Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাগর পথে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন সরাসরি জাহাজ চলাচল

সাশ্রয় হবে পর্যটকদের টাকা-শ্রম ও সময়

কক্সবাজার থেকে শামসুল হক শারেক | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৪২ পিএম

কক্সবাজারের পর্যটন খাতে যুক্ত হচ্ছে আরো একটি বিলাসবহুল জাহাজ।এ লক্ষ্যে আজ ৩০ জানুয়ারী ২০২০ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন রুটে সরাসরি সাগর পথে জাহাজ চলাচল। ৩১ জানুয়ারী, শুক্রবার থেকেই পর্যটকরা বিলাস বহুল এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ করে কক্সবাজার থেকে সরাসরি সাগর পথে সেন্টমার্টিন ভ্রমন করতে পারবেন।

জাহাজ টির কক্সবাজার এর পরিচালক ও ফারহান এক্সপ্রেস ট্যুরিজম এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এম হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, ৩০ জানুয়ারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সচীব মোঃ আব্দুস সামাদ ।

এপর্যন্ত অর্ধডজন জাহাজ নৌ পথে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক বহন করে আসলেও ওগুলো সবই টেকনাফ থেকে। পর্যটকরা কক্সবাজার থেকে নৌ পথে সরকারি সেন্টমার্টিন যেতে পারলে একই সাথে টাকা-শ্রম ও সময় সবই সাশ্রয় হবে।

নতুন এই জাহাজ টি পরিচালনায় থাকছে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিঃ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর পরিচালনায় থাকছেন, ফারহান এক্সপ্রেস ট্যুরিজম। বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌ পরিবহন সংস্থা বি আই ডব্লিও টিসি এর জার্মানি থেকে আমদানি কৃত উপকূলীয় যাত্রিবাহী জাহাজ বহরের নৌযান সাবেক এম.ভি আলাউদ্দিন আহমদকে নতুন ভাবে সাজিয়ে এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস হিসেবে রুপান্তরিত করা হয়েছে।

কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া (এয়ারপোর্ট রোড) বি আই ডব্লিও টিএ ঘাট থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন এর উদ্দেশ্যে নিয়মিত ছেড়ে যাবে জাহাজটি। কক্সবাজার থেকে জাহাজটি ছাড়বে প্রতিদিন সকাল ৭টায় ।সেন্টমার্টিন থেকে ছাড়বে প্রতিদিন বিকাল ৩টায় । উভয় দিক থেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা । পরবর্তীতে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় আরো ১ ঘন্টা পেছানো হতে পারে বলে জানান জাহাজ পরিচালনাকারীরা।

জানা গেছে, এই জাহাজ এর ইকোনমি আসনের (২য় শ্রেনী চেয়ার) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি জন দুই হাজার টাকা । এছাড়া বিজনেস শ্রেণী আসন (১ম শ্রেনী চেয়ার) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৫শ’ টাকা। মোট ১৭ টি লাক্সারি ক্লাস কেবিন রয়েছে এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজে। এদের মধ্যে ইকোনমি শ্রেণী কেবিন (২য় শ্রেনী) এর ভাড়া ১২ হাজার টাকা ও লাক্সারি ক্লাস (ভি আই পি) কেবিনের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কেবিন ২ জন এর জন্য প্রযোজ্য, অতিরিক্ত প্রতি জনেরর আলাদা সাধারন টিকেট কেটে নিতে হবে । প্রতিটি টিকেট এর সাথে সৌজন্য মূলক নাস্তা অন্তঃভুক্ত থাকছে বলে জানা গেছে ।

আরো জানা গেছে, জাহাজ টি পূর্বে বি আই ডব্লিও টিসি এর মালিকানায় থাকা কালীন চট্টগ্রাম (সদরঘাট) – হাতিয়া (নলচিরা) ভায়া সন্দ্বীপ চলাচল করতো। বর্তমানে এই জাহাজটির মালিকানা স্বত্ত কর্নফুলী শিপইয়ার্ড নিজে অধিগ্রহন করে, দেশের অন্যতম শীর্ষ ডিজাইন ফার্ম এস.এস.টি মেরিন সল্যুশন কর্তৃক নকশা পরিবর্তন করে।

এম.ভি কর্নফুলী এক্সপ্রেস কে নিজস্ব ডক ইয়ার্ড এ নতুনভাবে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়। নতুনভাবে প্রস্তত নৌযানটি সার্ভিসে যাওয়ার আগে সী ট্রায়ালের অংশ হিসাবে কর্ণফুলী নদী থেকে পতেঙ্গা এর সমুদ্র মোহনা অবধি, ট্রায়াল সমপন্ন করা হয় বলেও জানানো হয় ।

আয়োজকরা জানান, প্রায় ৫৫ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার প্রসস্থ জাহাজ টিতে মেইন প্রাপালেশন ইঞ্জিন হচ্ছে দুইটি । আমেরিকার বিখ্যাত কামিন্স ব্র্যান্ড এর এক একটির ক্ষমতা প্রায় ৬০০ বি এইচ পি করে। জাহাজটি ঘন্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে। ১৭ টি ভিআইপি কেবিন সমৃদ্ধ। এই নৌযানে ভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ৫১০ টি আসন ব্যাবস্থা রয়েছে। রয়েছে প্রসস্থ কনফারেন্স হল রুম, ডাইনিং স্পেস, সী ভিউ ব্যালকনি।

উন্নত ও আধুনিক নেভিগেশন ব্যাবস্থার জন্য রয়েছে, জিপি এস, ইকোসাউন্ডার, রাডার, কম্পাস । রয়েছে অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা । জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম লাইফ জ্যাকেট, লাইফ র‍্যাফট, লাইফ বয়া এর পাশা পাশি রয়েছে ইমারজেন্সি লাইফ সেভিং বোট। দীর্ঘ দিন এ উপকূলীয় পথে অভিজ্ঞ মাস্টার ও ক্রু দ্বারা জাহাজ টি পরিচালনা করা হবে । জাহাজের যাত্রীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ নিযুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ