Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দিল্লিতে দাঙ্গার পরিস্থিতি, বন্দুক-পিস্তল নিয়ে উন্মত্ত জনতা, ব্যাপক সহিংসতা চলছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫০ পিএম

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভে এ পর্যন্ত একজন পুলিশসহ অন্তত ২০ জন মারা গেছে। ওই আইনের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষে আহত হয়েছে দুই শতাধিক লোক। দিল্লিতে গত কয়েক দশকে এরকম সহিংসতা আর দেখা যায়নি বলে বলছেন অনেকে। উত্তর পূর্ব দিল্লির বহু বাড়িঘর ও দোকানপাটে আগুন দেয়া হয়েছে এবং কিছু এলাকা সহিংসতার ফলে যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। ভারতের রাজনীতিবিদরা শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন। ওই এলাকায় মঙ্গলবার সারাদিন বিবিসির প্রতিনিধি সালমান রবি ছিলেন।। ঘটনাস্থল থেকে তিনি বিবিসিকে সবিস্তারে জানিয়েছেন :

"আমি যে জায়গায় আছি সেটির নাম জাফরাবাদ। আমার একদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভকারীরা, আরেকদিকে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থকরা। এই দুয়ের মাঝখানে আমি। পাথর ছোঁড়া হচ্ছে, পেট্রোল বোমা ছোঁড়া হচ্ছে। কিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।
পনেরজন মারা যাওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। দেড়শোর বেশি মানুষ আহত। আধা সামরিক বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। জাফরাবাদের পেছনে একটা জায়গা আছে চান্দবাগ, মোস্তফাবাগ। সেখানে রাস্তায় নাকি উন্মত্ত জনতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেখানে নাকি পুলিশ আর আধা-সামরিক বাহিনী পাঠানো হচ্ছে।

বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ছিল রড-লাঠি
স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বৈঠক হয়েছে। তারপর মনে হচ্ছে নিরাপত্তা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতি এখনো খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। বন্দুক-পিস্তল নিয়ে উন্মত্ত জনতা বাইরে বেরিয়েছে, গুলি চালিয়েছে। আজও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
অনেকের হাতেই রড বা লাঠি, যার যা আছে তাই নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। দোকানগুলো সব বন্ধ। যোগাযাগ বন্ধ। রাস্তাগুলোতে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। সেসব এলাকায় কেউ ঢুকতে পারছে না। গতকালও দিল্লির যেসব গোলযোগপূর্ণ এলাকায় গিয়েছিলাম, আজকে সেখানে যেতেই পারছি না। সংঘাত থামাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে

সেখানে জনতা খুবই উত্তেজিত। তারা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা করছে। সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙ্গে দিচ্ছে, মোবাইল ফোন কেড়ে নিচ্ছে। এখানে এখন একদম দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এসব গন্ডগোল যে কেবল রাস্তায় হচ্ছে তা নয়, জনতা কখনো কখনো লোকের বাড়িঘরেও ঢুকে পড়ছে। অনেক জায়গায় দোকানপাটেও আগুন লাগানো হয়েছে। একটা মার্কেট আছে এখানে, সেখানে লুটপাট চলেছে।

আমরা সাংবাদিকরা সেখানে যেতে পারছি না, কারণ জনতা সাংঘাতিক সহিংস। সাংবাদিকদের ওরা ভিডিও রেকর্ড করতে দিচ্ছে না। পুলিশ দাবি করছে যে জনতার ভেতর থেকেই গুলিবর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটছে। পুলিশ কোথাও গুলি চালানোর কথা এখনো নিশ্চিত করেনি।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। তবে দিল্লি পুলিশের যেসব উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়, তারা দাবি করছেন, পরিস্থিতি তারা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু বাস্তবে আমরা এখানে কিন্তু দেখছি না যে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। মুসলিম স্থাপনাগুলো হামলার শিকার হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।
অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় টুইট করছেন এই বলে যে তারা বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন, তাদের যেন উদ্ধার করা হয়।"



 

Show all comments
  • Banglar Chele. ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:০১ পিএম says : 0
    দিল্লি পুলিশের যেসব উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়, তারা দাবি করছেন, পরিস্থিতি তারা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু বাস্তবে আমরা এখানে কিন্তু দেখছি না যে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। মুসলিম স্থাপনাগুলো হামলার শিকার হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamsujjaman ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:৩৫ পিএম says : 0
    Asob er jonno BJP dayi. tarai asob koracche.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ