Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ডিবির কর্মকর্তাসহ ৬ পুলিশ সাসপেন্ড

অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৩৫ এএম

রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তাসহ ৬ পুলিশ। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে অভিযুক্ত ছয়জনকে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত ছয়জনের মধ্যে একজন এসআই, একজন এএসআই, তিনজন কনস্টেবল এবং একজন ড্রাইভার (কনস্টেবল) রয়েছে।
পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার গতকাল বলেন, যার যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে তাদের সাসপেন্ড করেছি। অভিযোগ তদন্ত করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোহেল নামে এক ব্যবসায়ী পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন, গত ৩০ জানুয়ারি রাতে তাকে অপহরণের পর চার লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের নাজিরাবাগ হাসেম মিয়ার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী মো. সোহেল অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২৯ জানুয়ারি আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা সদরঘাট থেকে ব্যবহারের জন্য দুইটি লুঙ্গি কিনে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পথে সূত্রাপুর থানার লালকুটির নৌকা ঘাটে পৌঁছালে আচমকা ৫/৬ জন এসে তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে। তারা গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে হাতকড়া পরিয়ে তাকে নৌকায় তুলে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে নিয়ে যায়। অভিযোগে আরো বলা হয়, এরপর কেরাণীগঞ্জ আলম মার্কেটের সামনের রান্তায় নিয়ে নম্বর প্লেটবিহীন সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয় তাকে। এসময় চোখে কালো কাপড় বেঁধে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে যন্ত্র দিয়ে সোহেলের হাতের আঙুল যখম করে এবং লাঠি দিয়ে পেটানো হয় তাকে।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ্য করে, একপর্যাঢ সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে তার কাছে ৫চ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন ডিবি পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা। মুক্তিপণের টাকা না দিলে ‘ক্রসফায়ার’ ও মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর হুমকিও দেন তারা। পরে সোহেলের ব্যবহৃত সিম থেকে তার পরিবারের দু’টি মোবাইল নম্বরে কল করে তারা কথা বলেন এবং সোহেলকে দিয়েও তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা দাবি করান। একপর্যায়ে তার পরিবারের সদস্যরা মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজি হন। তাদের টাকা নিয়ে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে যেতে বলা হয়। সেখান থেকে আবার যেতে বলা হয় বছিলা ব্রিজে। সেখানেই সোহেলের পরিবারের তিন সদস্যকে সাড়ে চার লাখ টাকাসহ মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। পরে অজ্ঞাত একটি স্থানে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিভিন্ন কাগজে সোহেলসহ তার পরিবারের সদস্যদের সই নেয়া হয়। ভুক্তভোগী সোহেল বলেন, বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং হুমকি দিয়ে তারা বলে, এ ঘটনা কারও কাছে প্রকাশ করা হলে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে। নইলে সবাইকে ধরে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে। ডিবি পুলিশ পরিচয় দাতাদের আমি দেখলে চিনতে পারব, তাদের ভেতরে ডাকাডাকির কারণে আমি একজনের নাম রাজিব বলে জানতে পারি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপহরণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ