Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিপন্নপ্রায় ছয় প্রজাতি মিলল হাকালুকিতে

বেড়েছে অতিথি পাখি

মো. মানজুরুল হক, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে বৈশ্বিক মহাবিপন্ন প্রজাতির পাখি বেয়ারার ভ‚ঁতিহাঁসসহ বিপন্নপ্রায় ছয় প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছে। এবারের শুমারিতে সর্বমোট ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬টি জলচর পাখি পাওয়া গেছে। যা গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে।

কিন্তু বার্ড রিং পরানো অতিথি পাখির সন্ধান এবার পাওয়া যায়নি। গতিবিধি পর্যবেক্ষণে হাওরে রিং পরানো ৩৩ প্রজাতির যে ৩৭০টি পাখিকে বার্ড রিংগিং (পাখির পায়ে রিং) লাগানো হয়েছিল, এবার তার একটিরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি ২০১০ সালে যে ১৬টি পাখির গায়ে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছিল, ওই পাখিগুলোরও আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালে ৫১ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৯৩১টি জলচর পাখির দেখা মিললেও এ বছর তার থেকে দুই হাজার ১৯৫টি পাখি বেশি এসেছে। এছাড়া গত বছর ৫১ প্রজাতির পাখির দেখা মিললেও এবার খোঁজ পাওয়া গেছে ৫৩ প্রজাতির।

এবার হাকালুকির চকিয়া বিলে পাঁচ হাজার ৪৩০, চাতলা বিলে পাঁচ হাজার ১৪০, ফুট বিলে চার হাজার ৯৮৩ এবং বালিজুরীতে তিন হাজার ৩০৫ প্রজাতির পাখির খোঁজ পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে ছয় হাজার পিয়ং হাঁস (গ্যাডওয়াল) পাওয়া যায়। হাকালুকি হাওরে পাখি শুমারি শেষে এ তথ্য ওঠে আসে।
বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলেন, বার্ড রিংগিং লাগানো হয়েছিল এমন একটি পাখিরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। কেন সন্ধান পাওয়া যায়নি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বলা মুশকিল। এছাড়া ২০১০ সালে যে ১৬টি পাখির গায়ে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছিল, সেই পাখিগুলো ২০১১ সাল পর্যন্ত আমাদের মনিটরিংয়ে ছিল। এরপর থেকে ওই পাখিগুলোর আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের আয়োজনে দুই দিনের জলচর পাখি শুমারিতে অংশ নেন বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক ও পল থম্পসনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্যদের একটি দল। বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, হাকালুকিতে এবার বিপন্ন ও প্রায় সঙ্কটাপন্ন ৬ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। এর মধ্যে বিশ্বে মহাবিপন্ন পাখির একটি হলো বেয়ারের ভ‚ঁতিহাঁস।

ধারণা করা হচ্ছে, সারা বিশ্বে ১শ’ থেকে দেড়শ’টি ভ‚তিহাঁসের অস্তিত্ব রয়েছে। দেশের একমাত্র হাকালুকিতে এই পাখির দেখা মিলেছে এবার। ভ‚তিহাঁস দেশে আর কোথাও দেখা যায় না। কিন্তু হাকালুকিতে বিষটোপসহ পাখি শিকারিদের বিভিন্ন নিধনযজ্ঞের কারণে অন্যান্য পাখির মতো ভ‚ঁতিহাঁসও হুমকির সম্মুখীন। এদের নিরাপদ আবাস ও বিচরণের ব্যবস্থার মাধ্যমে এই পাখি সংরক্ষণ করা সম্ভব। এছাড়াও হাওরের ফুট বিলে প্রথমবারের মত ৩টি মেটে রাজহাঁসের দেখা মিলেছে। এগুলো মূলত সমুদ্র উপক‚লীয় অঞ্চলে বিচরণ করে।
ইনাম আল হক আরও জানান, শুমারিতে বিশ্বে সঙ্কটাপন্ন বেয়ারার ভ‚ঁতিহাঁস ও বিপন্ন প্রায় মরচেরঙ ভ‚তিহাঁস, ফুলুরি-হাঁস, কালামাথা-কাস্তেচড়া উত্তুরে-টিটি, উদয়ী-গয়ারসহ এই ছয় প্রজাতির জলচর পাখি দেখা যায়। গত কয়েক বছর থেকে হাকালুকি হাওরটি অরক্ষিত থাকায় অবাধে শিকারিরা বিষটোপ ও বন্দুক দিয়ে পাখি শিকার করছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। অবিলম্বে হাওরকে পরিকল্পনার আওতায় এনে আবারও অতিথি পাখির অভয়াশ্রম করার দাবি জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অতিথি পাখি

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯
১২ জানুয়ারি, ২০১৯
২০ নভেম্বর, ২০১৭
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ