Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকায় ১৩ প্রজাতির মশা

জাবির কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশারের গবেষণা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৩৩ এএম

বাংলাদেশে রয়েছে ১২৩ প্রজাতির মশা। আর রাজধানী ঢাকা শহরে ১৩ প্রজাতির মশার বসবাস। এই মশা মানুষের জীবন অতিষ্ট করে ফেলেছে। মশার উপদ্রবে অতিষ্ট নগরবাসী। মশার যন্ত্রণায় কোথাও বসা বা ঘুমানো দায়। কিছুদিন বাদেই শুরু হবে বর্ষাকাল। গবেষণা বলছে, এখনই মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এবার অতীতের যে কোনো বছরের তুলনায় রাজধানীতে মশার উপদ্রব বেশি হবে। এবার মশার ঘনত্ব অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

স¤প্রতি রাজধানীর কয়েকটি এলাকার ডোবা, খালে বা মশার প্রজনন ক্ষেত্রে গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কীটতত্ত¡বিদ ড. কবিরুল বাশার। তার গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে ভয়ানক এই তথ্য। অথচ মশা নিধনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই সিটি করপোরেশনের।

গবেষণায় কীটতত্ত¡বিদ কবিরুল বাশার বলেছেন, এখনই পদক্ষেপ না নিলে আগামী ১৫ দিনে ঢাকায় মশার ঘনত্বের রেকর্ড ছাড়াবে। মশা নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে আগামী মাসে ঢাকাসহ সারা দেশে মশা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

জানা যায়, গবেষণার জন্য এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে তার গবেষক দল মশার লার্ভা সংগ্রহ করেন। গবেষকদল বিভিন্ন মশার জন্মস্থান পর্যবেক্ষণ করে সেখান থেকে মশা সংগ্রহ করেন এবং ল্যাবে নিয়ে এসে শনাক্ত করেন। কিউলেক্স মশার লার্ভার ক্ষেত্রে ঘনত্ব পরিমাপের জন্য প্রতি ৫০০ এমএল পানিতে মশার লার্ভা সংখ্যা গণনা করে ঘনত্ব পরিমাপ করা হয়। গত এক সপ্তাহ জরিপে ঢাকার বেশিরভাগ কিউলেক্স মশার জন্মানোর স্থানে ঘনত্ব ২০০’র ওপরে পাওয়া যায়। সাথে সাথে ড্রেন ডোবা এবং নর্দমাতে প্রচুর ডিম দেখতে পান গবেষকদল।

বর্তমান সময়ে যে মশাটি সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে সেটি হচ্ছে কিউলেক্স মশা। এই মশা বিভিন্ন ড্রেন, ডোবা-নর্দমা এবং পচা পানিতে জন্মায়। অনেকদিন ধরে কোন বৃষ্টিপাত না থাকায় মশা জন্মানোর স্থানগুলোতে পানির অর্গানিক ম্যাটারিয়াল বেড়ে গেছে। এই অর্গানিক ম্যাটেরিয়ালগুলো কিউলেক্স মশার লার্ভার খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সারাদেশে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় মশা জন্মানোর জন্য উপযুক্ত সময় হয়ে গেছে। গত কয়েক দিনে অগণিত ডিম দিয়েছে মশা। সেগুলো আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ মশায় রূপান্তরিত হবে। অতি জরুরি ভিত্তিতে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে মশা জন্মানোর স্থানগুলোতে লার্ভিসাইড ছিটানো না হলে মার্চ মাসে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে মশা। অতিষ্ঠ হয়ে যাবে নগরবাসী।

অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার মনে করেন, ড্রেন, ডোবা এবং নর্দমার পানি চলন্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং লার্ভা মারার কীটনাশক স্প্রে করা জরুরি। ভারী বৃষ্টিপাত হলে স্বাভাবিকভাবে মশা কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন এই গবেষক।

গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে ১২৩ প্রজাতির মশা রয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা শহরে রয়েছে ১৩ প্রজাতির। কিন্তু যে মশাটি আমাদের কাছে এই মুহ‚র্তে সবচেয়ে বিরক্তির কারণ সেটি হচ্ছে কিউলেক্স মশা। জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি মাসেও আমরা ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার ঘনত্ব পেয়েছি, তবে সবচেয়ে বেশি পেয়েছি কিউলেক্স মশা। বর্তমানে ঢাকা শহরের ৯৫ ভাগ হচ্ছে কিউলেক্স মশা। এই কিউলেক্স মশা বাংলাদেশের কিছু কিছু জেলায় ফাইলেরিয়া রোগ ছড়ায় বলে আমরা জানি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কিউলেক্স মশা ওয়েস্ট নাইল ফিভার ছড়ায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ