Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিএএ-প্রতিবাদীদের নিয়ে লখনউয়ে হোর্ডিং, যোগী সরকারকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২০, ৪:৫৯ পিএম

উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিশাল বিশাল হোর্ডিং। তাতে নাম, ঠিকানা-সহ ৫৩ জনের ছবি। যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের মতে, তারা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-বিরোধী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। তাই তাদের ছবি জনসমক্ষে টাঙানো হয়েছে। কিন্তু এমন ঘটনায় সমালোচনায় সরব সমাজকর্মী থেকে রাজনীতিবিদ সবাই। মামলা গড়িয়েছে আদালতেও। সরকারকে ভর্ৎসনার পাশাপাশি এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর।

গত বৃহস্পতিবার লখনউ শহরের বড় রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চোখে পড়ে প্রচুর হোর্ডিং। প্রায় গোটা শহর ছেয়ে গিয়েছে ওই হোর্ডিংয়ে। ৫৩ জনের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। রয়েছে কংগ্রেসের স্থানীয় মহিলা নেত্রী সাদাফ জাফরের নাম-ছবিও। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশেই ওই হোর্ডিংগুলি পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছে। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

শুধু হোর্ডিং টাঙানোই নয়, সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, সেই টাকা তাদের থেকে আদায় করা হবে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। যোগী মন্ত্রিসভার সদস্য মহসিন রাজা বলেছেন, ‘সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের নামে তারা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেছেন। তারা রাজ্যের মানুষের ক্ষতি করেছেন এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন। এখন সেই ক্ষতি তাদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।’

দাগী অপরাধীদের ধরতে এবং পুরস্কার ঘোষণা করেত সাধারণত পুলিশ এই রকম পোস্টার সাঁটায়। প্রায় একই কায়দায় প্রকাশ্যে ছবি দিয়ে হোর্ডিং লটকে প্রতিবাদীদের সঙ্গে ফৌজদারি অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সরব অনেকেই। সমাজকর্মী দীপক কবীর বলেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এর কোনও দরকারই ছিল না। সরকার ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। হোর্ডিংয়ে যাদের ছবি আছে, তারা যে কোনও সময় গণপিটুনির শিকার হতে পারেন। দিল্লি হিংসার পর পরিবেশ মোটেই নিরাপদ নয়। সরকার সবাইকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরির মতে, এটা অসাংবিধানিক। সরকার তাদের মানহানি করছে।

যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও। রোববার টুইটারে কংগ্রেস নেত্রীর তোপ, ‘উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার, তার মাথা এবং যে সব অফিসার তাদের পথ অনুসরণ করছেন, তারা নিজেদের সংবিধানের ঊর্ধ্বে ভাবছেন। হাইকোর্ট সরকারকেও বলে দিয়েছে, আপনারাও সংবিধানের ঊর্ধ্বে নয়। আপনাদের ভুমিকাও বিচার করে দেখা হবে।’

বৃহস্পতিবার লখনউ শহর জুড়ে ওই পোস্টার পড়ার পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের বেঞ্চে শুনানি চলছে। আজ রোববার যোগী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন প্রধান বিচারপতি মাথুর। তিনি বলেন, সিএএ-প্রতিবাদীদের নাম-ঠিকানা দিয়ে হোর্ডিং টাঙানো অত্যন্ত অন্যায়। আদালতে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় ডিসিপি এবং মহকুমাশাসকদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ