Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

করোনাভাইরাস : নতুন শনাক্ত আরও ৩

সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার প্রস্তুতি ষ প্রয়োজন হলে লকডাউন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে আরও ৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী ও ২ জন পুরুষ। তারা একই পরিবারের সদস্য। এ নিয়ে দেশে করোনরাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। মারা গেছেন একজন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন তিনজনের আক্রান্তের তথ্য গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৯ জন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ৪৩ জন। যদিও নতুন করে চুয়াডাঙ্গায় শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান। এদিকে সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে নতুন একটি জায়গা করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো রকম পর্যটন চলবে না। ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান শিথিল করা হোক। এমনকি বিয়ের অনুষ্ঠানও বন্ধ করা হোক। বাস, লঞ্চ ও ট্রেনেও যেন কম যাত্রী যেন যাওয়া আসা করে। তিনি বলেন, সব দেশ আমাদের সাহায্য করছে। টেস্টিং কিট দিচ্ছেন। তিনি জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেয়ালে সতর্কীকরণ লেখা ঝুলিয়ে দিতে সেটি দেয়া হবে।’ জাহিদ মালেক বলেন, বিদেশে যারা আছেন তারা দয়া করে আসবেন না। আপনার আপনজনদের ক্ষতি করবেন না। আমরা দুইমাস ধরে চেষ্টা করছি। এজন্য অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশ অনেক ভালো আছে। গতকাল একই পরিবারের আক্রান্ত তিনজনের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে একজন নারী। অন্য দু’জন পুরুষ। তারা একই পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছে। আক্রান্ত নারী স্থানীয় একটি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে আছেন। আর পুরুষ দুইজন হাসপাতালে আছেন। নতুন আক্রান্ত তিনজন যার বা যাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তারা ইতালি ফেরত উল্লেখ করেন তিনি।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের এখনো কমিউনিটি ট্রান্সমিশন (সামাজিকভাবে ছড়িয়ে পড়া) নেই। আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে। সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্ক হতে হবে। দ্রæত করোনার পরীক্ষায় নতুন কিট আবিষ্কারের ব্যাপারে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যদি এটি সফল কিট হয়, এটা যদি কাজে লাগে, তাহলে তো আমরা অবশ্যই খুশি হব। এ বিষয়টা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেখছে। আমি যেটা জানতে পেরেছি, তিনি অনেক বিশেষজ্ঞকে নিয়ে এ ধরনের একটা কমিটি বানিয়েছেন। দুটো বিষয় আমাদেরকে জানতে হবে। এটা পিসিআর কি না। আমরা আজকের পত্র-পত্রিকা দেখে জানতে পেরেছি, ১০-১৫ মিনিটে এটার ফলাফল পাওয়া যায়। বোঝাই যাচ্ছে এটা র‌্যাপিড টেস্ট। র‌্যাপিড টেস্টের কিট অন্যান্য দেশেও উদ্ভাবন হয়েছে বলে জেনেছি। আমরা সেগুলো সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছি। আমরা নিজেরাও চাইছি, এ ধরনের রেপিড টেস্ট কিট যদি পাওয়া যেত, তাহলে যারা উদ্বেগে আছে বা দ্রæত আমরা যাতে পরীক্ষা করে একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে করোনা থাকতে পারে কি না।

কিন্তু যেটা আমরা জেনেছি, তা হলো এটিতে ‘ফলস নেগেটিভ’ হওয়ার হার খুব বেশি। ১০-১৫ শতাংশ। অর্থাৎ, একটা লোকের মধ্যে করোনাভাইরাস আছে, কিন্তু পরীক্ষা করে তাকে বলে দিলো, তার মধ্যে নেই। তাহলে এই লোকটা অবাধে ঘোরাফেরা করবে। কোনো সতর্কতা নেবে না। এ ধরনের ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না। যদি ফলস পজিটিভ হয়, তাহলে আমরা মেনে নিতে পারি। কারণ তাহলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে আমরা আবার পরীক্ষা করলাম। কিন্তু ফলস নেগেটিভ, অর্থাৎ তার আছে, কিন্তু বলছে নাই, এ ধরনের ঝুঁকি নিতে পারি না। যদি র‌্যাপিড টেস্ট কিট হয়, তাহলে আমরা দেখব যে ফলস নেগেটিভের হার ও সঠিকতার হার কত। যদি সঠিকতার হার অনেক বেশি থাকে, তাহলে আমরা অবশ্যই একে স্বাগত জানাব।

দ্বিতীয়ত এটা যদি পিসিআর টেস্ট কিট হয়, তাহলেও আমরা একি জিনিস দেখব যে এটার নির্ভরযোগ্যতা কতটুকু। যদি ভালো হয়, অবশ্যই স্বাগত জানাব। আমরা তো চাই, ব্যাপক কিট আসুক এবং অল্পমূল্যে আমরা ব্যাপক সংখ্যক পরীক্ষা করতে পারি। এটাই হলো নতুন কিট সম্পর্কে আমাদের মতামত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, হসপিটাল কেয়ার অ্যান্ড পেশেন্ট মানেজমেন্ট অনুযায়ী আজ সকালেই নির্দেশ দিয়েছি সরেজমিনে প্রত্যেকটি হাসপাতাল পরিদর্শনের জন্য। যেসব হাসপাতালের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো প্রস্তুত করা এবং যখনই প্রয়োজন হবে রোগী ভর্তি করা যেন যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইনশাল্লাহ আমরা অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখনও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে যে ধারণ ক্ষমতা তার সামান্যই ব্যবহার হয়েছে। কালই করোনার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে অন্য হাসপাতালে রোগী ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। অবশ্যই আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের বাইরে অন্যান্য হাসপাতালে করোনার রোগী ভর্তির প্রয়োজন নেই। কিন্তু যখনই রোগী ভর্তির প্রয়োজন হবে হাসপাতাল প্রস্তুত থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা আজকে সব হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন, কীভাবে হাসপাতালগুলো চালু করা যায়।

তিনি বলেন, আমাদের আরও একটি হাসপাতাল রয়েছে মিরপুরে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মা ও শিশু হাসপাতাল। ওই হাসপাতালটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত কিন্তু এখনো চালু হয়নি। ওই হাসপাতালটিকে করোনার জন্য অস্থায়ীভাবে চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমার সহকর্মীরা সে হাসপাতালটিও পরিদর্শন করবেন।
শুধু ঢাকা মহানগরীতে নয় দেশের সব জায়গা রোগী ভর্তি করার মতো ব্যবস্থা তৈরি আছে দাবি করে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রতিটা মুহূর্ত, ২৪ ঘণ্টা আমরা কাজ করছি, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় যখন যা করা দরকার, যেমন দরকার, সেটাই করা হবে। চীনে কিন্তু স্টেডিয়ামকেও হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু রোগের জন্য ওতো ভালো হাসপাতাল না হলেও চলবে, তাদেরকে শুধু পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য আলাদা হাসপাতাল প্রয়োজন। আমাদের আর্মি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করার মতো ক্যাপাসিটি আছে। আমরা প্রয়োজন হলে সে রকম জায়গায়ও করব। তবে আমরা আশা করছি দেশে ওই ধরনের পরিস্থিতি হবে না ইনশাল্লাহ। ‘আমরা গত দুই মাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি, প্রতিনিয়ত ভিডিও কনফারেন্সিং করছি, উপজেলা পর্যন্ত সকলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি, আমরা প্রস্তুত আছি ইনশাল্লাহ বাংলাদেশে এরকম পরিস্থিতি হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন শাটডাউনের কথা। সে রকম কী কোনো এলাকা শাটডাউনের প্রয়োজন আছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, যেসব এলাকা থেকে নাম্বার অফ কেইসেস বেশি এসেছে আমরা ইতিমধ্যে তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি ওই জায়গায় কতটুকু দরকার প্রয়োজনে সে অংশটুকু ওই ধরনের সতর্কতা রাখতে, চলাফেরা নিয়ন্ত্রিত করতে।

দেশে করোনা মোকাবেলায় প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বেশকটি মন্ত্রণালয় নিয়ে সামগ্রীক বিষয়ে আলোচনা ও করনীয় নির্ধারণ হয়েছে। যারা সরকারি নির্দেশ মানছে না তাদের বিষয়ে কঠোর হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত বার্তা দেয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ শুরু করেছে।

চিকিৎসক-নার্সদের উদ্দেশে বলেন, চিকৎসক ভাইবোনদের অনুরোধ করবÑ এটা জাতীয় দুর্যোগ। জাতির স্বার্থে মানবতার স্বার্থে সেবা কাজ থেকে বিরত থাকবেন না। চিকিৎসক-নার্সদের সুরক্ষার সব ধরনের ব্যবস্থা অধিদফতর নিয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে। আজও (বৃহস্পতিবার) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫শ’ পিপিই (পার্সনাল প্রোট্রেকশন ইকুপমেন্ট) প্রদান করা হয়েছে। সারাদেশে ৯ লাখ পিপিই পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সবার জন্য তিন মাসের মজুদ দেয়া সম্ভব না। মনে রাখতে হবে যারা শুধু রোগীর সংস্পর্শে আসবে তাদেরই পিপিই ব্যবহার করতে হবে। অন্যদের পিপিই ব্যবহার করার দরকার নেই। তারা শুধু মাস্ক এবং গøাভস ব্যবহার করবে। এছাড়া আজই (বৃহস্পতিবার) অধিদফতরের পক্ষ থেকে সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরেজ ডিপার্টমেন্ট (সিএমএসডি) ১০ হাজার পিস পিপিই এবং দুই হাজার কিট রিসিভ করেছে। অল্প দিনের মধ্যেই এক লাখ কিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষা করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের পরীক্ষা জন্য ল্যাব প্রস্তুত করা হচ্ছে।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত প্রস্তুতি গ্রহণের পর থেকে এতদিন আইইডিসিআর এর পরিচালক নিয়মিত ব্রিফিং করতেন। তবে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর নিজেই ব্রিফ করেন। ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলা হয়, অনিবার্য কারণে প্রফেসর ফ্লোরা আসতে পারেননি। তবে প্রতিষ্ঠানটি একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, হঠাৎ করে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় পরিচালক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তিনি আসতে পারেনি।
এদিকে গতকাল সচিবালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংকালে এই ভাইরাস মোকাবেলায় দেশের কোনো এলাকা লকডাউন করা হবে কি না, এমন বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কোনো এলাকা যদি বেশি আক্রান্ত হয়ে যায়, অবশ্যই সেসব এলাকা লকডাউন করা হবে। যেখানে যেখানে প্রয়োজন হবে, সেখানে সেখানে লকডাউন করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীন করোনা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে লকডাউনের মাধ্যমে। অন্যান্য দেশও চীনকে অনুসরণ করছে। যদি আমাদের পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে এবং আমাদের কোনো এলাকা যদি বেশি আক্রান্ত হয়ে যায়, আমরাও অবশ্যই সে এলাকা লকডাউনে নিয়ে যাব। আমাদের দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে করোনা থেকে। লকডাউন করাটাই আক্রান্ত এলাকার জন্য একমাত্র উপায়। যার মাধ্যমে আমরা ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে নিতে পারব।

কোন এলাকা লকডাউন করা হতে পারে, এ সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীরা যারা আসে, এর মধ্যে দু-একটি এলাকার খবর আমাদের কাছে আসে। এটা হলো— মাদারীপুর, ফরিদপুর এলাকা। আরেকটা আছে শিবচর এলাকা। এসব এলাকাতে বেশি করে দেখা যাচ্ছে। যদি অবনতি ঘটে। তাহলে আমরা লকডাউনের দিকে যাব। অন্যান্য জেলায় যতজন পাচ্ছি, সেসব জেলায় (মাদারীপুর, ফরিদপুর) বেশি পাচ্ছি। আক্রান্ত ১৭ জনের মধ্যে বেশিভাগই সেখানকার। ওখানকার লোক বিদেশে থাকেও বেশি। সেজন্য আমরা সেসব এলাকা বেশি ক্রিটিক্যাল মনে করছি। আগামীতে সেখানে যদি সত্যিই (সংক্রমণ) বেড়ে যায়, তাহলে আমরা লকডাউন করে দেবো বলেন তিনি। যদিও গতকাল রাত থেকে করোনা ঠেকাতে মাদারীপুরের শিবচর লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন। ওষুধ, কাঁচামাল, মুদির দোকানবাদে সব দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে এলাকা কঠোর নজড়দারিতে রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য টঙ্গীর ইজতেমা মাঠকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে বোঝাবার চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষকে আমরা কোয়ারেন্টিনে রেখেছি। এটা তো আমাদের বিরাট একটা সফলতা যে এত মানুষকে আমরা রাখতে পেরেছি। আর যারা লঙ্ঘন করছেন, তাদের জরিমানা করছি। তাদের জেলে যেতে প্রস্তুত থাকার কথাও বলা হচ্ছে। সেই বিষয়েও আমরা ব্যবস্থা নিতে পিছপা হব না।

জাহিদ মালেক বলেন, লকডাউন তো একটা বড় সিদ্ধান্ত। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে, আরও বেশি আক্রান্ত হলে এটি করতে হবে। আমরা তো এখন ভালো পরিস্থিতিতে আছি বলে মনে করি। অন্য দেশের তুলনায় আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা কম। মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র একজন। যিনি মারা গেছেন তার বয়স ৭০-এরও বেশি। তার কিডনি, হার্টের রোগ ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ ছিল। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যখাতের সাথে যুক্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। করোনা প্রাদুর্ভাব চলাকালীন সময়ে ও পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যখাতের সাথে যুক্ত সকল কর্মকর্তা, নার্স, চিকিৎসক এর ছুটি প্রাপ্য হবেন না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের সময় বিভিন্ন স্থানে বিয়ে, গণজমায়েত হওয়া প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা রোগটি মারাত্মক ছোঁয়াচে। এজন্য এই মুহূর্তে দেশে কোনো রকম গণসমাবেশ আয়োজন করা যাবে না। বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। স্কুল-কলেজ আগেই বন্ধ করা হয়েছে। এখন সউদী আরবের মতো আমাদের দেশেও জুমার নামাজ জমায়াতের সাথে না পড়ে ঘরেই পড়তে হবে। এছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে ৫ হাজার মানুষকে করোনা সন্দেহে পরীক্ষা করা হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, আইইডিসিআর গত বুধবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর তথ্য জানায়। সত্তরোর্ধ্ব ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিদেশফেরত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায়। ওই বৃদ্ধের আগে থেকেই সিওপিডি (ফুসফুসের ক্রনিক রোগ) ছিল, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি জটিলতা ছিল। এছাড়া হƒদযন্ত্রে এনজিওপ্লাস্টি করা ছিল।



 

Show all comments
  • Arafat Rahman Jihad ২০ মার্চ, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
    এইগুলা কে দেশে ঢুকতে দেওয়া সরকার এর উচিৎ ছিল না,, তার উপরে দেশে ঢুকার পরেও এদের কে পু জবেক্ষণে না নেওয়া দ্বিতীয় ভুল,, এখন এই নবাব জাদা দের জন্য আমরা ১৬/১৭ কোটি গরীব রা সংকট এর মুখে,,,,
    Total Reply(0) Reply
  • Jude Rodrigues ২০ মার্চ, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
    করনা ধরা পরার আগে কতজন লোকের জীবন বিপদের মুখে ফেলেছে?
    Total Reply(0) Reply
  • Fatema Sithi ২০ মার্চ, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    ওরা দেশে আসছে নিজেদের বাঁচাবে ভেবে । আর এখন এক এক করে প্রত্যেকেই ইতিমধ্যে আক্রান্ত সেই সাথে নিজের পরিবার আর দেশের মানুষ কে ও সাথে নিয়ে মরবে । ওদের এই মূর্খতা আর স্বার্থপরতার কি ফলাফল পেলো ? শেষ পর্যন্ত আল্লাহ যার নসিবে এভাবে মৃত্যু লিখেছেন সে মৃত্যু থেকে পালাতে পারছে না । পুরো দুনিয়াতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত দেশ গুলোর মধ্যে সব চেয়ে অশিক্ষিত আর গোড়া জাতি হলো এই দক্ষিণ এশিয়ার লোকজন । না আছে পর্যাপ্ত অর্থ আর না কোনো শিক্ষা । আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করুন ।
    Total Reply(0) Reply
  • MahFuzar RahMan ২০ মার্চ, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কি পারেনা বিনামুল্যে একটি করে মাস্ক দুস্থদের মাঝে বিতরন করতে?? পর্তুগালের ফুটবলার রোনালদো যদি তার বিলাস বহুল হোটেল করোনা মোকাবেলার জন্য হাসপাতালে পরিনত করতে পারে তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কেন একটি করে মাস্ক বিতরন করতে পারে না? আমরাতো আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের কম ভালোবাসিনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Umme Salma ২০ মার্চ, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
    সার্বিকভাবে সারাবিশ্ব মহা দুর্ভিক্ষের দিকেই এগোচ্ছে। কঠিন মুহূর্ত আলিঙ্গনে প্রস্তুত হও জাতি! তওবা-ইস্তিগফারে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহ উঠিয়ে না নিলে চলমান এই ভাইরাস থেকে মুক্তিলাভের কোনো উপায় নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamim Ahmed ২০ মার্চ, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    ইসলাম এর শিক্ষা দেখেন। যত যাই হোক আমাদের করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া মানায় না । ইসলাম আমাদের এই শিক্ষা দেয় না। আমাদের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করলে দেখা যাবে ইন শা আল্লাহ সমস্যা হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Rahman ২০ মার্চ, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    বাংলাদেশের মত অসচেতন, অব্যবস্থাপনা ও অনুন্নত দেশে এটার প্রভাব কতটা মহামারি আকার ধারণ করবে আল্লাহপাকই ভালো জানেন...
    Total Reply(0) Reply
  • Shamim Ahmed ২০ মার্চ, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
    আমাদের সমস্যা হল কিছু হলেই দেশের সরকারকে দোষারোপ করা। আম্রাদের বিপদ বলতে গেলে আমরাই দেকে আনি। নিজেদের মানুসিকতার পরিবরতন আনা দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Kamruzzaman ২০ মার্চ, ২০২০, ১০:১৮ এএম says : 0
    প্রথম দিন থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশির দেশ প্রবেশ করতে দেয়া উচিৎ হয় না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ