসলিম এলাকা নিয়ে বৃহত্তর ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করে।
তারা তাদের খারাপ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তুরস্কের তৎকালীন শাসক সুলতান আবদুল হামিদের নিকট ফিলিস্তিনে জমি কেনার অনুমতি চায় এবং এর বিনিময়ে তারা তুরস্কের সকল বিদেশী ঋণ পরিশোধ করে দেবে বলে অঙ্গীকার করে। সুলতান তাদের এ ষড়ন্ত্রমূলক প্রস্তাব মানেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইয়াহুদীরা গোপনে জমি কিনতে থাকে। ১৯১৭ সালে ইংরেজরা ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে ও ১৯২০ সালে সেখানে পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং স্যার হার্বাট স্যামুয়েল নামক একজন ইয়াহুদীকে সেখানে বৃটিশ নিযুক্ত করে। ফলে জমি কেনায় বহিরাগত ইয়াহুদীদের জন্য ফিলিস্তিনের দুয়ার খুলে যায়। উগ্র সংস্থাগুলোকে ফিলিস্তিনে বসবাস ও জমি কেনার জন্য কোটি কোটি ডলার প্রদান করে। ফলে অতি অল্প দিনের মধ্যে বহু সংখ্যক ইয়াহুদী ফিলিস্তিনে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে। দাঙ্গার  প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিনকে আরব ও ইয়াহুদীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। যার ফলে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে যায়নবাদী অবৈধ ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভের পর ইয়াহুদীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং মুসলানদের কচুকাটা করতে থাকে। তাদের অত্যাচারে জর্জরিত আরবরা জীবন বাঁচাতে দলে দলে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের দখলে ছিল। কিন্তু আরবদের দুর্বলতার মুখে ১৯৬৭ সালের আরব ইসরাঈল যুদ্ধের মাধ্যমেও তা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। আর ধূর্ত ইহুদীরা পশ্চিমা প্রভুদের গোপন সহায়তায় তাদের ঘৃণ্য চক্তান্ত অব্যাহত রাখে এবং একের পর এক নিরীহ নিরস্ত্র মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যেতে থাকে।
আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আজ শুক্রবার, সকাল ১১টায় বিএমএ মিলনায়তনে (প্রেসক্লাবের বিপরীতে) ‘ইহুদীবাদি ষড়যন্ত্র ও মুসলিম বিশ্বের অনৈক্য আল-কুদ্স মুক্তির অন্তরায়’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ প্রধান অতিথি থাকবেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত, রাজনীতিবিদ, আলেম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, আইনজীবী আলোচনা পেশ করবেন। এছাড়া দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।















 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল-কুদস দিবস আজ

১ জুলাই, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ