Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পদ্মা সেতু ডিসেম্বরে, মেট্রোরেল উদ্বোধন আগামী বছর জুনে

সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৩৮ এএম

বিএনপি অস্ত্রধারী গুÐাদের ঢাকায় এনে জড়ো করছে
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরিবেশ বিঘিœত করতে বিএনপি ঢাকার বাইরে থেকে অস্ত্রধারী গুন্ডাদের ঢাকায় এবে জড়ো করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সম্পাদকমÐলীর সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, এরমধ্যে জানা যাচ্ছে বহিরাগত অস্ত্রধারীদের ঢাকায় এনে জড়ো করা হচ্ছে। নির্বাচনী কেন্দ্র দখলের জন্য তারা (বিএনপি) পাঁয়তারা করছে। বাইরের গুন্ডাদেরকে এনে ইলেকশনের পরিবেশ ক্ষুণœ করা, এমনকি নির্বাচনের দিন সশস্ত্র মহড়া দেওয়ার বিষয়টি তারা পরিকল্পনা করে রেখেছে।

এ বিষয় গুলো নিয়ে আওয়ামী লীগের উদ্বেগের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা এগুলো নির্বাচন কমিশনকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছি। সেই সঙ্গে বলেছি শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচনকে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কর্তৃত্বপরায়ণ অবস্থান থেকে নির্বাচন পরিচালনা করার সকল স্বাধীনতা এবং সুবিধা দিতে প্রস্তুত।

বিএনপির এমন অবস্থানে নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই যে তারা সশস্ত্র ব্যক্তিদের ঢাকায় এনে জড়ো করছে, এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তল্লাশি করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশন যদি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চান তাহলে তাদেরকে সেরকম পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। এ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

সিটি নির্বাচনে বিদ্রোহীদের নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষুণœ হচ্ছে, এমন খবর কি এখন পর্যন্ত আছে? আমরা অভ্যন্তরীনভাবে দেখছি। এগুলো আমাদের উপর ছেড়ে দিন।এটা আপনাদের (সাংবাদিক) বিষয় নয়, এটা আমাদের বিষয়। আমাদের ডিসিপ্লিনারি কমিটি আছে, তারা সেগুলো দেখবে।বিদ্রোহীদের কারণে নির্বাচনী পরিবেশ যখন নষ্ট হচ্ছে না, তখন বিষয়গুলো আমাদের উপর ছেড়ে দেন।
সম্পাদকমÐলীর আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন: আগামী এক মাসের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকীয় উপ-কমিটিগুলো গঠন করে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের ফেব্রæয়ারি মাস থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, উপজেলা, থানা কমিটিগুলোর কাউন্সিল করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে স্বরণীকা বের করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া প্রবীণ নেতাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সভাপতিমÐলীর সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মণি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

আগামী বছরে জুনে পদ্মা সেতু- ডিসেম্বরে মেট্রোরেল উদ্বোধন
আগামী ২০২১ সালের জুনে পদ্মা সেতু ও ডিসেম্বরে মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে উত্থাপিত সরকারি দলের এমপি দিদারুল আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

মন্ত্রী জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২১ সালের জুন মাসে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে মাওয়া সংযোগ সড়ক, জাজিরা সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২ এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মূল সেতু এবং নদী শাসন কাজের ভৌত অগ্রগতি যথাক্রমে ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ৬৬ শতাংশ। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫ শতাংশ। পদ্মা সেতুর ৪১টি স্টিল ট্রাসের মধ্যে ২০টি ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। বাকী ২১টি আগামী জুলাই মাসের মধ্যে স্থাপন করা হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি মেট্রোরেল সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে উত্তরা ৩য় পর্ব হতে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৬ স্টেশন বিশিষ্ট উভয় দিকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম আধুনিক সময় সাশ্রয়ী পরিবেশ বান্ধব ও বিদ্যুৎ চালিত এমআরটি নির্মাণের লক্ষ্যে এমআরটি-৬ উড়াল মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সার্বিক গড় অগ্রগতি ৪০ দশমিক ০২ শতাংশ।

প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব হতে আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৬৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ৩৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এমআরটি-৬ বর্ধিত করার জন্য মাটির সমীক্ষা চলছে। এ অংশের দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে ৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষের ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল সস্পূর্ণ অংশ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। মন্ত্রী জানান, উড়াল ও পাতাল মেট্রোরেলের সমন্বয়ে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট লাইন-১ এর কাজও পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এমআরটি লাইন-১ দুটি অংশে বিভক্ত। এর একটি হচ্ছে ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্ডারগ্রাউন্ড বিমানবন্দর রুট (বিমানবন্দর হতে কমলাপুর) এবং ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড পূর্বাচল রুট (নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো) বিমানবন্দর রুটেই বাংলাদেশে প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা সেতু

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৬ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ