Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আসলামুল হক এমপির বিরুদ্ধে বাধা দেয়ার অভিযোগ

বুড়িগঙ্গা তীরে উদ্ধার অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

বুড়িগঙ্গার দুই তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে দলবল নিয়ে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আসলামুল হকের বিরুদ্ধে। রাজধানী ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর দুই তীরে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটএ)। গতকাল বুধবার কেরানীগঞ্জের চরওয়াশপুরে নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক সেখানে দলবল নিয়ে হাজির হন। দ্বিতীয় দিনের এই উচ্ছেদ অভিযান সকাল ১০টার দিকে শুরু হলেও বেলা সোয়া ১১টার দিকে আসলামুল হক ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেন। কয়েকজন যুবককে এ সময় তার সঙ্গে দেখা যায়।

অভিযানে বাধা দিয়েং সংসদ সদস্য আসলামুল হক বলেন, যৌথ জরিপের কথা বলে যে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। আমাকে উচ্ছেদের নির্দেশনার কাগজ না দেখালে কাজ বন্ধ থাকবে। এক পর্যায়ে উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া বিআইডব্লিউটএ’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন আসলামুল হক। যৌথ জরিপ না দেখানো পর্যন্ত উচ্ছেদকৃত জমির মালিকানা দাবি করেন আসলামুল হক। উল্লেখ, গত দুই দিনে এমপি আসলামের কবল থেকে ৫ একর জমি উদ্ধার করেছে বিআইডব্লিউটএ।

গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো পাওয়ার প্লান্টটিতে বিআইডব্লিউটএ’র উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে সেখানে কয়েকজন সুঠাম যুবককে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন সংসদ সদস্য আসলামুল হক। এ সময় সাংবাদিকরা তাকে নানান প্রশ্ন করেন। কেরানীগঞ্জে বছিলা সেতুর পশ্চিম পাশে চর ওয়াশপুর এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করেন। গত মঙ্গলবার পাওয়ার প্লান্টটিতে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন একর জায়গায় উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটএ। বিআইডব্লিউটএ বলছে, আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যের দখলে রয়েছে পাঁচ একর জমি। সংসদ সদস্যের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৩টি স্থাপনা।

দ্বিতীয় দিনের মতো পাওয়ার প্লান্টটিতে বিআইডব্লিউটএ’র উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে সেখানে উপস্থিত হন সংসদ সদস্য আসলামুল হক। সেখানে গিয়ে সাংসদ আসলাম অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবীবুর রহমান হাকীমের সঙ্গে কথা বলেন।

বুড়িগঙ্গা নদীর অংশ দখল করে গড়ে তোলা পাওয়ার প্লান্টের উচ্ছেদকৃত জায়গা অবৈধ প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধি পদ থেকে পদত্যাগ করবেন কিনা এমন প্রশ্নে অনেকটা ‘নীরব’ ঢাকা-১৪ আসনের সরকারি দলের এমপি আসলামুল হক। তিনি বলেন, বিষয়টি প্রমাণ হলে পরে দেখা যাবে। আমি এর উত্তর এখন দেব না।

এমপি আসলামের দাবি, তার প্রতিষ্ঠানটির যে অংশ ভাঙা হয়েছে তা বৈধ জায়গা। অপরদিকে বিআইডব্লিউটএ বলছে প্রতিষ্ঠানটির এক পাশে ২৫০ ফুট ও আরেক পাশে ১ হাজার ফুট জায়গা নদী দখল করা হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী কোনো নদী দখলদার জনপ্রতিনিধি হতে পারবে না। দখলদার প্রমাণিত হলে সংসদ সদস্য পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা সংসদ সদস্য আসলামের কাছে এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। এমন প্রশ্নে সরাসরি কোনো জবাব দেননি তিনি। আসলাম বলেন, বিষয়টি যখন প্রমাণ হয় তখন দেখা যাবে। আগে জরিপটা হোক। আমি এর উত্তর এখন দেব না। আসলামুল হক আরও বলেন, আমার স্থাপনা উচ্ছেদ করে ফেলেছে এটাই শেষ না। কোনো নোটিশ ছাড়া তারা উচ্ছেদ করেছে। জরিপের কাগজ দিয়ে আমাকে মেপে বুঝিয়ে দিতে হবে। আমি স্থায়ী সমাধান চাই।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিকার চাওয়ার আভাস দিয়ে সাংসদ আসলাম বলেন, আমি প্রতিকার তো চাইতেই পারি। সকল মন্ত্রণালয়ে আমি প্রতিকার চাইতেই পারি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখল ও দ‚ষণমুক্ত করতে করেছে। নদী বন্দরের আওতাধীন বুড়িগঙ্গা-তুরাগ নদীর সংযোগস্থল চরওয়াশপুর মৌজায় বিশেষ অভিযানে দু’টি পাকা ব্যাংক প্রটেকশন ২ হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থ, তিনটি পাকা ওয়াল এক হাজার ফুট, ১০টি অন্যান্য স্থাপনা এবং ৫০ হাজার ঘনফুট মাটি/বালি অপসারণ করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উচ্ছেদ

১৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ