Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

টাঙ্গাইলের ঝিনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী মহল

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২৫ পিএম

কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, ইউপি সদস্য ও দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ঝিনাই নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছে একটি মহল। এ নিয়ে এলাকাবাসী বার বার প্রশাসনের দরজায় কড়া নাড়লেও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। এভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদীর পাশেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নদী পারের মানুষদের থাকার মত কোন জায়গা থাকবে না বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের নথখোলা এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে ঝিনাই নদী। এ নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু এবং তার দু পাশে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধের স্বরণে স্মৃতিস্তম্ব। আর এ নদীর দু পাড়ে রয়েছে বসতবাড়ি ও ফসলী জমি। বিগত বছরে এ নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করার ফলে ইতিমধ্যে একটি শহীদ মিনার নদী গর্ভে বিলীনসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাংশ এবং নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকাবাসী। এবছরও শুরু হয়েছে এ নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন। অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলন করায় ঝিনাই নদীর উপর নির্মিত সেতুটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেই সাথে নদীর পাড় ঘেসে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ব ও দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বালু উত্তোলনের ফলে ধুলা বালির কারনে সড়ক দিয়ে চলাচলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে সাধারন মানুষদের। এ নিয়ে প্রতিবাদ করেও কোন ফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নথখোলা ঝিনাই নদী থেকে ভেকু দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন প্রায় শত শত ট্রাক ও মাহিন্দ্র ট্রাক্টর দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বালু বিক্রি করা হচ্ছে। এ নদী থেকে বিগত দিনগুলোতে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়ে একটি শহীদ মিনার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সাথে শহীদ মিনারের সাথেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার একাংশ ভেঙ্গে গেছে। নদীর অপর পাশে রয়েছে আরো কিছু স্থাপনা। প্রায় সারা বছর ধরেই কোন না কোন প্রভাবশালী মহল এ নদী থেকে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে নদী ভাঙ্গনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বর্ষার পানি আসতে শুরু করলেই যে কোন মুর্হূতে দেখা দিতে পারে এই ভাঙ্গন।

এলাকাবাসী জানায়, এ নদী থেকে প্রতি বছর প্রভাবশালী একটি মহল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। ফলে প্রতি বছর বন্যা ও তার পরবর্তী সময়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে। নদী পাড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্বসহ কয়েকটি বসতবাড়ী রয়েছে যা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা চাই এ নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হোক।

এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ীদের একজন আলমগীর ও তার সহযোগীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজী হয়নি।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝিনাই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন অনুমতি কিংবা নদী খনন প্রকল্প নেই। যারা এ নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে তা সম্পূর্ন অবৈধ। আমি এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছেন দ্রæত এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বালু উত্তোলন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ